রথযাত্রা বাঙালির তেরো পার্বণের অন্যতম। এদিন মা দুর্গার কাঠামোয় পড়বে মাটির প্রলেপ। কিন্তু রথযাত্রার আনন্দ লুকিয়ে আছে রথের রশি ছাড়াও রথের মেলায়। ‘রথের মেলা’ কথাটির সঙ্গেই জড়িয়ে আছে শৈশবের নস্টালজিয়া। রথের মেলা মানেই গরম জিলিপি ও পাঁপড়ভাজার গন্ধ। ইদানিং কালে প্লাস্টিকের খেলনার পশরা বসলেও অপরাজিতা আঢ্য (Aparajita Adhya)-র মেয়েবেলায় কিন্তু মাটির পুতুল ও খেলনা হাঁড়ি-কড়া বিক্রি হত রথের মেলায়। ছোট মেয়েদের ভিড় থাকত সেই ছোট্ট গেরস্তালি ঘিরে। কিন্তু রথের মেলার ভিড় সত্যিই ভয়ঙ্কর। ছুটির দিনে সেই ভিড় সেদিনও বাড়ত, আজও বাড়ে। অপরাজিতা ছোটবেলায় একবার পার্ক সার্কাস ময়দানের বিখ্যাত রথের মেলায় গিয়েছিলেন। কিন্তু আনন্দে নিমেষে পরিণত হয়েছিল ভয়ানক পরিস্থিতিতে।
সেই সময় অপরাজিতার বয়স ছিল মাত্র দুই বছর। সবে টলমল করে হাঁটতে শিখেছেন তিনি। মা ও জেঠিমার হাত ধরে গিয়েছিলেন রথের মেলায়। সঙ্গী ছিলেন তাঁর দাদা। তিনিও তখন খুদে। বাড়ি থেকে মা ও জেঠিমা ঠিক করে বেরিয়েছিলেন, অপরাজিতার প্রতি লক্ষ্য রাখবেন তাঁর মা ও দাদাকে দেখবেন জেঠিমা। অপরাজিতার মা তাঁকে কোল থেকে নামিয়ে পাশে একটি স্থানে বসিয়ে মাটির পুতুল দেখছিলেন। হঠাৎই অপরাজিতার একরত্তি দাদার চোখে পড়ে এক অদ্ভুত ঘটনা।
View this post on Instagram
তাঁর দাদা দেখেন, অপরাজিতাকে নিয়ে চলে যাচ্ছে একটি অচেনা লোক। মা ওদিকে মাটির পুতুলের দরদাম করতে এতটাই মগ্ন, খেয়াল করেননি ঘটনাটি। অপরাজিতার দাদা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁদের বড়মা অর্থাৎ জেঠিমাকে বলে, বোনকে কে যেন নিয়ে চলে যাচ্ছে। এরপরেই অপরাজিতার জেঠিমা লোকটিকে গিয়ে ধরে ফেলেন। তিনি চিৎকার করতে করতেই ওই লোকটি অপরাজিতাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে উধাও হয়ে যায়। কিন্তু এরপর ঘটে আরেকটি ঘটনা।
ছোট্ট অপরাজিতাকে সেই মেলা থেকেই কিনে দেওয়া হয় একটি ছোট্ট রথ যা বিয়ের পর নিজের সাথে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে এসেছেন অপরাজিতা। আজও প্রতি বছর রথযাত্রায় সেই রথকে সাজিয়ে তোলেন তিনি।
View this post on Instagram