বিগত পাঁচ দশক ধরে তিনি মুগ্ধ করে আসছেন তার গুণমুগ্ধ শ্রোতাদের। তাঁর মোটা কন্ঠের জন্য তিনি বাদ পড়তে পারেন সঙ্গীতের দুনিয়া থেকে এমনটা বলতেন সমালোচকেরা। কিন্তু সমালোচকদের কথাতে বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে তুড়ি মেরে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন কি পারেন।
তাঁর আত্মজীবনী ‘দ্য কুইন অফ ইন্ডিয়ান পপ’ সম্পর্কে তিনি অভিভূত। তার গানের ক্যারিয়ারের সুবর্ণজয়ন্তী। এর জন্যই তাঁকে সম্মান জানাতে এক প্রকাশনা সংস্থা বার করছেন তাঁর আত্মজীবনী। বিশিষ্ট সাংবাদিক বিকাশ কুমার ঝাঁ হলেন তাঁর আত্মজীবনীকার। তাঁর গানের ধরন, ব্যক্তিগত জীবন এইসব নিয়ে মানুষের উৎকণ্ঠার শেষ নেই।
দীর্ঘ পথ হাঁটতে হাঁটতে তার গানের ক্যারিয়ার আজ এসে দাঁড়িয়েছে পঞ্চাশের নোঙরে। আর তাই স্মৃতি রোমন্থন করতে করতে তাঁর মনে পড়ে যাচ্ছে অনেক ঘটনা। তার স্কুল জীবন থেকে ব্যক্তিগত জীবনে কোন কিছুই বাদ পড়েনি তাঁর জীবনীতে।
তার আত্মজীবনী বানাতে গিয়ে সাংবাদিকদের করতে হয়েছে প্রচুর গবেষণা। তাও ৫০ বছরের কিছুমাত্র অংশই ছুতে পেরেছে বইটি এমনটাই দাবি গায়িকা উষা উত্থুপের।
মুম্বই দক্ষিণ ভারত এবং কলকাতা এই তিন শহরকে রীতিমতো চষে বেড়িয়েছেন তিনি। তাঁর জন্মসূত্রে পরিচয় মুম্বাই-র সঙ্গে কিন্তু তিনি জন্ম পরিচয় একজন মাদ্রাজি। তাঁর ক্যারিয়ারের শুরু হয় নিশিঠেকে। বহু শহরের অভিজাত নাইট ক্লাবে গান গেয়েছেন তিনি। কিন্তু কোথাও অসম্মান পাননি তিনি। কলকাতার মানুষ রীতিমতো তাঁকে দেখে চমকে উঠেছিলেন একজন শাড়ি পরা মহিলা পপ গাইতে পারেন তা তাঁরা বিশ্বাস করে উঠতে পারেননি। তাঁর জন্মভূমি মুম্বই হলেও তাঁর আবেগের টান কলকাতার সঙ্গেই। তিনি প্রথাগতভাবে কোনদিনও গান শিখে উঠতে পারেননি। তবুও তারপরও তিনি মাতিয়ে রেখেছেন দশকের পর দশক দর্শকদের। তিনি তাঁর সীমাবদ্ধতা গুলিকে উন্নতির সোপান বানিয়েছেন।
তিনি আসার আগে কলকাতার নাইট ক্লাবের সংস্কৃতি অন্যরকম ছিল সেখানে পুরুষদেরই আধিপত্য বেশি ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে পটভূমি বদলেছে। তাঁর জীবনে কলকাতা অপরিহার্য এক অঙ্গ। তিনি যতটা আপন করেছেন কলকাতাও কি ঠিক ততটাই আপন কলেছেন তাঁকে? কলকাতা তাঁকে যা দিয়েছে কোনো শহর দিতে পারেন নি। এমনটাই মত তাঁর। এত আরাম তাঁকে কলকাতাই দিতে পারে।
একসময় যতীন চক্রবর্তী তাঁকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। তাঁর মতে তিনি তো কোনো অন্যায় কাজ করেন নি। যদিও সেই অতীতের কথা তিনি এখধ আর তুলতে পছন্দ করেন না।