বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এক খ্যাতনামা অভিনেতা নিমু ভৌমিক (Nimu Bhowmik)। বহুমুখী প্রতিভা ছিল তাঁর। কমেডি থেকে খলনায়ক, সব ধরণের চরিত্রেই দেখা গিয়েছে তাঁকে। বাংলা সিনেমা জগতের এক অমূল্য সম্পদ ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে দর্শকদের একের পর এক চরিত্রে মনোরঞ্জন করে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু যতটা সম্মান তাঁর প্রাপ্য ছিল তা তিনি পাননি। বাংলা সিনে জগৎ তাঁর যথাযথ মূল্য দিতে পারেনি।
শুধু সিনেমাই নয়, যাত্রা থেকে থিয়েটার সর্বত্রই ছিল নিমু ভৌমিকের অবাধ বিচরণ। প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি চরিত্রেই দুর্দান্ত অভিনয় দিয়ে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন তিনি। পর্দায় কখনো ভিলেন হয়ে ধরা দিয়েছেন তিনি। আবার কখনো কৌতুক অভিনয় করে দর্শকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। তবে বাস্তব জীবনে তিনি ছিলেন একজন আপাদমস্তক সমাজ সচেতন মানুষ। তাঁর কৌতুক বোধও ছিল প্রশংসনীয়।
মহানায়ক উত্তম কুমার ছিলেন তাঁর অভিনয় জগতে আসার অনুপ্রেরণা। শোনা যায়, অভিনয় করার জন্য কলেজের পড়া মাঝপথে ছেড়েই কলকাতায় চলে আসেন নিমু ভৌমিক। তাঁর প্রথম ছবি ‘বাঘা যতীন’। ১৯৬৬ সালে ‘মণিহারা’ ছবিতেও একটি ছোট চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তারপর একে একে অভিনয় করেন দুই পৃথিবী, স্ত্রীর পত্র, বিকেলে ভোরের ফুল, দাদার কীর্তি, গণদেবতা, মঙ্গলদীপ, গুরুদক্ষিণার মতো ছবিতে। পাশাপাশি দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে যাত্রাপালা এবং নাটকেও অভিনয় দক্ষতা দেখিয়েছেন তিনি।
বাংলা ছবির অন্যতম জনপ্রিয় খলনায়ক ছিলেন নিমু ভৌমিক। দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, তাপস পাল, চিরঞ্জিত চক্রবর্তীদের মতো অভিনেতাদের সঙ্গে। পরবর্তীতে রাজনীতিতে পা রাখেন নিমু ভৌমিক। বিজেপির হয়ে নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু জয়ের মুখ দেখতে পারেননি। তারপরেই সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে আসেন নিমু ভৌমিক। কমিয়ে দেন অভিনয়ও। বড়পর্দায় তাঁর শেষ কাজ ‘দশ মাস দশ দিন’ ছবিতে। ২০১৯ সালে গড়িয়ায় নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নিমু ভৌমিক। নিঃশব্দে বিদায় নেন খ্যাতনামা অভিনেতা।