Fishery: বাড়ির চৌবাচ্চায় জিওল মাছ চাষ করে লাখপতি ভাঙড়ের গৃহবধূ!
কথায় আছে, ‘যে নারী রাঁধে সে চুল বাঁধে’, সত্যিই তাই আমাদের ঘরে ঘরে যে সমস্ত নারীরা রয়েছেন তারা প্রত্যেকেই মা দুর্গার এক অন্যতম রূপ। দশ হাতে সংসার স্বামী, সন্তান এবং সাথে সাথে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য কাজ করে চলেছেন। নিজের পায়ে দাঁড়াতে গেলে সব সময় যে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বাসে, ট্রেনে ছুটে গিয়ে চাকরি করতে হয় এমনটা নয়, ঘরে বসেও বুদ্ধি খাটিয়ে পরিশ্রম করে নিজের পায়ে দাঁড়ানো যায়। তা প্রমাণ করে দিয়েছেনবাংলার কুলবেড়িয়া গ্রামের এক গৃহবধূ।
চাষ করছেন জিওল মাছের। আর ইতিমধ্যেই লাখপতি হয়ে গেছেন তিনি তবে মাছ চাষ করার জন্য তিনি কোনো রকম পুকুরকে বেছে নেননি। বাড়িতে চৌবাচ্চায় চাষ করছেন হাজার হাজার টাকার জিওল মাছ। কৈ, মাগুর প্রভৃতি জিওল মাছের পাশাপাশি পাবদা, তেলাপিয়া, রুই কাতলা চাষ করা যায় অনায়াসে। বাড়িতে সমস্ত কাজ সামলে এই মাছ চাষকে আপন করে নিয়েছেন তিনি।
তার এই অসাধারণ মৎস্যচাষ দেখে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও বেশ খুশি হয়েছেন। তার এই উদ্যোগকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ভাঙ্গড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও কৌশিক কুমার মাইতি বলেছেন বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার জন্য সবরকম সহযোগিতা করছে সরকার। যেহেতু অল্প জলের মধ্যে অনেক মাছ থাকে তাই জলের মধ্যে অক্সিজেন দিতে হয় অক্সিজেনের মধ্যে মাছেরা খুব সহজেই বেড়ে ওঠে। কয়েক ঘন্টা অন্তর অন্তর এর মধ্যে খাবার দিতে হয়। উপযুক্ত খাবার পেলে মাত্র দুই মাসেই একটি জিওল মাছ পাঁচ গ্রাম থেকে একশো গ্রাম ওজনের হয়ে যায়। সেটা বিক্রি করলে মোটা টাকা পাওয়া যায়।
আগে কলকাতা বিমানবন্দরে চাকরি করতেন। কিন্তু বর্তমানে সেই চাকরি ছেড়ে বাড়িতে মাছ চাষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কুলবাড়িয়া গ্রামের গৃহবধূ পায়েল মৃধা। পায়েল জানিয়েছেন, ইউটিউবেই না ভিডিও দেখে তিনি প্রেরণা পান। স্বামী-স্ত্রী দুজনে মিলে নদীয়ার শান্তিপুরে গিয়ে মাছ চাষ করার প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন তারপরে শাশুড়ির সহযোগিতায় তিনি শুরু করেন এই চাষ। মাত্র আট মাস হয়েছে তিনি এই মাছের চাষ করছেন। গৃহস্থালির হাজারো কাজের মধ্যে দিয়েও তিনি বাড়িতে মাছ চাষ করে লাখপতি হতে পেরেছেন। পায়েলের মতন মেয়েরা শুধুমাত্র ভাঙ্গড়ে না গোটা দুনিয়ার কাছে এক আদর্শ নারী হতে পারে। কিভাবে সংসার সামনেও নিজের পায়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দাঁড়ানো যায় তার প্রমাণ দিয়েছে পায়েল।