BollywoodHoop PlusHoop Trending

IPL-এ ম্যাচ ফিক্সিং থেকে পর্ণ কেলেঙ্কারি, জানুন শিল্পার স্বামী রাজ কুন্দ্রার নানান কুকীর্তি

রাজ কুন্দ্রা (Raj kundra) নামটি গত এক সপ্তাহ ধরে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। কোটিপতি হওয়ার জন্য পর্ণোগ্রাফিক ভিডিও বানানোর অপরাধে তিনি এখন বায়কুল্লা জেলে পুলিশি হেফাজতে। তাঁর আরও একটি পরিচয় রয়েছে। তিনি বলিউড অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি (Shilpa shetty)-র স্বামী যাঁকে তাঁর বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে মুম্বই পুলিশ। শিল্পাও পর্ণোগ্রাফি কেসে যুক্ত রয়েছেন কিনা, তা আপাতত গৌণ। মিডিয়ার নজর এখন রাজ কুন্দ্রার দিকেই বেশি। কিন্তু কে এই রাজ কুন্দ্রা? মুখে সোনার চামচ নিয়ে জন্মানো কোনো বনেদী শিল্পপতি?

একদমই তা নয়, একসময় রাজ কুন্দ্রার বাবা বাসের কন্ডাক্টর ছিলেন এবং মা ছিলেন একটি ছোটো দোকানের সেলস গার্ল। এরপর রাজের বাবা নিজের একটি ছোট্ট ব্যবসা শুরু করেছিলেন। রাজের মা-বাবার কোনোদিন কোটিপতি হওয়ার ইচ্ছা ছিল না। ছোট্ট ব্যবসা থেকে যা আয় হতো তাতে সৎ ও সাধারণ ভাবেই জীবন যাপন করতেন কুন্দ্রা দম্পতি। রাজের পছন্দ হতো না এই মধ্যবিত্ত জীবন। শৈশব থেকেই বিলাসবহুল জীবন রাজকে টানত। তার ফল ফলস্বরূপ মাত্র আঠারো বছর বয়সে ব্রিটেনের পোশাক বিক্রেতাদের কাছে পশমিনা শাল বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। 2007 সালে রাজ ব্রিটেন ছেড়ে দুবাইয়ে চলে যান। সেখানেই তিনি শুরু করেন কনস্ট্রাকশন, মাইনিং এবং রিনিউয়েবল এনার্জির ব্যবসা। এরপরেই হঠাৎই রাজের ভারতে প্রবেশ এবং সোজা বলিউডে শিল্পপতি হিসাবে উদয়।

তাহলে কি দুবাই থেকেই রাজ শুরু করেছিলেন পর্ণোগ্রাফির ব্যবসা? তার উত্তর এখনও জানা যায়নি। তবে রাজ ভালোই বুঝতে পারছিলেন বলিউড ও ভারতীয় শিল্পপতিদের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান করায়ত্ত করতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। সৎ পথে থেকে অর্থ রোজগারের কথা ভাবার সময় রাজ কুন্দ্রার ছিল না। ফলে তিনি টার্গেট করলেন বলিউড ইন্ডাস্ট্রির সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘর থেকে চোখে নায়ক-নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে উঠে আসা নিউকামারদের। শার্লিন চোপড়া (sherlyn chopra), পুনম পান্ডে (punam pandey), গহনা বশিষ্ঠ (gehena vashishth)-দের মতো নতুন মেয়েরা ইন্ডাস্ট্রিতে আসতে শুরু করেছিলেন যাঁদের অভিনেত্রী হতে চাওয়ার অপরাধে পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। রাজের পক্ষে এঁদের টার্গেট করা সুবিধাজনক ছিল। কারণ এঁদের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। রাজ এঁদের কাছে নিজেকে বলিউডের প্রযোজক বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। কিন্তু যখন শার্লিন বা পুনমরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন, তখন তাঁদের কাছে বেরিয়ে আসার রাস্তা ছিল না। ‘হটশটস’ অ্যাপের মাধ্যমে তাঁদের পর্ণোগ্রাফিক ভিডিও ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল সমগ্র পৃথিবীতে। পৃথিবী তাঁদের জানলো ‘নষ্ট মেয়ে’ বলে। সবাই বলল, ইচ্ছা না থাকলে কাউকে দিয়ে জোর করে পর্ণোগ্রাফি করানো যায় না। অপরদিকে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে, শিল্পা শেঠিকে বিয়ে করে রাজ কুন্দ্রা হয়ে উঠলেন ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। প্রথম স্ত্রীকে বিচ্ছেদ দিয়ে শিল্পাকে বিয়ে করে নিজের বলিউড ঘাঁটি মজবুত করেছিলেন রাজ।

