Hoop Meet

আমি ওই নেপোটিজম শব্দটিতে বিশ্বাসী নই: অংশু বাচ Exclusive Interview

‘বন্ধন’ কিংবা ‘রাজু আঙ্কেল’ সিনেমার সেই ছোট্ট মিষ্টি দেখতে ছেলেটাকে মনে পড়ে? যার মিষ্টি হাসিতে দর্শক থেকে টলিপাড়া একসময় সকলেই মনমুগ্ধ। সেই মাস্টার অংশু বা আজকের অভিনেতা অংশু বাচ এখন কি করছেন? তারই সঙ্গে পুজোর আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন আমাদের সংবাদ প্রতিনিধি কৌশিক পোল্ল্যে।

এই করোনা মরশুমে কেমন আছেন?

– এই করোনা মরশুমে ভালো আছি এখন। আর পজিটিভ থাকার চেষ্টা করছি।

বর্তমানে কি কাজ করছেন?

– এখন আমার দুটো মিউজিক ভিডিও রিলিজের অপেক্ষা করছি। একটা শর্ট ফিল্মসের রিলিজের অপেক্ষা করছি, এছাড়াও একটা ফিচার ফিল্ম করেছি সেটার ডাবিং আর পোস্ট প্রোডাকশনের অপেক্ষায় আছি, এগুলোই চলছে আপাতত।

মাঝে এতখানি লম্বা বিরতি কেন?

– হ্যাঁ ৬ বছরের বিরতি ছিল। সেইসময় আমি ও আমার পরিবার ঠিক করেছিলাম আগে আমার পড়াশোনা শেষ করে নেব তারপর মন দিয়ে কাজে ফিরবো। ওই সময়টায় আমি যে বয়সের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম সেই বয়সের চরিত্র এখন থাকলেও সেই সময় খুব একটা ছিল না। তাই বিরতির এটাও একটা কারণ।

এখন তো ইন্ডাস্ট্রিতে কামব্যাক করলেন,আবার আগের মতো ওয়েলকাম পাচ্ছেন নাকি স্ট্রাগল করতে হচ্ছে?

– স্ট্রাগল তো অবশ্যই আছে, হ্যাঁ তবে আগের মতো ওয়েলকাম পাচ্ছি। প্রত্যেকের জীবনেই একটা স্ট্রাগল থাকে। হ্যাঁ আমি ছোটবেলায় বুঝিনি স্ট্রাগেল কি কিন্তু এখন সেটা ভালো ভাবে বুঝতে পারছি। আগের মতো এখন সিনেমাতেই অভিনয় জীবন বাঁধা নেই। এখন অনেক রকম প্ল্যাটফর্ম হয়ে। কিন্তু আমি এটাকে স্ট্রাগেল হিসেবে না নিয়ে মনে করি যেন আমারই জীবনের জার্নি শুরু হয়ে গিয়েছে। বড় কিছু পেতে গেলে একটু তো কষ্ট করতে হবে সেটা স্বাভাবিক।

যখন ছোট ছিলেন তখন একরকম চরিত্রে কাজ করছিলেন। বর্তমানে সেই ইমেজ ভেঙে অন্য চরিত্রে অভিনয় করা কতখানি ডিফিকাল্ট?

– অনেকটাই ডিফিকাল্ট ছোটবেলার চরিত্রের থেকে বর্তমানের চরিত্রগুলো। ছোটবেলায় যে চরিত্রগুলো পেয়েছি সেগুলোতে এক্সপেরিমেন্ট করার সুযোগ ছিলনা। এখন তা আছে। ছোটবেলায় আমাকে সবাই কিউট এন্ড সুইট বাচ্চা হিসেবে দেখেছে। এখন আমাকে সব রকম চরিত্রে অভিনয় করতে হচ্ছে। অভিনেতা হিসেবে আমি ওই চেনা ছক ভাঙার চেষ্টা করছি। কখনো ভালো কখনো খারাপ চরিত্রে অভিনয় করছি। বড়ো হয়ে আমার প্রথম সিনেমা ছিল ‘ইংলিশ Vs ইংলিশ’ যেটি একটা থ্রিলার, তারপর ওয়েব সিরিজ ‘মনসুন ম্যালেডি’ যেটা একেবারে অন্য ধাঁচের ছিল। অন্যদিকে আরো একটি শর্ট ফিল্মস করেছি ‘টেক কেয়ার’ যার ভিউজ ইতিমধ্যেই ১০ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে। এইভাবেই একটার পর একটা প্রজেক্ট চলছে।

ভবিষ্যতে কি কি প্ল্যান রয়েছে?

– যত কাজ বাড়বে ততই প্ল্যানস বাড়বে। আগেই বললাম ২টো কাজ হয়ে গেছে, সেগুলো মুক্তির অপেক্ষায়। একটা হিন্দি মিউজিক ভিডিও ও একটি বাংলা শর্ট ফিল্ম মুক্তির অপেক্ষায়। এরপর দেখা যাক কতদূর কি হয়।

যে সময় কর্মাশিয়াল ছবিতে কাজ করতেন তখনকার ইন্ডাস্ট্রি আর বর্তমান ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে কি পার্থক্য?

