BollywoodHoop PlusTollywood

কোথায় হারিয়ে গেলেন প্রসেনজিৎ-এর সুপারহিট ছবি ‘অমর সঙ্গী’-র নায়িকা?

আশির দশকে রিলিজ করেছিল বলিউড ফিল্ম ‘লাভ স্টোরি’। এই ফিল্মের মাধ্যমে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিলেন এক নতুন জুটি, কুমার গৌরব (Kumar Gaurav) ও বিজয়েতা (Vijayta)। ফিল্ম বক্স অফিসে হিট হওয়ার পাশাপাশি সুপারহিট হয়েছিল এই জুটিও। কিন্তু এরপর থেকেই কুমার গৌরব অধিকাংশ সময় কাটাতেন বিজয়েতার বাড়িতে। বলিউডের অন্দরের আবহাওয়া এই সম্পর্ক নিয়ে ছিল যথেষ্ট ইতিবাচক। কারণ প্রযোজক-পরিচালকরা এই জুটির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়েছিলেন। কিন্তু ‘লাভ স্টোরি’-র মতোই কুমার গৌরবের বাবা অভিনেতা রাজেন্দ্র কুমার (Rajendra Kumar) বাস্তবেও এই সম্পর্কের বিরোধিতা করেছিলেন।

শোনা যায়, কুমার গৌরবের সাথে বহু আগেই সুনীল দত্ত (Sunil Dutt) ও নার্গিস (Nargis)-এর কন্যা নম্রতা দত্ত (Namrata Dutt)-এর বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু 1981 সালে ‘লাভ স্টোরি’ মুক্তি পাওয়ার পর বিজয়েতার সাথে কুমার গৌরব সম্পর্ক গড়ে তুললে দুই পরিবারের বন্ধুত্বেও আঁচ আসে। একরকম জোর করেই কুমার গৌরবকে বাধ্য করা হয়েছিল ব্রেক-আপ করতে। 1984 সালে নম্রতার সাথে তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। ওদিকে এই ব্রেক-আপের ফলে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন বিজয়েতা। তাঁর মর্যাদাবোধেও আঘাত লেগেছিল।

পন্ডিত যশরাজ (Pandit Yashraj) ছিলেন বিজয়েতার কাকা। যতীন পন্ডিত (Jatin Pandit) ও ললিত পন্ডিত (Lalit Pandit)-এর বিজয়েতার বংশকৌলিন্য কোনো দিক থেকেই কম ছিল না। ফলে একরকম কুমার গৌরবের উপর প্রতিশোধ নিতেই 1986 সালে পরিচালক সমীর ম্যাকলন (Sameer Maclon)-কে বিয়ে করেছিলেন বিজয়েতা। কিন্তু সেই বিয়েতে ছিল না ভালোবাসা। ফলে 1988 সালে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ততদিনে বাংলা ফিল্ম ‘অমর সঙ্গী’ হয়ে উঠেছে আইকনিক। প্রসেনজিৎ (Prosenjit Chatterjee)-র বিপরীতে নজর কেড়েছেন বিজয়েতা। কিন্তু সমীরের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর তাঁর কেরিয়ারে যেন শুরু হল গ্রহণ।

একের পর এক বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়তে শুরু করল। ব্রেক-আপ, বিবাহ বিচ্ছেদ, কেরিয়ারের অসফলতা বিপর্যস্ত করে দিয়েছিল বিজয়েতাকে। ধীরে ধীরে বিনোদন জগৎ থেকে সরে যেতে শুরু করেছিলেন বিজয়েতা। সেই সময় তাঁর জীবনে বন্ধু হিসাবে প্রবেশ ঘটে সঙ্গীত পরিচালক আদেশ শ্রীবাস্তব (Adesh Sreevastav)-এর। তিনিই হয়ে উঠেছিলেন বিজয়েতার সাপোর্ট সিস্টেম। 1990 সালে আদেশ ও বিজয়েতার বিয়ে হয়। তাঁদের সম্পর্কের রসায়ন ছিল সুন্দর। আদেশ ও বিজয়েতার দুই পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু হঠাৎই ক্যান্সারে আক্রান্ত হন আদেশ।

বিদেশে তাঁর ট্রিটমেন্ট শুরু হয়। সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছিলেন তিনি। মিউজিক ভিডিও পরিচালনা শুরু করেছিলেন আবারও। কিন্তু মারণরোগ আদেশের শরীরে ফিরে এসেছিল ভাগ্যের পরিহাসে। 2015 সালে প্রয়াত হন আদেশ। স্বামীর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিলেন বিজয়েতা। আর্থিক দুঃসময় নেমে এসেছিল জীবনে। তবে বর্তমানে তাঁর দুই ভাই যতীন-ললিতের সহায়তায় তা কাটিয়ে উঠেছেন তিনি। আদেশের পরিচালনায় পপ সিঙ্গার হিসাবে ‘প্রোপোজ : পেয়ার কা ইজহার’-এ গান গেয়েছিলেন বিজয়েতা। 2007 সালে এই মিউজিক অ্যালবটি মুক্তি পায়। এছাড়াও অসংখ্য ফিল্মে প্লে ব্যাক করেছেন বিজয়েতা। 2006 সালে হিন্দি ফিল্ম ‘চিঙ্গারি’-তে তাঁকে শেষবার দেখা গিয়েছিল।

Related Articles