শিল্পা ও রাজের যুগ্ম মালিকানা ছিল রাজস্থান রয়্যালসে। একদিকে যখন রাজ পায়ের উপর পা তুলে ভিআইপি বক্সে বসে রাজস্থান রয়্যালসের ম্যাচ দেখছেন, তখন অপরদিকে ‘ভিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’ ও ‘কেনরিন’-এর যৌথ উদ্যোগে হটশটস-এ আপলোড হচ্ছে ভারতীয় সুন্দরীদের পর্ণোগ্রাফি যার চাহিদা সমগ্র পৃথিবীতে তুঙ্গে। নিজের বোনের স্বামী, ইউকে-র বাসিন্দা প্রদীপ বক্সী (pradeep bakshi) -কেও রাজ সামিল করেছিলেন এই ব‍্যবসায়। ‘কেনরিন’ তাঁর কোম্পানি। এই সংস্থায় রাজ আট থেকে দশ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। অপরদিকে রাজস্থান রয়্যালসের আড়ালে শুরু হয়েছিল স্পট ফিক্সিং। ‘দি কপিল শর্মা শো’-তে মজার ছলেই কপিল (kapil sharma) সকলের মনের প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন রাজের দিকে। কপিল প্রশ্ন করেছিলেন, রাজকে তো সারাদিন শিল্পার সাথে শপিং করতে, তারকাদের সাথে ফুটবল খেলতে দেখা যায়। তাহলে তিনি কাজ কখন করেন? রোজগার কিভাবে হয়? রাজ কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পাকা অভিনেত্রী হয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন শিল্পা। কিন্তু এটাই সত্যি। রাজের মতো কোনো তারকার স্বামীকে এত স্পটলাইটে আসতে দেখা যায়নি। রাজকে বরাবর সব জায়গাতেই শিল্পার সাথে দেখা যেত যা সকলের চোখে অস্বাভাবিক লাগত। রাজস্থান রয়্যালসের স্পট ফিক্সিং কান্ডে দলটিকে কয়েক বছরের জন্য নির্বাসিত করা হয়েছিল। পরে রাজস্থান রয়্যালস আবার মাঠে ফিরলেন দেখা যায়নি রাজ কুন্দ্রাকে।

সম্ভবত সেই সময় থেকেই রাজ পর্ণোগ্রাফির ব্যবসা থেকে প্রাপ্ত অর্থ অনলাইন বেটিংয়ের কাজে লাগানো শুরু করেছিলেন। কারণ মুম্বই পুলিশের নজরে এসেছে রাজের ইয়েস ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট, যেখান থেকে অনেকগুলি অস্বাভাবিক লেনদেন করা হয়েছে ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ আফ্রিকার সঙ্গে। অ্যাডাল্ট স্টারের তকমা মন থেকে মেনে নিতে পারেননি শার্লিন ও পুনম। তাঁরা মুম্বই পুলিশকে এই ব‍্যাপারে সব জানিয়ে দিয়েছিলেন। এরপরেই নড়েচড়ে বসে মুম্বই পুলিশ। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মাঢ আইল্যান্ডের বাংলো রেইড করে হাতেনাতে ধরা হয় একটি পর্ণোগ্রাফি র‍্যাকেট। সেই র‍্যাকেটের তরফেও উঠে আসে রাজ কুন্দ্রার নাম। এরপরেই রাজ কুন্দ্রাকে গত 19 শে জুলাই তাঁর মুম্বইয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তবে রাজ কিন্তু এখনও তদন্তে সাহায্য করছেন না। কিন্তু এবার তিনি চেষ্টা করেও হয়তো পুলিশের জাল কেটে বেরোতে পারবেন না। কারণ পাপ কখনও কাউকে রেহাই দেয় না।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Bombay Times (@bombaytimes)

Related Articles