-আগে সিনেমায় কাজ হত এখন ডিজিটাল ওয়েতেও কাজ হয়। পার্থক্য তো আছেই। কাজের ক্ষেত্রে বেশ পার্থক্য আছে। আগের থেকে এখন কাজ খুবই সিস্টেমেটিক ওয়েতে হয়ে গেছে। আর এখন আগের থেকে প্রতিযোগিতা বেড়ে গেছে। আগে যেমন ছবি হলে মুক্তি পেত এখন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমা, ওয়েব সিরিজ সমানতালে মুক্তি পাচ্ছে। এখন ডিজিটালি সব কাজ হয়। চেঞ্জ তো হতেই থাকবে তবে সেই চেঞ্জে আমার কোনো অসুবিধা নেই।

নেপোটিজম ফেস করেছেন কখনো?

– আমি ওই নেপোটিজম শব্দটিতে বিশ্বাসী নই। নেপোটিজম, ফেভারিটিজম সব জায়গায় আছে। আমি যে ডিরেক্টরের সঙ্গে কাজ করছি তার আমার কাজ ভালো লাগলে সেই তো পরেরবার আমাকে নেবে, এটা খুবই স্বাভাবিক। আমি নিজের মতো কাজ করার চেষ্টা করছি। বলিউডে যেমন স্টারকিডদের বাবা মায়েরা একদিন খেটে এই জায়গা তৈরি করেছিল বলেই আজ সেখানে তারা তাদের পরিশ্রম দিয়ে থাকতে পারছে। নেপোটিজমের জন্য কেউ হয়তো দু একটা কাজ পেতেই পারে কিন্তু প্রকৃত ট্যালেন্ট না থাকলে কেউ এগোতে পারে না আর আমি মনে করি নেপোটিজম খুব নেগেটিভ জিনিস, এটা নিয়ে ভাবতে শুরু করলে আর কাজ করতে পারবো না।

অবসর সময়ে কি করতে ভালোবাসেন?

-আমি ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসি। কোভিডের জন্য ক্রিকেট খেলা কম হলেও খেলতে দেখতে ভালোবাসি। আর সিনেমা দেখতে তো ভীষণ ভালোবাসি, পুরো লকডাউন বসে ওটাই করেছি। সিনেমা, গান আর পরিবারকে সময় দেওয়া এই কয়েকটা জিনিস নিয়েই থাকি। মাঝে বন্ধুরা মিলে খেলে একটা টুর্নামেন্টও জিতেছি।

কর্মাশিয়াল সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ পেলে কার সঙ্গে কাজ করতে চাইবেন আপনার বিপরীতে মিমি, নুসরত না শুভশ্রী?

– সবার সঙ্গে। তিনজনেই আমার খুব পছন্দের। কি করে বলি এটা। এটা খুবই ডিফিকাল্ট। আমি শুভশ্রীকে একটু ভালোভাবে চিনি তবে আই উড লভ টু ওয়ার্ক উইথ অল অফ দেম।

চলুন একটা র‍্যাপিড ফায়ার খেলা যাক।
সিনেমা না ওয়েব সিরিজ

– সিনেমা, এনিটাইম সিনেমা।

কমার্শিয়াল ফিল্ম না আর্ট ফিল্ম

– আর্ট ফিল্ম বলে কিছু হয়না লাস্ট পাঁচ বছরে ওই জিনিসটাই সরে গিয়েছে। এটা খুব একটা বাজে টার্ম যেটা আমরাই বানিয়েছি। প্রত্যেকটা ছবিই কমার্শিয়াল কারণ প্রডিউসার যখন খরচা করে সে আশা করে আমার টাকাটা যেন উঠে যায়।

জিৎ না প্রসেনজিৎ

– এটা বলা খুবই ডিফিকাল্ট। আমি জিতু আঙ্কেলের সঙ্গে পাঁচটা কাজ করেছি, বুম্বা আঙ্কেলের সঙ্গে আটটা কাজ করেছি। তবে আমি যদি দর্শকের প্রতিক্রিয়া থেকে বলি তাহলে অবশ্যই জিতু আঙ্কেল কারণ অনেকগুলো বড় বড় হিট ওনার সঙ্গে তো সেটা বলাই যায়। আবার বুম্বা আঙ্কেলের সঙ্গে ‘রাজু আঙ্কেল’‌ ছবিতে কাজ করে ‘বেস্ট চাইল্ড অ্যাক্টর’ অ্যাওয়ার্ড পাই।

এবারের নিউ নর্মাল পুজোতে কি প্ল্যান রয়েছে?

– এবারের প্ল্যান বাড়িতে থাকা। এক্সেসাইজ করা, ভালো করে খাওয়া, ওয়ার্কআউট করা। এমনিতেও খুব একটা প্যান্ডেল হপিং এর প্ল্যান নই। মোস্টলি খেয়ে দেয়ে আর কাজিনদের সঙ্গে আড্ডা মেরে কেটে যায়।

ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।

-হ্যাঁ তুমিও ভালো থেকো।

whatsapp logo