কেন একে অপরের মুখ দেখেন না কাজল-রানী!
বিখ্যাত মুখোপাধ্যায় পরিবারের দুর্গাপুজোর কথা উঠলে প্রথমেই মাথায় আসে দুটি নাম– রাণী ও কাজল। সম্পর্কে পরিবারের দুই খুড়তুতো বোন। মুখার্জী বাড়ি থেকে সম্পর্ক ছাড়িয়ে বলিউড ইন্ডাস্ট্রির উদ্যানে প্রবেশ করলে দেখা যায় রাণী ও কাজল উভয়ের কেরিয়ারই বেশ উজ্জ্বল। এক সময় শাহরুখ খানের সঙ্গে মানানসই নায়িক এদের মধ্যে কোন জন, তা নিয়ে রীতিমত হত চুলচেরা বিশ্লেষণ।
এর পাশাপাশি একই পরিবারের এই দুই বোনের মধ্যে চলা ঠান্ডা লড়াইয়ের স্নায়ু যুদ্ধও আজ বিনোদন জগতের চায়ের কাপে তুফান তোলে। ইন্ডাস্ট্রিতে উভয়ের পরিচিতি গড়ে ওঠার পরপরই নজরে আসে দুই বোনের পারস্পরিক সম্পর্ক বিশেষ সুখকর নয়। কী কী কারণে তাঁদের দুই বোনের মধ্যে এমন শীতল সম্পর্ক তা নিয়ে অবশ্য প্রকাশ্যে স্পষ্ট ভাবে মুখ খোলেন না কেউই, তবু বিভিন্ন ঘটনাবলী ও পরিস্থিতিকে বিশ্লেষণ করে এঁদের দুই বোনের মধ্যে সম্পর্কের কৃত্রিমতার কিছু কারণ অনুমেয়।
পরিবারে প্রথম থেকেই সম্পত্তি সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে চলা বিবাদের একটি প্রভাব নিশ্চিত ভাবে পড়ে এই দুই বোনের সম্পর্কে। তবে এই বিষয়টি থেকে বেরিয়ে ইন্ডাস্ট্রি ও তাঁদের কেরিয়ার নিয়ে কিছু বিশ্লেষণ লক্ষ্যণীয়। যেমন, যশরাজ ফিল্মসের ব্যাটন যখন যশ চোপড়ার হাতে ছিল তখন কাজল ছিলেন যশের বড় বড় ছবির নায়িকা। ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে যায়েঙ্গে’, ‘ইয়ে দিল লাগি’, ‘ফনা’র মত হিট ছবিতেও ছিলেন কাজল। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় যশ চোপড়ার ছেলে আদিত্য ইন্ডাস্ট্রিতে হাতেখড়ি নিলে। নবাগত রাণীর সঙ্গে আদিত্য চোপড়ার প্রেম সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপরই আদিত্যর চাপে ‘কুছ কুছ হোতা হ্যে’ ছবিতে কাজলের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও কাজ পান রাণী। সুযোগের সদ্ব্যবহারও করেন তিনি। এই ছবিতে ভালো অভিনয় করে ইন্ডাস্ট্রির দৃষ্টিতে নিজেকে প্রকাশ করে নেন রাণী।
অনেকে বলে থাকেন, এরপর আদিত্য চোপড়ার সঙ্গে বিবাহ হলে যশরাজ ফিল্মের দরজা কাজলের জন্য বন্ধ করে দেন রাণী। এরপর যশরাজ শেষ ছবি ‘যব তক হ্যে জান’ ছবির প্রিমিয়ারে আমন্ত্রণ জানানো হয় নি কাজলকে। শুধু তাই না, বিয়ের অনুষ্ঠানে রাণীর কম ঘনিষ্ঠ সেলিব্রিটি তারকাদের দেখা গেলেও রাণী আমন্ত্রণ জানান নি কাজলকে। একটি এওয়ার্ড অনুষ্ঠানে রাণী মুখার্জীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হলে দর্শক আসনে উপস্থিত কাজল স্বামী অজয় দেবগণসমেত অনুষ্ঠানের মাঝ পথেই তড়িঘড়ি বেরিয়ে যান, এমন একটি ভিডিওও প্রকাশ করেন এক সাংবাদিক। প্রকাশ্যে একজনকে অপরজন সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করা হলে তা এড়িয়ে যান অস্বস্তির সঙ্গে।
তবে গত বছর অপ্রত্যাশিত ভাবে মুখার্জি বাড়ির পুজোয় দুই বোনকে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ভাবে ছবি তুলতে দেখা যায়। শুধু তাই নয়, খোশমেজাজে গল্প করতে দেখা যায় একে অপরের সঙ্গেও। এইরকম চমকপ্রদ দৃশ্যের পর জল্পনা শুরু হয় তাহলে কি সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে একে অপরের কাছে নিয়ে আসছে দুই বোনকে!
ইন্ডাস্ট্রির গসিপে যে কোনোরকম সম্পর্কের টানাপোড়েন-ঘাতপ্রতিঘাত বড় স্বাভাবিক। সেই স্বাভাবিকতার সূত্র মাথায় রেখেই মুখার্জি পরিবারের দুই বোন কাজল-রাণীর সম্পর্ককেও ইন্ডাস্ট্রির পেশাদারী সম্পর্ক হিসেবেই দেখা গেলে উপসংহার পাওয়া যায়। আত্মিক আবেগের সম্পর্কের বিশ্লেষণের দায়-দায়িত্ব সংবাদ মাধ্যম না হয় এড়িয়েই গেল!