3 রা জুন মুক্তি পেয়েছে অক্ষয়কুমার (Akshay Kumar) ও মানুষী চিল্লার (Manushi Chillar) অভিনীত ফিল্ম ‘সম্রাট পৃথ্বীরাজ’। এই বিগ বাজেট ফিল্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন সোনু সুদ (Sonu Sood) ও সঞ্জয় দত্ত (Sanjay Dutt)। উইকেন্ডে উনচল্লিশ কোটি টাকা আয় করার পর আপাতত অঙ্কের পরিমাণ তিপ্পান্ন শতাংশ পড়ে গেছে। কারণ ‘সম্রাট পৃথ্বীরাজ’ ইতিহাস বদলে দেওয়া ফিল্ম। তবে সিনেমার অতিরঞ্জিত বিষয়গুলি ভুল ইতিহাস তুলে ধরেছে এমনটা বললে কিছু ভুল বলা হবে না। কারণগুলি জেনে রাখুন।
প্রথমতঃ মহম্মদ ঘোরী ও পৃথ্বীরাজের সংঘর্ষ দেখে মনে হতে পারে রোম সাম্রাজ্যের কোনো ঘটনা দেখানো হচ্ছে। তৎকালীন সময় মহম্মদ ঘোরীর কলোসিউম মার্কা অ্যাম্ফিথিয়েটারে পৃথ্বীরাজকে বেঁধে রাখার ঘটনা দেখানো হয়েছে যাতে বাঁধন অত্যন্ত আলগা। এরপর সেই অ্যাম্ফিথিয়েটারে অন্ধ পৃথ্বীরাজকে মোকাবিলা করতে দেখা যাচ্ছে দুটি সিংহের সাথে। ওই দৃশ্যে দুইজন সৈন্যকে দেখা গিয়েছিল দুটি সিংহের পিছনে। এটি ছিল ক্লোজ শট। লং শটে গায়েব হয়ে গেল সৈনিকরা। বোধহয় গ্ল্যাডিয়েটর দেখে পালিয়েছে।
সেইসময় পৃথ্বীরাজের প্রাসাদের স্থাপত্য দেখে বোঝাই যাচ্ছে, মোগল সম্রাট আকবর তাঁকে এটি বানিয়ে উপহার দিয়েছিলেন। সেই প্রাসাদে আনন্দে গুজরাটের লোকনৃত্য গরবা নাচেন রাজস্থানের চৌহান বংশের বধূ ও মহারানী সংযুক্তা। সংযুক্তার মা বোধহয় গুজরাটি ছিলেন। তাই মায়ের কাছ থেকে তিনি গরবা শিখেছেন।
View this post on Instagram
গেরুয়া পাগড়ি পরে আবীর খেলার মধ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পৃথ্বীরাজ ও তাঁর সঙ্গী। অথচ আবীরের এক ফোঁটা রঙ স্পর্শ করছে না তাঁদের। দৃশ্যমান হয়েও বোধহয় অদৃশ্য ছিলেন তাঁরা। তার উপর গেরুয়া পাগড়ি পরা রাজপুত রাজা। দৃশ্যমান হওয়াটাই উচিত নয়। কারণ তৎকালীন সময় রাজপুত রাজারা গোলাপি পাগড়ি পরতেন। রাজপুত পুরুষদের আভিজাত্যের প্রতীক ছিল গোলাপি পাগড়ি।
পৃথ্বীরাজের মৃত্যুর পর তাঁর প্রজারা চেঁচাচ্ছেন ‘পৃথ্বীরাজ জিন্দাবাদ’ বলে। বোধ হয় ভগৎ সিং (Bhagat Singh) তাঁদের এই স্লোগান শিখিয়েছিলেন।
পৃথ্বীরাজের আত্মীয় সবসময় চোখ বেঁধে থাকেন। চোখ খুলে তিনি যখন যুদ্ধ করতে যান, একাই সবাইকে শেষ করে দেন। সবসময় চোখ বেঁধে থাকার পর চোখের বাঁধন খুললে কি আর ঠিকঠাক যুদ্ধ করা যায়? এই কারণেই সঞ্জয় তরোয়াল দিয়ে সৈনিককে আঘাত করলেও তা সৈনিককে স্পর্শ করে না। অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা। জাস্ট কয়েক সেকেন্ড আগে চোখের বাঁধন খুললে কি আর চোখে দেখতে পাওয়া যায়? নিশানা তো ভুল হবেই।
পরিচালক চন্দ্রপ্রকাশ দ্বিবেদী (Chandraprakash Dwivedi)-র সবচেয়ে বড় ভুল হল ‘সম্রাট পৃথ্বীরাজ’ ফিল্মটি বানানো। কারণ বারো বছর ধরে এই ফিল্মের কাহিনী নিয়ে রিসার্চ করার সময় তিনিও নিশ্চয়ই পৃথ্বীরাজের আত্মীয়র মতো চোখ বেঁধে রেখেছিলেন! এরপর যদি রাজপুতরা তাঁকে ফোন করে হুমকি দেয়, তাহলে কিছু করার নেই। কারণ এতদিন ভুলে ভরা পিরিয়ড পিস পিস করা ফিল্ম কেউ কখনও দেখেননি।
View this post on Instagram