ব্যস্ত শহরের মাঝে এক টুকরো নিরিবিলি, পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ রয়েছে হাওড়ার বুকেই
করোনাভাইরাসের আবহে বাড়ির কচিকাঁচা গুলো অনলাইন ক্লাস করতে করতে একেবারে ক্লান্ত হয়ে গেছে আপনিও ওয়র্ক ফ্রম হোম করতে করতে মাঝে মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসছে অথবা বাড়ির গৃহিণীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রত্যেকটা মানুষের জন্য উদয়-অস্ত খাটতে খাটতে মনে হচ্ছে এবার পালাই পালাই অবস্থা। এমন পরিবেশটা কমবেশি প্রত্যেকটা বাড়িতেই। বাড়ির প্রত্যেকে খাওয়া-দাওয়া করে নিজের গন্তব্যস্থলে চলে যেত তখন গৃহিণীরা নিজেদের জন্য একটু সময় পেতেন। কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগ বাড়িতেই অনেকে বাড়ি থেকে কাজকর্ম করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
আর সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়ার ফিরিস্তি। আর সেই লম্বা লিস্ট পূর্ণ করতে বাড়ির মেয়েদের একেবারে নাকের জলে চোখের জলে অবস্থা। সামনে দুর্গাপুজো একটু যে বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করবেন, তাও চারিদিক থেকে নানান রকমের বাধা নিষেধ। দূরে বেড়াতে যাওয়া নাইবা হল, একটু কাছেপিঠে বাইক কিংবা ছোট একটা গাড়ি ভাড়া করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুরে আসতেই পারেন হাওড়ায় অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহৎ বৌদ্ধ মন্দিরে। শান্তশিষ্ট মনোরম পরিবেশে আপনার সারাদিন দিনটা খুব একটা খারাপ কাটবে না। আর বাড়ির বৃদ্ধ মানুষগুলোর জন্য তো এই জায়গাটি অসাধারণ একটি জায়গা।
পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহৎ কথাটি সঠিক। তবে এশিয়ার যতগুলি বৃহৎ বুদ্ধমূর্তি রয়েছে তার মধ্যে এই মূর্তিটি অসাধারণ একটি কথা বলা যেতে পারে। এই মুর্তিটি হাওড়া জেলার জয়পুরে অবস্থিত। এই বুদ্ধমূর্তিটি দেখতে আপনাকে আসতে হবে ডানকুনির কাছে হাওড়া জেলা জয়পুর বিলবা দক্ষিণ জয়পুর বিলের কাছে। ২০১৭ সালে বুদ্ধ ওয়েলফেয়ার মিশন এর উদ্যোগে এই ৪৫ ফুট এর ফাইবারের বুদ্ধমূর্তিটি তৈরি করা হয়েছে। মূর্তির আশেপাশেই গ্রাম্য দৃশ্য পথকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আপনি সন্ধ্যেবেলা এই জায়গায় আসলে জায়গা মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন। মন্দিরের গায়ে নানান রকম বুদ্ধ মতদেশ, নানান রকম বুদ্ধের জন্মের কাহিনী এবং ঐতিহাসিক বর্ণনায় ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে এক ঘন্টা থেকে দু’ঘণ্টা যে কোথা দিয়ে বেরিয়ে যাবে আপনি নিজেরাও বুঝতে পারবেননা।
মন্দির দর্শন এর সময়সূচী
সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত সর্বসাধারনের জন্য এই মন্দির খোলা থাকে।
কিভাবে পৌঁছবেন
শিয়ালদা থেকে ডানকুনি বা বারুইপাড়া লোকাল চেপে রাজচন্দ্রপুর স্টেশন এ নেমে সেখান থেকে যেকোন টোটো ধরে জয়পুর বললে আপনাকে একেবারে মন্দিরের সামনে নামাবে। আর যদি হাওড়ার দিক থেকে আসেন তাহলে কোনা হাইরোড পেরিয়ে দক্ষিণেশ্বরের দিকে যেকোনো বাসে উঠে জয়পুর বাসস্ট্যান্ডে নেমে সেখান থেকে বললেই যে কেউ আপনাকে একেবারে মন্দিরের যাওয়ার রাস্তা দেখিয়ে দেবে।
তবে আর দেরি না করে একেবারে ‘উঠল বাই তো কটক যাই’ এই মানসিকতা নিয়ে সমস্ত করোনা বিধিনিষেধ মেনে তৈরি হয়ে নিজেদের পুটলি গুছিয়ে একেবারে রওনা হয়ে যান অসাধারণ মন্দিরের উদ্দেশ্যে। একদিনের জন্য মন ভাল করার মত এই জায়গার থেকে ভালো স্থান আপনি আর সারা ভূ-ভারতে খুঁজে পাবেন না এমনটা হলফ করে বলা যায়।