ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু বৃষ্টির হাত থেকে রেহাই পায়নি কেউ। শীত আসার আগেই একরাশ বৃষ্টিতে বিপন্ন জনজীবন। ২০২০ গিয়েছে করোনা নিয়ে, ২১ এ মানুষ মুখোমুখি হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে প্রবল ভাবে। পুজোর কিছুদিন আগে পর্যন্ত যেসব জায়গা জলমগ্ন ছিল, আজ সেই মাটি আবারও জলে নিমজ্জিত। তাহলে কি জল গ্রাস করতে চলছে? কোনো খারাপ সময়ের বা ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিতে চলেছে কি প্রকৃতি?
আমফান, ফণি, দামামা বাজিয়ে গিয়েছে। এসেছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। তাতেও রক্ষে নেই। এবারে বাংলার বুকে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। আজ কলকাতা সহ গাঙ্গেয় পশ্চিম এলাকা জুড়ে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। গত কাল থেকেই মাঝারি বৃষ্টির সূচনা হয়, যা রাত্রে প্রবল আকার ধারণ করে। বাইরের পরিবেশ দেখে বোঝার উপায় নেই এটা বর্ষা নাকি শীতকাল।
এরই মধ্যে আরো খারাপ খবর শোনায় আবহাওয়াবিদরা। জানা যাচ্ছে আরো সাইক্লোন আছড়ে পড়বে। তবে, বর্তমান ঘূর্ণিঝড় ও পরিস্থিতি নিয়ে তার মত, ‘শীতকালে সাধারণত শান্ত জলবায়ু বিরাজ করে। সাইক্লোন ফর্ম করে না। কিন্তু, মরশুমের ট্রানজিশন পিরিয়ডে অর্থাৎ শীতকাল কেটে গিয়ে যখন গ্রীষ্মকাল আসবে তখন পরপর সাইক্লোন দেখা যাবে। অর্থাৎ মার্চ থেকে মে-র মধ্যে দু’ থেকে তিনটি সাইক্লোন আছড়ে পড়তে পারে। জুন পর্যন্ত যতগুলো সাইক্লোন তৈরি হয় সেগুলো পশ্চিমবঙ্গ কিংবা বাংলাদেশের দিকেই আসে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গে ওই সাইক্লোনের প্রভাব পড়বে।’
এক দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এও জানা যায়, ‘এ বছর আমরা দীর্ঘ শীতকাল পাব। কিন্তু, শীতেও মাঝেমধ্যেই বৃষ্টিপাত হবে। আসলে জলবায়ুর পরিবর্তনের একটি পদ্ধতি এটি। জলচক্র সক্রিয় হয়ে গিয়েছে। যার ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি, এই ধরনের সাইক্লোনের পরিমাণ বাড়তে থাকবে’ ( ভূতত্ত্ববিদ সুজীব করের কথা অনুযায়ী)। এই ভূতত্ত্ববিদ সুজীব এও জানিয়েছেন, ‘ঘোড়ামারা, মৌসুনি দ্বীপের পাশাপাশি পুরো সাগর আইল্যান্ড এভাবেই জলের তলায় তলিয়ে যাবে খুব শীঘ্রই। শুধু তাই নয়, কলকাতা সহ ১২টি শহর ভবিষ্যতে জলের তলায় তলিয়ে যাবে একথা আমরা আগেও বলেছি। জলবায়ুগত পরিবর্তনের কারণে দুটি সাইক্লোন এর মধ্যে যে ব্যবধান থাকতো যে বিরোধী থাকতো সেই পরিমান সেই ব্যবধানটা কমে আসছে। ভবিষ্যতে এই ব্যবধান আরও কমবে সাইক্লোনের সংখ্যা আরও বাড়বে।’