ঘটা করে অনুষ্ঠান নয়, বিয়ের টাকা বাঁচিয়ে ৩০০ জন গরিব মানুষকে পেট ভরে খাওয়ালেন দম্পতি
আইবুড়োভাত থেকে বৌভাত এই হলো বাঙালির বিয়ের চার দিনের এক বিশাল পর্ব। আত্মীয়-স্বজনরা বিয়ে বাড়িতে এসে বেশ পেট পুজো করে অবশেষে পঞ্চম দিনের দিন বিয়ে বাড়ি খেয়ে বিদায় জানিয়ে আবার তাদের পুরনো জীবনে ফিরে যান। বাঙালির বিয়ে মানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নানান পদের সম্ভার। সকালবেলা গরম গরম লুচি তরকারি থেকে শুরু করে রাত্রিবেলা কোন আইসক্রিম পর্যন্ত একেবারে খাদ্যতালিকায় থাকে নানান রকমের খাবার।
বরের বাড়ি কত রকমের খাবার করল এবং কনের বাড়ি কত রকমের খাবার করল এই নিয়েই চলতে থাকে নানান রকমের জল্পনা-কল্পনা। যার যেরকম সামর্থ্য থাকে সে সেরকম ব্যবস্থা করেন তবে খানাপিনার খুব একটা কমতি থাকতে দেয়না কেউই। বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে খাবার অপচয় এর পরিমাণটাও কিছু কম হয়না। পার্টির মধ্যে অনেকটা খাবার নিয়ে লাস্টে খেতে না পেরে শেষ পর্যন্ত সেই সমস্ত সুস্বাদু খাবারের জায়গা হয় ডাস্টবিন। কিন্তু রাস্তায় এমন কত মানুষ দিনের পর দিন জীবন কাটিয়ে দেন অনাহারে। একদিকে অতিরিক্ত খাবার অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে মানুষ কাটাচ্ছে অনাহারে।
কিন্তু সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিষয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে যেখানে দেখা যাচ্ছে পেশায় দুজনেই কম্পিউটার সায়েন্সের অধ্যাপক। প্রায় দীর্ঘ পাঁচ বছর প্রেম এর পরে যখন বিবাহের সিদ্ধান্ত নেন তখন একটু অন্যরকমভাবে বিবাহ করবেন তা তারা দুজনেই ভেবে নেন। দুজনেই হলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নামখানার বাসিন্দা। পেশায় অধ্যাপক দেবীপ্রসাদের কর্মস্থল ব্যারাকপুর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজ। পেশায় অধ্যাপিকা তিথির কর্মস্থল নেতাজি নগর কলেজের দিবাবিভাগ। যেমন ভাবা তেমন কাজ।
আর পাঁচটা বিয়ে বাড়ির মতন তাদের বিয়ে করার পরিকল্পনা একেবারেই ছিলনা। দিনের পর দিন ধরে অনেক মানুষ আছেন যারা খেতে পায় না, আর অনেক সময় বিয়ে বাড়িতে দেখা যায় খাবারের পর খাবার নষ্ট হতে। এই সমস্ত কিছু পর্যবেক্ষণ করে তাদের মনের মধ্যে একটা পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনকে কাজে লাগিয়েই তারা বিবাহের কিছু পরিকল্পনা পরিবর্তন করেন। বিবাহের কোনরকম আড়ম্ভর, আতিশয্য না করে বিয়ের দিন ৩০০ গরীব লোকজনকে খাইয়ে তাদের আশীর্বাদ নিলেন এই দম্পতি।