Durga Puja: সুকুমার রায়ের আবোল তাবোল এবার হাতিবাগানে, মন্ডপসজ্জা দেখে অবাক হলেন সক্কলে
মহালয়া থেকেই কলকাতাতে শুরু হয়ে গেছে পুজো পুজো রব। আগেকার দিনে অন্তত পঞ্চমী থেকে শুরু হতো কিন্তু বর্তমানে মানুষের মনের মধ্যে এতটাই তাড়াহুড়ো যে তারা মহালয়ার দিন থেকেই মোটামুটি এই ঠাকুর দেখতে শুরু করে দিয়েছেন। এই ঠাকুর গুলির মধ্যে অন্যতম যেমন এবারের কলকাতার শ্রীভূমি ঠিক আর একটা ঠাকুরের কথা না বললেই নয়, তা হলো হাতিবাগানের নবীন পল্লী।
হাতিবাগানে নবীন পল্লী এবার ৯০ বছরে পদার্পণ করেছে। তাইতো তাদের এবারের থিম আবোল তাবোল। আবোল তাবোল বাঙালির জন্য একটা নস্টালজিয়া, আবোল তাবোল বইটি পড়েনি। এমন বাঙালি কিন্তু খুঁজে পাওয়া যায় না , এ বছর আবোল তাবোল শতবর্ষ পূরণ করেছে। তাইতো হাতিবাগানের নবীন পল্লী তাদের ৯০ বছরে আবোল তাবোলকে স্মরণ করেছে।
তবে শুধুমাত্র আবোল তাবোল যে এ বছর শতবর্ষে পদার্পণ করেছে, এমনটাই নয় সুকুমার রায় আবোল তাবোল এই গ্রন্থ প্রকাশের দশ দিন আগে অর্থাৎ নয় সেপ্টেম্বর মারা গিয়েছিলেন। তাই তাঁকেও স্মরণ করা হয়েছে এই মন্ডক সজ্জার মধ্য দিয়ে।
কিছু অদ্ভুতুড়ে বিষয়কে কিভাবে সুন্দর করে কবিতার মধ্যে দিয়ে বলা যায়, তা কিন্তু আমাদের সুকুমার রায় বুঝিয়ে দিয়েছেন। আবোল তাবোল এর প্রত্যেকটি কবিতার অংশ, আঁকা আমরা গেলে দেখতে পাব হাতিবাগান নবীন পল্লির মন্ডপসজ্জায়।
মন্ডপের সামনে দিয়ে হাঁটলে আপনি বুঝতে পারবেন, যে আশেপাশের প্রত্যেকটি বাড়িতে সুন্দর করে সাদা রং করে আঁকা হয়েছে আবোল তাবোল এর প্রত্যেকটি চরিত্রকে। পুরনো কলকাতার একটা অংশ বলতে পারেন হাতিবাগান। এখানে গেলে বড় বড় বাড়ি সহজেই চোখে পড়ে। অলি গলির মধ্যে থাকা এই বাড়িগুলিতে ব্রিটিশ স্থাপত্য শৈলীর দেশ নিদর্শন পাওয়া যায়।
শোনা যায়, ১৯৩৪ সালে হাতিবাগান অঞ্চলে নবীন পল্লী পুজোর শুরু হয়। সেই সময় যারা স্থানীয় বাসিন্দা ছিলেন তারা ছোট করেই পুজো করতেন, কিন্তু ধীরে ধীরে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখানে এমন দুর্ধর্ষ থিমের পুজোর ছোঁয়া লেগেছে।
মন্ডপের পাশাপাশি এখানে দুর্গা প্রতিমা কেঈ একটু অদ্ভুতভাবেই বানানো হয়েছে। মানে আর পাঁচটা দুর্গা ঠাকুরের মতো নয় এখানে আবোল তাবোল এর থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কাঠের উপরে খোদাই করা হয়েছে দুর্গা প্রতিমাকে দেখতেও কিন্তু ভারী সুন্দর লাগছে।
আমাদের শৈশব ফুরিয়ে গেলেও আমরা কিন্তু সুকুমার রায়ের ‘আবোল তাবোলকে’ কিছুতেই ভুলতে পারি না। নতুন প্রজন্ম শুধুমাত্র বইয়ের পাতায় আর মোবাইলের স্ক্রিনেই তাদের চোখ এবং মনকে আটকে রাখে। তারা যদি এখানে ঠাকুর দেখতে আসে এবং এসে যদি এমন চরিত্রকে চোখের সামনে দেখতে পায়, হয়তো তাদের মনেও ইচ্ছা জাগবে, বাড়িতে গিয়ে একটা আবোল তাবোল এর বই কিনে তার পাতা উল্টাতে।
তবে উদ্যোক্তাদের আশা, এটা যেন শুধুমাত্র সুকুমার রায়ের আবোল তাবোল এর সেলিব্রেশন না হয়, এর মাধ্যমে যেন নতুন প্রজন্মের মধ্যে সুকুমার রায় এবং আবোল তাবোল বেঁচে থাকুক। মোবাইল, টিভিতে কার্টুন দেখা নয়, তারা বরং অবসর সময় কয়েকটা এই আবোল তাবোল এর কবিতা আওড়াক, তবেই তো উদ্যোক্তাদের এমন প্রচেষ্টার সার্থক হবে।