সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়, একটা সময় বাংলা সিনেমাপ্রেমীরা এনাকে দেখলে ভয় পেত। নাম সুমিত হলেও মোটেও তিনি সুবিধার পাত্র ছিলেন না বড় পর্দায়। ঐরকম ঘোলাটে চোখ, দানবের মতন শরীর দেখে বাচ্চারা যেমন ভয় পেত বাড়ির মা বউরা বুঝে যেত এই হল সেই সর্বনেশে যে কিনা হিরোইনের মান ইজ্জত লুণ্ঠন করবে। হ্যাঁ, সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়, পর্দায় এরকমই ভয়ঙ্কর একটি চরিত্র ছিলেন যে তাকে নেগেটিভ রোল ছাড়া অন্য কিছুতে দেওয়াই হয়নি। যতদিন বাংলা সিনেমা তিনি করেছেন ঐরকম নেগেটিভ পার্ট করে গিয়েছেন।
কিছুদিন আগে এই সুমিত বাবু প্রশ্ন রাখেন সোশ্যাল মিডিয়ায় – দর্শকদের মনোরঞ্জনের জন্য চলে বিনোদন, কিন্তু যারা নিয়মিত মনোরঞ্জন করে চলেছেন ছোট ও বড় পর্দায় তাদের খবর কেউ কি রাখে? বাংলা সিনেমার বেহাল অবস্থা ও কলা কুশলীদের পকেট গড়ের মাঠ নিয়েই অনুশোচনা করেন তিনি। কাজ চাই বলে দাবীও জানান তিনি। এক সেই ব্যাক্তিই করোনা কালে মাস্ক নিয়ে অদ্ভুত বিবৃতি দিলেন সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায়। কি সেই বিবৃতি?
বাংলা সিনেমার এই খলনায়কের কথায়, করোনা হল একটি বুদ্ধিদীপ্ত অর্থাৎ intellectual ভাইরাস। এই ভাইরাসের দূরদর্শিতা তিনি তুলে ধরেছেন তার কলমে। কিভাবে এলো, কিভাবে ভাইরাস ঘুরছে, কিভাবে পালাচ্ছে এই নিয়েই কলম ধরেন তিনি। চলুন পড়ে দেখি সুমিত বাবুর ভাষাতে বাকিটা।
“এত intellectual ভাইরাস আগে হয়ত আসেনি।
প্রথমে বয়স্ক, তারপর যুবককে, তারপর বাচ্ছাদের। একটা শৃঙ্খলা মেনে এগোচ্ছে। সে জানতো যে টিকা আসছে সেইজন্য সে ডেল্টা রূপে পালিয়ে গেল। অদ্ভুত দূরদর্শিতার পরিচয়। যে সময় lockdown চলছে শুধুমাত্র সেই সময়েই সে ঘুরতে বা শিকার করতে বেরোবে। যেমন রাত 9 তা থেকে 5 । অদ্ভুত ভাবে disciplined.
Train সে খুবই ভালোবাসে। বাস বা অন্য public ট্রান্সপোর্ট সে পছন্দ করে না। হতেই পারে ..virus বলে কি তার ইচ্ছে থাকতে পারে না? Virus কিন্তু চাইলেই মাস্কের মধ্যে দিয়ে ঢুকে পড়তে পারে, কিন্তু না। কানে ঝুলিয়ে রেখে সম্মান টুকু দিলেই করোনা খুশি। প্রচন্ড আত্মসম্মানি জীবাণু। আপনি রেঁস্তোরাতে মাস্ক পরে ঢুকবেন এবং অবশ্যই আশা করি মাস্ক খুলেই খাবেন, সেই টুকু সময় ও আপনাকে আক্রমণ করবে না। virus বলে কি প্রাণে মায়া নেই??? Virus পরীক্ষা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুব পছন্দ করে। হয়তো অতৃপ্ত কোনো বাসনা ছিল। কিন্তু যুব আন্দোলন সমর্থন করেন সেই জন্য ফেল করা ছাত্র ছাত্রীদের তিনি ছাড় দিয়েছেন। বিপ্লবী মন থাকতেই পারে। ও জানে যে রাজনৈতিক কোনো জায়গায় সেরকম ভাবে তার উপস্থিতি গ্রাহ্য হয় না। সেই জন্য সে মিটিং মিছিল থেকে দূরে থাকে। মর্যাদা পালন করে থাকে ভোটের আগে। জীবানু বদ অভ্যেস একদম পছন্দ করে না। মদ বা মদের দোকান থেকে সে দুরেই থাকে। মানুষ না বুঝলেও সে বোঝে মদ্যপান স্বাস্থের জন্য হানিকারক।
যত বলা যায় তত কম এই জীবাণুর প্রতিভার বিষয়ে। আমি মুগ্ধ।”