এলিয়েনরা কি সত্যিই রয়েছে! ফাঁস হল রহস্য, কি জানালেন বিজ্ঞানীরা
১৯৮০ সালে ১৪ ডিসেম্বর প্রচারিত ‘কসমস’ এর দ্বাদশ পর্বে অনুষ্ঠানটির নির্মাতা কার্ল সাগান টেলিভিশনের দর্শকদের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ফ্রাংক ড্রাকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি মিল্কিওয়েতেই সম্ভাব্য সভ্যতার সংখ্যা গণনা করেছেন। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে ৩০ টিরও বেশী এলিয়েন সভ্যতার দেখা মিলেছে মিল্কিওয়েতেই। নট্টিনহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদল এর গবেষণায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে। তাদের মতে, “এই পৃথিবীতে একমাত্র বুদ্ধিদীপ্ত জীবের বাস তা নয়, অন্যান্য গ্রহ পৃথিবীর মতো বুদ্ধিদীপ্ত জীব বেড়ে উঠতে পারে।” নট্টিনহাম বিশ্ববিদ্যালয় এর মহাকাশ রসায়নবিদ ক্রিস্টোফার কনসেলিস জানান, “আমাদের গ্যালাক্সিতে বেশকিছু ডজন এমন অ্যাক্টিভ সভ্যতা রয়েছে। মনে করা হয় বুদ্ধিদীপ্ত সভ্যতায় পরিণত হতে সময় নিয়েছে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন বছর গবেষকদের দাবি, প্রায় ৩৬ টির মত অ্যাক্টিভ সভ্যতা রয়েছে গ্যালাক্সি দূরত্ব প্রায় ১৭,০০০ আলোকবর্ষ, যা মনুষ্য প্রযুক্তি থেকে অনেকটাই দূরে।”
প্রশ্ন উঠেছে আকাশ গঙ্গা ছায়াপথ এ কি সত্যি সত্যি এলিয়েনদের দেখা মিলেছে! এ প্রসঙ্গে জানতে হলে আগে জানতে হবে আকাশ গঙ্গা ছায়াপথ কি। এই ছায়াপথ টি হল কালপুরুষের বাহুতে এটি একটি দন্ড যুক্ত সর্পিলাকার ছায়াপথ । পৃথিবী আকাশগঙ্গা ছায়াপথের একটি অংশে অবস্থিত। এটি রাতের বেলা পরিষ্কার আকাশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে বিস্তৃত হালকা সাদা মেঘের মতো দেখায়। খুব হালকা দেখায় বলে শহর থেকে খুব বেশি উজ্জ্বল আলো আছে এমন স্থান থেকে আকাশগঙ্গা দেখা যায় না। আমাদের পৃথিবীর বাইরে সত্যিসত্যি প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা তা নিয়ে বারবার গবেষণা হয়েছে। আর এই নিয়ে মতপার্থক্য কোন শেষ নেই। আর এই বিষয়টি নিয়ে তর্ক-বিতর্ক কখনো শেষ হবে কিনা তাও জানা নেই। খোঁজ চলতেই থাকবে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে মানুষের শুধু কৌতুহল ক্রমাগত বেড়েই গেছে। তবে শুধুমাত্র মিল্কিওয়েতেই যে এলিয়েনদের খোঁজ পাওয়া গেছে এমনটা নয় বৈজ্ঞানিক মনিকা গ্রেডি মন্তব্য করেছেন, জুপিটারের একটি চাঁদ ইউরোপায় প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে। শুধু তাই নয়, তিনি একথা প্রায় নিশ্চিত করেই জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান সেখানে “অক্টোপাসের বুদ্ধিমত্তার কাছাকাছি প্রাণী পাওয়া গেছে।” বৃহস্পতির যে ৭৯ চাঁদের সম্পর্কে জানা গেছে তার মধ্যে একটি হলো ইউরোপা। আর এইখানে প্রাণীর সন্ধান পাওয়া গেছে বলে তিনি দাবি করে। তবে এই অংশটি পুরোটাই বরফে ঢাকা, তাই তিনি আশংকা করছেন এরা হয়তো বরফের নিচে থাকতে পারে। মঙ্গল গ্রহের সত্যি সত্যি প্রাণের সন্ধান আছে কিনা তা নিয়েও গবেষণার শেষ নেই। তবে অধ্যাপক গ্রেডি মনে করেছেন, “মঙ্গল গ্রহে যদি প্রানের সন্ধান পাওয়া যায় তা হতে পারে ব্যাকটেরিয়া ন্যায়”। মহাকাশে যদি সত্যিই এলিয়েনদের সভ্যতার খোঁজ পাওয়া যায় তবে তাই হবে মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার। পৃথিবীতে বসবাসকারী মনুষ্য প্রজাতি চিরকাল নিজেদেরকে বুদ্ধিদীপ্ত জীব বলে যে বড়াই করে এসেছে তার প্রমাণ হবে সে যদি সত্যি সত্যি পৃথিবী থেকে বাইরে বেরিয়ে গিয়ে অন্য কোথাও এলিয়েনদের বা বুদ্ধিদীপ্ত জীবদের সন্ধান করতে পারে। সেখানেই মনুষ্য জন্মের সার্থকতা।
তবে পৃথিবীর বিজ্ঞানীরা কোন জীব কে বেশি বুদ্ধিমান বলছেন! তারা জানান, যারা মহাকাশে রেডিও তরঙ্গ পাঠাতে পারে তারাই একমাত্র বুদ্ধিমান প্রাণী। তাদের মতে, পৃথিবীর বাইরে ও বুদ্ধিদীপ্ত প্রাণী বাস করতে পারে। পৃথিবীতে যেভাবে উন্নত প্রাণের বিকাশ ঘটছে সেই একইভাবে ছায়াপথের যে বুদ্ধিমান প্রাণীর বিকাশ ঘটবে না এমন কথা একদমই বলা যায় না। আর সেই জায়গার পরিবেশ-পরিস্থিতি যদি একেবারে পৃথিবীর মত হয় তাহলে তো কথাই নেই। তারা বলছেন, পৃথিবী যেমন সূর্যকে কেন্দ্র করে তার চারিদিকে ঘোরে সেই গ্রহটিও সূর্যের মতো কোন নক্ষত্রের চারিদিকে নিশ্চিতভাবেই আবর্তিত হয়। সব পরিবেশে যদি পৃথিবীর সঙ্গে খানিকটা মিলে যায় তাহলে সেখানে ভিনগ্রহীদের থাকাটা খুব একটা আশ্চর্যজনক ঘটনা হবে না।