whatsapp channel

চলন্ত ট্রেনে কাটা পড়েছে শরীরের নীচের অংশ, তবুও মনের জোরে সফল এই যুবক

দেব নামের এই যুবকটি, জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিহারের বেগুসারাই জেলার ঢাকজারি গ্রামে। ছোট ছোট তিন বাচ্চাকে রেখে দেবের বাবা মারা যান, দেবের যখন মাত্র ছয় মাস বয়স। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পরে…

Avatar

HoopHaap Digital Media

দেব নামের এই যুবকটি, জন্মগ্রহণ করেছিলেন বিহারের বেগুসারাই জেলার ঢাকজারি গ্রামে। ছোট ছোট তিন বাচ্চাকে রেখে দেবের বাবা মারা যান, দেবের যখন মাত্র ছয় মাস বয়স। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পরে দেবের বাবা মারা যান। বাবার চিকিৎসায় মায়ের সমস্ত জমানো টাকা খরচ হয়ে যায়। এরপরে তার মা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে তাদেরকে মানুষ করতে থাকেন। কোনদিনই এই যুবকের মা বন্দনা দেবী তার ছেলেমেয়েদের অভুক্ত পেটে রাখেননি। এই সমস্ত পরিস্থিতি দেখে দেব মাত্র পাঁচ বছর বয়স থেকে কাজ করা শুরু করে। মাকে সাহায্য করা থেকে শুরু করে পশুচারণ সবই করেছে সে এতোটুকু বয়সে। পেটের টানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে স্কুল ছাড়তে হয় দেবকে।

২০১৫ সালে ১লা জুন দেব হায়দ্রাবাদে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার এই হায়দ্রাবাদে যাওয়া যে তার পুরো জীবনকে পাল্টে দেবে এটা দেব স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। বারাউনি স্টেশনে ট্রেন ঢুকছে, রেললাইন থেকে ট্রেন মাত্র দশ হাত দূরে। দেব পড়ে গেল রেল লাইনের উপরে। তিনি জানান, “একটি ট্রেন তার কোমরের উপর দিয়ে চলে যাবার পর উঠতে না উঠতেই, আরেকটি ট্রেন চলে যায়। তিন ঘণ্টা ধরে তিনি পড়েছিলেন প্ল্যাটফর্মের ওপরে, কেউ তাকে সাহায্য করেনি তারপরই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সাথে ছিলেন তাঁর এক বন্ধু। হাসপাতালে যাওয়ার পরই ডাক্তারবাবুরা তাকে জানিয়ে দেন তাকে বাঁচানো সম্ভব নয়। কিন্তু তিনি জানান, “ঈশ্বরের কৃপায় তিনি বেঁচে যান এবং শুরু হয় তার এক অন্য জীবন।” তারই অন্য জীবনের শুরুটা হয়েছিল কুরলা স্টেশন থেকে। দিনের পর দিন রাতের পর রাত তিনি স্টেশনে ফুটপাথে কাটিয়েছেন। কারুর কাছে চাকরির জন্য বলতে গেলেই প্রত্যেকে তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে চলে গেছেন। রোজ বান্দ্রা থেকে জুহু যাতায়াত করেছেন এবং সেলিব্রেটিদের বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থেকেছেন একটা কাজের জন্য। নায়ক জ্যাকি শ্রফ এর থেকে তিনি একটি খাম পেয়েছিলেন তার মধ্যে ৫ হাজার টাকা ছিল।

কিছুদিন পর তাঁর সঙ্গে দেখা হয় ফারহা খান আলীর, যিনি একজন অলংকার ডিজাইনার ছিলেন। তিনি এই যুবকটির কাছে ভগবানের মতন এসে সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তৎক্ষণাৎ ১০,০০০ টাকা তার হাতে তুলে দিয়েছিলেন খাবার এবং অন্যান্য খরচের জন্য। আর দেবের যেহেতু হাঁটাচলায় অসুবিধা তাই তিনি তাকে একটি ট্রাইসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন। সেটাকে জানিয়েছিলেন “যতদিন পর্যন্ত আমি বেঁচে থাকব, আমার সাধ্য মতন আমি তোমাকে সাহায্য করবো।” মনের জোরকে সঙ্গে করে নিয়ে দেব তার শরীরের প্রতি যত্ন নেওয়া শুরু করলেন। শরীরকে সুস্থ রাখতে ব্যায়াম করা শুরু করলেন যা তার শরীরকে অনেক বেশি সুঠাম তৈরি করতে সাহায্য করল। India’s Got Talent এই প্রতিযোগিতায় তিনি অডিশনও দিয়ে এসেছেন। শুধু তাই নয় নিজের দ্বাদশ শ্রেণীর পড়াশোনাটাও শেষ করার চেষ্টা করছেন তিনি। তিনি বলেছেন, “ভেঙে পড়া কখনই উচিত নয়। জীবনে চলার পথে অনেক বাঁধা- বিপত্তি আসবেই। সেগুলিকে পাশ কাটিয়ে নয় সেগুলির সামনা সামনি হয়ে মুখোমুখি হয়ে লড়াই করে বাঁচতে হবে। সমস্ত অসুবিধাকে ভাগিয়ে দিতে হবে।”

whatsapp logo
Avatar
HoopHaap Digital Media