Hoop News

স্মার্টফোনের অভাবে বন্ধ অনলাইন ক্লাস, মাইকের মাধ্যমে ছাত্রদের পড়ানোর উদ্যোগ স্কুলশিক্ষকের

ইন্টারনেট পরিষেবার প্রয়োজন নেই, মাইকের সাহায্যে চলছে পড়াশোনা

শহরের বিভিন্ন জায়গাতে শুরু হয়ে গেছে আনলক 1। কিন্তু স্কুল-কলেজ এখনো খোলেনি। বিদ্যালয়গুলিতে পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা হচ্ছে অনলাইনের মাধ্যমে। কিন্তু যেখানে প্রত্যন্ত গ্রাম, হাতে এন্ড্রয়েড ফোন নেই, নেটওয়ার্ক এর কোন ব্যবস্থা নেই, সেখানে শিক্ষার্থীদের কি পড়াশোনা হবে না? এমনিতেই গ্রামের বিদ্যালয়গুলিতে স্কুল ছুটের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। তারপরে লকডাউনের মাঝে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের পড়ানোর জন্য স্কুলের প্রিন্সিপাল একটি অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের একটি বিদ্যালয়ে।

বানকাতি মেজর স্কুলের প্রধান শিক্ষক শ্যাম কিশোর সিং গান্ধী মাইকের মাধ্যমে পড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। স্কুলের চারপাশে বেশ কয়েকটি বড় মাইকের ব্যবস্থা করেছেন। প্রতিদিন দু’ ঘন্টা করে ক্লাস হয়। এপ্রিল মাসের ১৬ তারিখ থেকে ঘটনাটি ঘটছে। মাইকের তলায় ছাত্ররা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কোন গাছের তলায় বসবে, এবং প্রতিটি ক্লাসে তারা মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করবে। যেখানে ছাত্র সংখ্যা বেশি থাকে সেই সমস্ত জায়গাতেই মাইক গুলি রাখা থাকে। ৫ জন শিক্ষিকা এবং দুজন সহ শিক্ষিকা মিলে এই ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ান। গান্ধী জানান, “গোটা বিশ্ব জুড়ে করোনা ভাইরাসের দাপটের জন্য যখন চারিদিকে স্কুল-কলেজ সমস্ত বন্ধ, তখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে কিন্তু এই গ্রামের বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ২৪৬ জন ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে ২০৪ চার জন ছাত্র ছাত্রীর কাছে কোন মোবাইল ফোন নেই।”

মাইকিং এর মাধ্যমে চলছে পড়াশোনা

দুমকা জেলার এডুকেশন অফিসার পুনাম কুমারি জানিয়েছেন, ২৩১৭ টি সরকারি স্কুলে এই পদ্ধতিতে আদর্শ হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাহলে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা করতে এমন বেগ পেতে হয় না। অনলাইন ক্লাস করতে না পেরে অনেক ছাত্র-ছাত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। কেরালার ভালানচেরিতে এই মাসে একজন নবম শ্রেণীর ছাত্রী, যার কাছে কোন রকম অ্যান্ড্রয়েড ফোন ছিলনা, টি.ভি ছিলনা, সে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। এমন অসাধারণ একটি উদ্যোগের জন্য ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ধন্যবাদ জানাতে হয়। অন্তত এর জন্য কোন ছাত্র-ছাত্রীকে আর আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হবে না। বিদ্যালয়ের পড়াশোনাও ঠিকঠাক ভাবে করানো সম্ভব হবে।

ছাত্ররা মাইকিং শুনে পড়াশোনা করছে

Related Articles