গ্ল্যামার জগতের চাকচিক্য দেখে আমজনতা যতই অভিভূত হোক না কেন, এই ইন্ডাস্ট্রিতে যে আলোর আড়ালে কতটা অন্ধকার লুকিয়ে রয়েছে তা অনেকেরই অজানা রয়ে যায়। কাস্টিং কাউচ, মধুচক্রের মতো কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িয়েছে বহু অভিনেতা অভিনেত্রীর নাম। বহু বছর ধরে বহু তারকার নাম উঠে এসেছে বিতর্কে। জানলে অবাক হবেন, এই তালিকায় রয়েছে বাঙালি অভিনেত্রীর নামও। তিনি মালা সিনহা (Mala Sinha)।
ষাটের দশকের সুপারস্টার নায়িকা মালা সিনহা। সে সময়ে ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয়তম অভিনেত্রীদের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি। শুধু নামেই সুপারস্টার নয়। শোনা যায়, সে সময়ে অভিনেত্রীদের মধ্যে তিনিই পেতেন সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক। তবুও তিনি পা বাড়িয়ে দিলেন ভুল পথে। কার্যত নিজের হাতে শেষ করে দিয়েছিলেন নিজের সাজানো কেরিয়ার। তাঁর একটি মাত্র ভুলে লহমায় ভেঙে পড়েছিল মালা সিনহার উজ্জ্বল ফিল্মি কেরিয়ার। নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তাঁর ভাবমূর্তি। মানুষের রোল মডেল থেকে এক ধাক্কায় সকলের ঘৃণার পাত্রী হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
১৯৭৮ সালে কেরিয়ারের শীর্ষে থাকার সময়েই মালা সিনহার জীবনে নেমে এসেছিল বিরাট বিপর্যয়। হঠাৎই একদিন আয়কর দফতরের রেইড হয় তাঁর বাড়িতে। তাঁদের তল্লাশিতে বাথরুম থেকে উদ্ধার হয়েছিল ১২ লক্ষ টাকা, যা সেই সময়কার নিরিখে প্রচুর। সুপারস্টার নায়িকার বাড়ির বাথরুম থেকে এত টাকা উদ্ধার! খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল পড়ে যায় সর্বত্র। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টা নিয়ে আইনি জলঘোলাও হয়েছিল।
আদালতে দাঁড়িয়ে মালা সিনহা যা বলেছিলেন তা বদলে দিয়েছিল তাঁর জীবনটা। টাকার উৎস সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, দেহব্যবসা করে ওই টাকাটা উপার্জন করেছিলেন তিনি। মালা সিনহার এই স্বীকারোক্তি মুহূর্তে ধ্বংস করে দিয়েছিল তাঁর দীর্ঘ ফিল্মি কেরিয়ার। এক সময় অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, রাজেশ খান্নার মতো অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি। অভিনয় ইন্ডাস্ট্রির সবথেকে রূপসী নায়িকাদের মধ্যে একজন ছিলেন মালা সিনহা। কিন্তু ওই ঘটনার পর থেকে অভিনয় জগৎ থেকে হারিয়ে যান তিনি।