শ্রীলেখা মিত্র (sreelekha mitra) স্পষ্টকথনের জন্য ইন্ডাস্ট্রিতে বিখ্যাত। ইতিমধ্যেই তিনি পরিচালনাতেও হাত পাকিয়েছেন। ‘বিটার হাফ’ শর্ট ফিল্মটি তাঁর নির্দেশনায় তৈরী। শ্রীলেখা জানিয়েছেন, ‘বিটার হাফ’-এর কাজ প্রায় শেষ। অপরদিকে তাঁর নতুন চিত্রনাট্যও লেখা শেষ হয়ে এসেছে। তবে তাঁর প্রজেক্টের কাস্টিং প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে উঠে এল ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (Rituparna sengupta)-র কথা।
শ্রীলেখা জানালেন, তাঁর আগামী তিনটে প্রজেক্টের ভাবনা আলাদা হলেও কাহিনীগুলি মূলতঃ নারীকেন্দ্রিক। এর মধ্যেই একটি গল্প এক ষাট-সত্তর বছর বয়সের মহিলার যিনি একা থাকেন। তাঁর মেয়ে থাকেন বিদেশে। অপর একটি গল্প একজন অভিনেত্রীকে নিয়ে। এটি একটি সাইকোলজিক্যাল, ম্যাজিক রিয়েলিটি। আরও একটি গল্প রয়েছে যার মূল কেন্দ্রে রয়েছেন চল্লিশ বছর বয়সী এক মহিলা।
তবে চল্লিশ বছর বয়সী মহিলা চরিত্রের কাস্টিং প্রসঙ্গে শ্রীলেখা মুখ না খুললেও আকারে-ইঙ্গিতে বোঝা গেল, তিনি অভিনয় করতে পারেন এই চরিত্রে। তবে অভিনেত্রীর গল্পে ঋতুপর্ণাকে ‘পারফেক্ট’ মনে হলেও শ্রীলেখার সঙ্গে ঋতুপর্ণার সম্পর্ক ভালো নয়। ফলে শ্রীলেখা এই ব্যাপারে ভাবতে একটু সময় চেয়ে নিয়েছেন। তবে বয়স্ক মহিলার চরিত্রে নিজের এক আত্মীয়াকে কাস্ট করতে চান শ্রীলেখা। তিনি শ্রীলেখার এক পিসি। শ্রীলেখার পিসির নাম তপতী (Tapati) শ্রীলেখা জানালেন, অল্প বয়সে তাঁর এই পিসি খুব সুন্দরী ছিলেন। তাঁর কাছে ফিল্মে অভিনয়ের প্রস্তাব এসেছিল। শ্রীলেখার বাবা যখন তপতী দেবীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি অভিনয় করতে চান কিনা, তপতী দেবী শ্রীলেখার বাবাকে প্রশ্ন করেন, তিনি তাঁকে সিনেমায় নামার কথা কিভাবে বললেন! হ্যাঁ, তখন ফিল্মে অভিনয় করাকে ‘সিনেমায় নামা’ বলা হত এবং এই সংস্কারের বশেই তপতী দেবী সেদিন অভিনয়ে আসতে চাননি। কিন্তু আজ সময় বদলেছে। বদলেছে মানুষের চিন্তাধারাও। অবশেষে শ্রীলেখার প্রস্তাবে সায় দিয়ে অভিনয়ে আসতে রাজি হয়েছেন তপতী দেবী। শ্রীলেখা বললেন, তাঁর পিসির মধ্যে রয়েছে সফট ও ডিগনিফায়েড ব্যক্তিত্ব।
এই গল্পটির অনুপ্রেরণা শ্রীলেখার বাবার জীবন। শ্রীলেখার মায়ের মৃত্যুর পর শ্রীলেখার বাবা দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন। একাকীত্ব তাঁকে গ্রাস করেছিল। মাঝে মাঝেই তাঁর হ্যালুসিনেশন হত। শ্রীলেখা ও তাঁর ভাই বাবাকে সময় দিতে পারতেন না। ফলে সেই সময় শ্রীলেখার মনে হত, বাবাকে কি আরও একবার বিয়ের পিঁড়িতে বসানো যায় না! কিন্তু তা সম্ভব হয়নি, কারণ তৎকালীন যুগের বাবা-মায়েদের চিন্তাধারা ছিল অন্যরকম। তাঁরা ঝগড়া করেও এক ছাদের তলায় থেকেছেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে একজনের পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়া অপরজনকে অসহায়তার মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। শ্রীলেখার চিত্রনাট্যে উঠে আসবে সেই অসহায়তার গল্প, নির্ভরতার গল্প।