গত ২৩ আগস্টে চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিল বিক্রম। চাঁদের অন্ধকারাচ্ছন্ন দক্ষিণ মেরুতে তৈরি হয়েছিল ইতিহাস। পরে তার পেটের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে প্রজ্ঞান। প্রজ্ঞানের চাকায় লাগানো বিশেষ প্রযুক্তির মাধ্যমে চাঁদের বুকে এঁকে দেওয়া হয় ভারতের জাতীয় প্রতীক- অশোক স্তম্ভ। তারপরেই কাজে লেগে পড়ে দুই বন্ধু। চাঁদের বুকে একাধিক গবেষণা চালায় বিক্রম ও প্রজ্ঞান। আর তাদের কাজ ও অবদান আজ কারো কাছেই অজানা কোনো বিষয় নয়। তাই আমরা সেই নিয়ে আলোচনা করবো না বিশেষ। এই প্রতিবেদনে আলোচনা হবে এক অন্য বিষয়কে নিয়ে।
চাঁদের বুকে এক চন্দ্রদিবক্সের অর্ধেক সময় ধরে নানা গবেষণা করেছে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার ও রোভার। চাঁদের বুকে বরফের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া থেকে চাঁদের মাটিতে মিশে থাকা নানা খনিজের সন্ধান দিতে চলে পরীক্ষা নিরীক্ষা। কিন্তু চাঁদের এই কুমেরুতে সূর্যাস্ত নেমে আসার পরই ঘুমিয়ে পড়ে দুই দোসর। তারপর থেকে একাধিকবার সেখানে সূর্যোদয় ঘটলেও প্রবল ঠান্ডা থেকে আর আড়মোড়া ভেঙে উঠতে পারেনি এই দুই যন্ত্র গবেষক। কিন্তু তাতেও আফসোস নেই ভারতীয় মখাকাশ গবেষণা সংস্থার। কারণ যেমনটা আশা করা হয়েছিল, তার থেকেও বেশী কাজ করেছে প্রজ্ঞান ও বিক্রম।
তবে এখন এই চন্দ্রযান-৩- কে ঘিরে এল এক চমকপ্রদ তথ্য। আর এই তথ্য প্রকাশ করে সকলকে রীতিমতো চমকে দিলো ইসরো। এতদিন হয়তো অনেকেই জানতেন না যে ভারতের এই চন্দ্রজানে ব্যবহার করা হয়েছিল পারমাণবিক শক্তি। আর এমনটা করে ভবিষ্যতে গবেষণার পথ সুগম করেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। সম্প্রতি জানা গেছে, চন্দ্রযান-৩-এর প্রপালশন মডিউলে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল। আর এর জন্য ISRO ও বার্ক একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল। আর এমনটা করে ভবিষ্যতে চাঁদের বুকে বা মহাকাশে পারমাণবিক শক্তিকে নিয়ে গবেষণা করার নতুন পথ খুলে যাবে বলে ধারণা ভারতের বিজ্ঞানীদের।
এটি ছাড়াও সম্প্রতি এই বিষয়ে আরেক চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। সম্প্রতি ইসর জানায় যে গত ২৩ অক্টোবর অবতরণের সময় চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডার চন্দ্রপৃষ্ঠের বিভিন্ন বস্তু উড়িয়ে সুদৃশ ‘ইজেক্টা হ্যালো’ তৈরি করেছিল। ন্যাশনাল রিমোট সেনসিং সেন্টার-এর বিজ্ঞানীদের ধারণা, অবতরণের সময় ১০৮.৫ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে ২.০৬ টন চাঁদের রেগোলিথ উড়িয়েছিল ল্যান্ডার। এই ঘটনা ধরার জন্য চন্দ্রযান-২-এর কক্ষপথে বসানো অরবিটার হাই রেজোলিউশন ক্যামেরা-র তোলা ছবির উপর নির্ভর করে রয়েছেন বিজ্ঞানীরা।