গলা অবধি দেনায় ডুবে গিয়েও শুধুমাত্র বাঁশ চাষ করেই আজ কোটিপতি এই ব্যক্তি
একটা সময় দেনার দায় গলা পর্যন্ত ডুবেছিলেন যে মানুষটা সেই মানুষটাই এখন কোটিপতি। না হঠাৎ করে কোন লটারিতে কোটিপতি তিনি হননি। রীতিমতো কায়িক পরিশ্রম করে এবং মাথা থেকে বুদ্ধি খাটিয়ে তিনি আজ একজন সফল বাঁশের ব্যবসায়ী। শুধুমাত্র এটি নয়, এছাড়াও তার চাষের জমিতে ফলে নানান রকমের ফল, সবজি ইত্যাদি সমস্ত বিক্রি করে তার বছরে আয় প্রায় এক কোটি টাকা। ‘রাজশেখর পাতিল বাম্বু’ নামে তার একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে।
প্রথমে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় তিনি চাকরি করতে থাকেন সেখানে মাসের বেতন ছিল দুই হাজার টাকা করে। অবশ্য সেই বেতন খানিকটা বেড়ে ছয় হাজার টাকা হয়। পরবর্তীকালে সংসারের হাল সামলাতে তাকে হিমশিম খেতে হয়। এই কটা টাকা দিয়ে সংসার চলছিল না। অন্যান্য সবজির ফলন করেও তিনি খুব বেশি টাকা রোজগার করতে পারছিলেন না। কিন্তু জীবনের এক অদ্ভুত রকম পরিবর্তন এসেছিল ২০০২ সালে। তিনি যে গ্রামে থাকতেন সেই গ্রামেরই এক চাষী বাঁশ চাষ করতে শুরু করেছিলে। তবে, তিনি বাঁশ গাছ কেনার মতন তেমন ক্রেতা না পেয়ে সেই জন্য জমি থেকে সমস্ত গাছ উপড়ে তুলে ফেলছিলেন। রাজ শেখর বাবু তার কাছ থেকে সমস্ত গাছ নিয়ে এসে নতুন করে বপন করেন। যদিও চাষ করার উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি এই গাছগুলো বসাননি। গাছ বাড়ির চারপাশে বেড়া দেবেন বলে গাছগুলো লাগিয়ে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি এই কাজকেই ব্যবসার কাজে লাগান। আস্তে আস্তে ব্যবসা বৃদ্ধি পেতে লাগলো। সংসারের হাল ফিরে এলো
বর্তমানে তার ইউটিউবে ফলোয়ার প্রায় আট হাজার। তবে এত সাফল্য কখনোই খুব সহজভাবে আসেনি একটা সময় প্রত্যেকেই তাকে খুব অবহেলা করত তার এই ব্যবসা নিয়ে তাকে ঠাট্টা তামাশা করত। এমনকি একজন ব্যর্থ মানুষ হিসাবে তাকে সমানে অপমান করে যেতেন আর পাঁচটা লোক। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতিটা পুরোটাই পাল্টে গেছে। তিনি গোটা ভারত বর্ষ ঘুরে ঘুরে নানান প্রজাতির বাঁশ গাছের চারা সংগ্রহ করেছেন। এত সময় পর তিনি নিজে বুঝতে পেরেছেন যে গাছ চাষ করা কতটা লাভজনক। এখন গোটা গ্রামবাসীরা তার কাছে আসে স্বনির্ভর হওয়ার জন্য বাঁশ চাষের পাঠ নিতে।
বর্তমানে পরিবেশ বান্ধব উপাদান হিসাবে বাস অনেক বেশি মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে। শহর থেকে গ্রামাঞ্চল ঘর সাজানোর বস্তু হিসেবে বাঁশের জুড়ি মেলা ভার। সেই জন্য রাজশেখর এর মত প্রত্যেকটা মানুষের উচিত এই বাঁশ শিল্পকে বজায় রাখার জন্য, বাঁশ চাষের ক্ষেত্রে এগিয়ে আসা। নিজে স্বনির্ভর হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশকেও অনেকটা প্লাস্টিক বর্জিত পদার্থ সরবরাহ করা যেতে পারে এই বাঁশ চাষের মাধ্যমে।