নিয়োগ দূর্নীতি কান্ডের শিকড় টলিউডের কতটা গভীরে প্রোথিত রয়েছে তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। ইডির আতসকাঁচের নিচে উঠে আসছে একের পর এক অভিনেতা-অভিনেত্রীর নাম। সূত্রপাত হয়েছিল বনি সেনগুপ্ত (Bony Sengupta)-কে দিয়ে। তালিকায় যুক্ত হয়েছে প্রিয়াঙ্কা সরকার (Priyanka Sarkar)-এর নাম। নিয়োগ দূর্নীতি কান্ডে অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) নব্য প্রযোজক হিসাবে টলিউডে প্রবেশ করেছিলেন একসময়। বনির সাথে তাঁর কাজের কথা হয়েছিল। পারিশ্রমিক বাবদ দামি রেঞ্জ রোভার গাড়ি তিনি দিয়েছিলেন বনিকে। তবে তাঁর সাথে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করেননি কুন্তল। বনি জানালেন, তিনি তখন নতুন। চুক্তি ছাড়াই কিছু,ক্ষেত্রে কাজ করতে অভ্যস্ত ছিলেন বনি। বর্তমানে বনি মনে করেন, চুক্তি স্বাক্ষর করা জরুরী।
এছাড়াও নামী প্রযোজকরা ছাড়া নতুন প্রযোজকদের সাথে কাজ করতে গেলে তিনি অবশ্যই তাঁদের সম্পর্কে জেনে নেবেন বললেন বনি। তবে পাশাপাশি তিনি স্বীকার করলেন, সকলের সম্পর্কে সঠিক তথ্য বের করা মুশকিল রয়েছে। দূর্নীতির সাথে জড়িত থাকতে চান না বলেই চুয়াল্লিশ লক্ষ টাকা ফেরত দিয়েছেন বনি। অনেকে বলছেন, বনির পারিশ্রমিক এত টাকা নয়। কিন্তু তিনি জানালেন, এটা তাঁর উপার্জনের টাকা। নিজের উপার্জনের টাকা দিতে হল বলে বনির আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু সেই সময় বনির মধ্যে নার্ভাসনেস কাজ করছিল। কারণ তিনি অন্যায় করেননি। তবে ভুল করেছেন। বনি চেষ্টা করছিলেন, তাঁর নাম যাতে খারাপ না হয়। তাঁর মা-বাবা, আইনজীবি ও কৌশানী (Koushani Mukherjee) -র সাথে কথা বলে এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজেছিলেন বনি।
কিন্তু এই ঘটনার ফলে বনিকে নিয়ে তৈরি মিমে ছেয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। কিন্তু 2014 সালে কেরিয়ারের গোড়া থেকেই বনি সহ্য করেছেন ট্রোলিং। তিনি জানেন, অনেক ক্ষেত্রে ট্রোলারদের উপার্জনের পথ এটি। ফলে তিনি তাঁদের সম্মান করলেও ব্যক্তিগত আক্রমণ হলে অবশ্যই খারাপ লাগে। তবে অনেকেই বলেছেন, বনির রেঞ্জ রোভার গাড়ির টাকায় একটি বাংলা ফিল্ম তৈরি হতে পারে। এই ক্ষেত্রে বনি মনে করেন, বাংলা সিনেমার নায়ক-নায়িকাদের এতটাই ছোট করে দেখা হয় যে তাঁদের পারিশ্রমিক যথেষ্ট কম মনে করা হয়। কোনো শিল্পীর খারাপ সময়ে টলিউডের একজোট হওয়া দরকার বলে মনে করেন বনি। এমনকি বনি স্বীকার করলেন, অর্ধেকের বেশি স্টেজ শোয়ের ক্ষেত্রে চুক্তি স্বাক্ষর হয় না।
প্রশ্নের মুখে পড়েছিল বনি ও কৌশানীর প্রযোজনা সংস্থাও। কিন্তু বনি জানালেন, তিনি ও কৌশানী ছাড়াও তাঁদের প্রযোজনা সংস্থার আরও একজন অংশীদার রয়েছেন। তিনিও বিনিয়োগ করেছেন। ফলে প্রথম থেকেই চুক্তিপত্রে সব কিছু স্পষ্ট করা রয়েছে। তবে বনির খারাপ লেগেছে কৌশানীর নাম এই ঘটনায় জড়ানো হয়েছে বলে। অপরদিকে বনির মা পিয়া সেনগুপ্ত (Piya Sengupta) বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে দূর্নীতির প্রমাণ দিতে পারলে তিনি পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। বনির মতে, সামনেই ইমপার নির্বাচন। এই কারণে বিরোধীরা তাঁর মা পিয়াকে নিয়ে রটনা করছেন।
View this post on Instagram