Hoop PlusHoop VideoTollywood

Madhumita Sarcar: ‘শুধু মন নয়, শরীরের দিকেও নজর থাকে পুরুষের’, কঠিন সত্যের মুখোমুখি মধুমিতা

পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীকেই সবকিছুতে দোষী সাব্যস্ত করে বসে। একটু কিছু উনিশ-বিশ হোক, সাথে সাথেই রব উঠবে, “হ্যাঁ মেয়েমানুষ হয়ে এত ওড়া কিসের’? চিরাচরিত বিষয় আর কি। অভিনেত্রী মধুমিতা সরকার এমনটাই সমাজের চোখের সামনে তুলে ধরতে চলেছেন সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বটতলা’ অবলম্বনে জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের নতুন সিরিজ ‘উত্তরণ’-এর মাধ্যমে। একটি মাত্র তুচ্ছ এমএমএস যে কিভাবে একটি ফুলের মত মেয়ের সাজানো-গোছানো জীবনটাকে তছনছ করে দিয়ে যেতে পারে সেটিই দেখবার বিষয়।

‘একটা click-এ পাল্টে গেলো একটা মেয়ের জীবন’- লিখেছেন মধুমিতা। একটি মেয়ে যে তার প্রেমিকের প্রতি ঠিক কতটা সংবেদনশীল থাকলে নিজের সর্বস্ব দিয়ে তাকে ভালোবাসতে পারে, যেখানে সে জানে সম্মানই একমাত্র তার সম্পদ। আর ওই প্রেমিক যেকোনো মুহূর্তে তার সাথে বঞ্চনা করতে পারে। সত্যিই তাই হয়েছে উত্তরণের পর্ণা অর্থাৎ অভিনেত্রী মধুমিতার অজান্তেই ফাঁস হয়ে যায় সেই ভিডিও ফুটেজ। বুঝতেই পারছেন কি ভয়ংকর অবস্থার সম্মুখীন হয় মেয়েটি। সেই অসময়ে তার সবচেয়ে কাছের মানুষ তার মা-বাবা, স্বামী কেউ সঙ্গ দেয় না। বাবা উপরন্ত মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেয়। সবাই ছেড়ে চলে যায়। স্কুলের টিচারের চাকরী-টাও হারিয়ে যায়। একেবারে নিঃস্ব পথিক হয়ে যায় পর্ণা।

ওয়েব সিরিজটির শুরুতেই পর্ণার স্বামীর চরিত্রে অভিনয়কারী রাজদ্বীপ গুপ্ত আকা অভিকে দেখা গিয়েছিল, পর্ণার শরীরের থেকে বেশি ওর মনের দিকে নজর দিতে। যেটা সাধারণত একটি সাধারণ মেয়ের কাছে পরম প্রাপ্তি। মনে হয়েছিল যতই ঝড় আসুক হারিয়ে যেতে দেবেনা অভি পর্ণাকে। কিন্তু শেষ মেষ কি হলো! মেয়েটির জীবন ফুটন্ত গরম জলে টগবগ করে যখন ফুটছে, তাকে বাঁচানোর বদলে ধুলোর মত গা থেকে ঝেড়ে ফেলে দিলো তাকে। ডিভোর্স দিতে হলো পর্ণাকে। তারপর রাস্তা-ঘাটে অভাগীর দিকে উঠেছে আঙুল,বহু ভোগ্যপণ্য হয়ে গেছে সে। ঠিক যেমন, গ্রাম বা শহরতলির অন্যান্য মেয়েগুলোর জীবনে হয়ে থাকে। সবাইকে হারিয়ে শেষমেশ ঠাঁই পায় ‘নির্লজ্জা’ হয়ে।

‘মেয়েরা কি শুধু বহু ভোগের বস্তু?’ শরীরের বাইরে কি কিছুই দেখতে নেই। বিরোধিতা করে গেছেন মধুমিতা বারংবার। তাঁর ছোটো জামা-কাপড় নিয়ে অনেক প্রশ্ন তুলে সমাজ যাচাই করে বলেছে, “সালোয়ার কামিজেই আপনি সুন্দর”। কেন এত যাচাই করা চাই। নারীকে তো মানুষের মতো মানে নিজের মনের মতো করে বাঁচতে দিলেই হয়। বলে বসেছেন মধুমিতা সরকার। বলিউডে,হলিউডে বিশেষত বাইরের দেশগুলিতে এরকম অনেক নায়িকার কিংবা সাধারণ মানুষের গোপন ভিডিও ফাঁস হওয়া সত্ত্বেও তা পাত্তা না দিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই তাঁরা এগিয়ে গেছেন জীবনে। শুধু বাংলা বাদে প্রত্যেকটি জায়গা মানে দেশ হোক বা বিদেশ সব জায়গাতেই নিজের শরীর নিজের দায়িত্ব, কিন্তু বাংলাতে নারীর শরীর সমাজের দায়িত্ব। কিভাবে বাঁচবে সমাজই বলবে। মধুমিতার কথায়, “পর্ণা আমার চোখ ভেজায়নি মনকে ভিজিয়েছে, নিজেকে পর্ণার সাথে অনেক মেলাতে পারছি, বেরিয়ে এসেছি অবশ্য চরিত্র টি থেকে, কিন্তু মনের মণিকোঠায় আটকে থাকবে পর্ণা।” এই সাহসী চরিত্র বাংলার মেয়েদের জীবনকে কিছুটা হলেও প্রভাবিত করবে। হয়ত সাহসের সাথে রুখে দাঁড়াতে শেখাবে।

Related Articles