অজয়ের বদলে শাহরুখকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন কাজল!
নব্বইয়ের দশকে বলিউডের সেরা রোমান্টিক জুটি বলা হত শাহরুখ খান ও কাজলকে। ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে যায়েঙ্গে’, ‘বাজিগর’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যে’, ‘কভি খুশি কভি গম’, ‘করণ-অর্জুন’ এর মত হিট ছবি করে একসময় প্রেমী হৃদয়ে আবেগের তুফান তুলেছিলেন এই জুটি। একটা সময় জল্পনা চলত, পর্দার রোমান্টিক প্রেমের সঙ্গে সঙ্গে কি বাস্তব জীবনেও তৈরি হয়েছে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক? আসলে ক্যামেরার সামনেও উভয়ের প্রতি উভয়ের দিলখোলা মনোভাব ও ঘনিষ্ঠতা এই জল্পনা উশকে দিয়েছিল।
এই নিয়ে কাজলের স্বামী অজয় দেবগণ কিছুটা রুষ্ট হয়ে পড়লে শাহরুখের সঙ্গে কাজলকে বেশ কিছু বছর দূরত্ব রাখতে হয়, বন্ধ করে দিতে হয় একসঙ্গে ছবি করাও। যদিও পরে প্রকাশিত হয় শাহরুখ-কাজলের প্রেমের সম্পর্ক গুজব ছাড়া কিছুই ছিল না। এরপর পর ‘মাই নেম ইস খান’ করেন দুজনে। আপাতত শেষ ছবি ‘দিলওয়ালে’তে পুনরায় দর্শকদের মন জিতে নিয়েছিল নব্বইয়ের এই সুপারহিট জোড়ি। কিন্তু শাহরুখ-কাজলের সম্পর্ক কি সত্যিই ছিল শুধুমাত্র বন্ধুত্বের? কখনোই কি আসে নি একের অপরের প্রতি প্রেমের আকর্ষণ? কিছু বিশ্লেষণ রাখা হল বিনোদনপ্রেমীদের জন্য।
বস্তুত, রিল থেকে রিয়েল লাইফে শাহরুখ-কাজল ভালোবাসার সম্পর্কের জল্পনা যে সবটুকুই গুজব থেকে সৃষ্টি, তা মনে করলে প্রমাদ গুনতে হবেই। স্মরণ করা যাক কিছু ঘটনা।
২০০০ সালে ‘জোশ’ ছবিতে কাজলকে শাহরুখের বোনের ভূমিকায় অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হলে কাজল সরাসরি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে জানান তিনি শাহরুখের বোন হতে চান না। তখন থেকেই একটা সন্দেহ হয়, কাজল কি তাহলে পচন্দ করেন কিং খানকে! এরপর একটি শো’য়ের অনুষ্ঠানে দেখা যায় দর্শকদের মধ্য থেকে একজনকে কাজলকে I love you বলতে। সকলে এই ঘটনায় হেসে উঠলেও শাহরুখও মুচকি হেসে মন্তব্য করেন– এই ঘরে একমাত্র আমিই কাজলকে ভালোবাসি।
এরপর আসে সেই মহামুহূর্তের কথা, যেখানে একটি সাক্ষাৎকারে কাজলকে প্রশ্ন করা হয়,’আপনার সঙ্গে অজয় দেবগণের বিয়ে না হলে আপনি কি শাহরুখ খানকে বিয়ে করতেন?’ উত্তরে হ্যাঁ বা না বলে কাজল পাল্টা প্রশ্ন ছোঁড়েন–‘মানুষের কি প্রেম প্রস্তাব দেওয়া উচিত না?’ তাঁর এই তাৎপর্যপূর্ণ বক্তব্য থেকে অনেকেই মনে করেন কাজল বলতে চেয়েছেন যে শাহরুখ তাঁকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে কাজল শাহরুখকেই বিয়ে করতেন।
অবশ্য এই ঘটনগুলির পাশাপাশি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাও নজরে রাখতে হবে। ইন্ডাস্ট্রিতে পা শক্ত করার আগেই ১৯৯১ সালে শাহরুখ বিয়ে করে নেন গৌরীকে। সেই সঙ্গে শাহরুখের স্ত্রীয়ের সঙ্গে প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে কখনোই কোনোরকম মতবিরোধ দেখা যায় নি। বরং উভয়ের দাম্পত্যজীবন যথেষ্ট সুখের। এই কারণে শাহরুখ-কাজলের একে অপরের প্রতি কোনোরকম প্রেমের আবেগ থেকে থাকলেও সেই প্রেম বিয়েতে পূর্ণতা পেতে পারত এই সম্ভাবনার কল্পনা করাও ছিল বেশ কঠিন।
শাহরুখ-কাজল জুটি নব্বই থেকে ২০০০ এর শুরু পর্যন্ত প্রেমের কাঙাল মনগুলিকে করে তুলেছিল আবেগপ্রবণ। রোমান্টিকতার পারদ চড়িয়েছিল অভিনয়ের জগতে। তাই, এদের দুজনের সম্পর্ক নিছক বন্ধুত্বের থাক কি প্রেমের, তার তুল্যমূল্য নির্ধারণ করার প্রয়োজন হয়ত পড়েই না কারণ, কোনো কোনো বন্ধুত্বের মূল গভীরতর হয়ে থাকে। আবার কোনো কোনো প্রেম পায় না পূর্ণতা।