Hooghly: হুগলিবাসীদের জন্য সুখবর, রসগোল্লার পাশাপাশি GI ট্যাগ পেতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি
বাংলার মুকুটে নতুন পালক যুক্ত হতে চলেছে। গুপো সন্দেশ নিয়ে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছেন হুগলির গুপ্তিপাড়ার বাসিন্দারা। এবার GI তকমা হয়তো খুব বেশি আর দূরে নয়, আর মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই জিআই তকমা পেতে চলেছে করতে গুপ্তি পাড়ার গুপো সন্দেশ। সূত্রের খবর অনুযায়ী আর মাত্র সাত দিনের অপেক্ষা। গুপ্তিপাড়ার গোপন সন্দেশের GI তকমা দাবির জন্য প্রথমে ৪৮ জন বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীকে নিয়ে গুপ্তিপাড়া ২ পঞ্চায়েতের উদ্যোগে সম্প্রতি তৈরি হয় ‘গুপ্তিপাড়া গুপো সন্দেশ উন্নয়ন সমিতি’।
এই সন্দেশের উৎপত্তি কিভাবে?
সন্দেশের উৎপত্তি কবে, তার আসল সময় কিন্তু জানা যায়নি। হাওড়া কাটোয়ার শাখায় প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত প্রাচীন জনপদ গুপ্তিপাড়া। সেখানেই এই সন্দেশ বানানোর অভিনব পদ্ধতি প্রথম চালু হয়েছিল।
কিভাবে তৈরি করা হয় অসাধারণ এই সন্দেশ?
- প্রথমে একটা বিশাল লোহার কড়াই এর মধ্যে ছানা নিয়ে তাকে ভালো করে পাক দেওয়া হয়।
- তারপর ওই ছানাকে পরিষ্কার কাপড়ে বেঁধে খুব ভালো করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে অতিরিক্ত জল ফেলে দেওয়া হয়।
- এরপর ছানার সঙ্গে মিষ্টি মিশিয়ে হাতে করে থেবড়ে দেওয়া হয়।
- এবার ওই দুটি থেবড়ে যাওয়া ছানাকে একসঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়।
- মিষ্টি দেওয়ার জন্য কখনো গুড় অথবা কখনো চিনি ব্যবহার করা যায়।
গুপ্তিপাড়ার গুটি কয়েক পরিবার এই মিষ্টি তৈরি করেন, শোনা যায় এই মিষ্টির স্বাদ সুন্দর করার জন্য এই মিষ্টির ব্যবসায়ীরা নাকি সারা বছর ধরে খেজুরের গুড় এক জায়গায় জমা করে রাখেন।
গুপ্তিপাড়ার ইতিহাস
গুপো সন্দেশের পাশাপাশি গুপ্তিপাড়া এক ঐতিহাসিক জায়গা। এখানকার বিখ্যাত উৎসব হল দোল আর রথযাত্রা। রাধা কৃষ্ণ চন্দ্রের সময়ে প্রায় ২৭৯ বছর আগে প্রাচীন বৃন্দাবন চন্দ্রের রথযাত্রা এখানে শুরু হয়েছিল, বৃন্দাবন মঠের সামনে থেকে বাজার পর্যন্ত দুধারে মেলা বসে এই সময়। তাছাড়া উল্টো রথের আগের দিন এখানে ভান্ডার লুট উৎসব হয় ধুমধাম এর সঙ্গে, বাংলার ঐতিহ্যশালী বড় বড় রথ গুলির মধ্যে গুপ্তিপাড়ার রথ এক অন্যতম। গুপ্তিপাড়ায় রাজা রামমোহন রায়ের সঙ্গীত শিক্ষাগুরু ‘কালী মির্জা’র জন্ম হয়। এছাড়া বিখ্যাত কবিয়াল ভোলা ময়রা, বিজ্ঞানী ইন্দুমাধব মল্লিক ও নবাব সিরাজউদ্দৌলার সেনাপতি মোহন লালের জন্মস্থান এখানে।