চলে গেলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma)। লৌকিক- অলৌকিকের জগৎ পেরিয়ে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। শনিবার সন্ধ্যায় অন্তত দশ বার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল ঐন্দ্রিলার। সব্যসাচী চৌধুরী (Sabyasachi Chowdhury) বুঝতে পেরেছিলেন, ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন না। ফেসবুক জুড়ে ছিল আশা জাগিয়ে রাখা পোস্ট। মুছে দিয়েছিলেন তিনি। এরপরই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তাঁদের অনুরাগীরাও।
রবিবার, 20 শে নভেম্বর দুপুর 12 টা 59 মিনিটে চলে গেলেন ঐন্দ্রিলা। গত 2 রা নভেম্বর হঠাৎই ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। ঐন্দ্রিলার মা শিখা শর্মা (Shikha Sharma) জানিয়েছিলেন, তাঁর সাথে কথা বলতে বলতেই মেয়ে জানান, তাঁর ডান হাত অসাড় লাগছে। মাথায় যন্ত্রণা শুরু হয়েছিল। তার সাথে হচ্ছিল বমি। দ্রুত সব্যসাচী হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসেন ঐন্দ্রিলাকে। এমআরআই করে জানা যায়, ঐন্দ্রিলার মস্তিষ্কে জমাট বেঁধেছে রক্ত। সেই রাতেই নিউরো-সার্জন ডঃ নিলয় বিশ্বাস (Niloy Biswas) ঐন্দ্রিলার অস্ত্রোপচার করেন। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পর কোমায় চলে গিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি। সাড় ছিল না বাঁ হাতেও। তবে কিছুদিনের মধ্যেই কোমা আংশিক কেটে গিয়েছিল। হাত সামান্য নাড়াতে পারছিলেন। বেরিয়ে এসেছিলেন ভেন্টিলেশন থেকেও
View this post on Instagram
কিন্তু শরীরে দেখা দিয়েছিল সংক্রমণ। হাসপাতালে থাকাকালীন আবারও হার্ট অ্যাটাক হয় তাঁর। রক্তচাপ ওঠা-নামা করতে থাকে। অসাড় হয়ে যায় শরীর। আবারও ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয় ঐন্দ্রিলাকে। মস্তিষ্ক সূচক পনের-র পরিবর্তে নেমে গিয়েছিল তিন-এ। চিকিৎসকরা সব্যসাচীকে বলেছিলেন ঈশ্বরকে ডাকতে। শুক্রবার সন্ধ্যায় সব্যসাচীর একটি পোস্ট সকলের মনে আশা জাগায়। ওই দিন সন্ধ্যার দিকে হঠাৎই ঐন্দ্রিলার রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়ে যায়। শরীর গরম হয়ে ওঠে। বেশ কিছু জীবনদায়ী সাপোর্টের প্রয়োজনও কমে আসে। সব্যসাচী সহ সকলেই মনে করেছিলেন, মিরাকল হল। কিন্তু ছবিটা বদলে যায় শনিবার। অন্তত দশবার হার্ট অ্যাটাকের ফলে রক্তচাপ আবারও অস্বাভাবিক ভাবে নেমে যায়। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে গিয়েছিল। রক্তে ভরে গিয়েছিল দূষিত পদার্থ। ভেন্টিলেশনে দেওয়ার পরেও অক্সিজেনের মাত্রা আশানুরূপ ছিল না।
রবিবার মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন ঐন্দ্রিলা। শেষ হয়ে গেল টানা কুড়ি দিনের লড়াই। ফিরলেন না লড়াকু রাজকন্যা। হাসপাতাল থেকে কুঁদঘাটের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে ঐন্দ্রিলার পার্থিব শরীর। তাঁর অকালপ্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিউড। শোকস্তব্ধ তাঁর অনুরাগীরাও যাঁরা প্রতিদিন প্রার্থনা করেছেন ঐন্দ্রিলার সুস্থতার। ‘হুপহাপ’ (HOOPHAAP)-এর তরফে প্রতিটি মুহূর্ত সকলে মানসিক ভাবে ছিলেন ঐন্দ্রিলার সাথে। কিন্তু কলম লিখবে ঐন্দ্রিলার চলে যাওয়ার দুঃসংবাদ, তা কেউ ভাবেননি। তারাদের দেশে চলে গিয়েছেন আমাদের ‘জীওন কাঠি’। কোথায় তা, জানি না। কিন্তু সেই নক্ষত্রলোকে আপনি ভালো থাকুন ঐন্দ্রিলা।
View this post on Instagram