৫১ সতীপীঠের মধ্যে এক অন্যতম বেহুলা সতীপীঠ, জেনে নিন এই সতীপীঠের রহস্য
পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামে অজয় নদীর তীরে অবস্থিত বেহুলা সতীপীঠ। ৫১ সতী পীঠের মধ্যে এটি অন্যতম সতীপীঠ। পৌরাণিক কাহিনী থেকে জানা যায়, এখানে সতীর বাঁ হাত পড়েছিল। এখানে অধিষ্ঠিত দেবীরা হলেন বহুলা এবং ভৈরব ভীরুক। পৌরাণিক কাহিনী থেকে জানা যায়, মা সতী নিজের বাপের বাড়িতে স্বামীর অপমান সহ্য করতে পারেননি, তাই তিনি সেখানেই দেহত্যাগ করেন।
মা সতীর দেহত্যাগ এর খবর পেয়ে মহাদেব ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে সতীর দেহকে কাঁধে নিয়ে তান্ডব লীলা চালাতে থাকেন। মহাদেবকে শান্ত করতেই বিষ্ণু তার চক্র দিয়ে সতীর দেহকে একান্নটি অংশে কেটে ফেলেন। সতীর দেহের একান্নটি অংশ যেখানে যেখানে পড়েছে সেখানেই তৈরি হয়েছে সতীপীঠ।
ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, এই জায়গার আগের নাম ছিল ‘বহুলা’। বর্ধমানের কাটোয়া থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে কেতুগ্রামে অবস্থিত বহুলা সতীপীঠ। অনেকদিন আগে এই গ্রামেই এক তিলি বংশজাত রাজা বাস করতেন, যার নাম ভুপাল। এই রাজার ছেলের নাম চন্দ্রকেতু। মনে করা হয়, এই নাম থেকেই এই গ্রামের নাম হয়েছে কেতুগ্রাম।
বর্তমানে এই মন্দিরে যারা সেবার কাজ করেন তারা প্রত্যেকেই জমিদারের বংশধর। মন্দিরে দেবীর মূর্তি কে একটি কালো পাথরের উপর প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। দেবীর মুখ শুধু বাইরে বেরিয়ে থাকে, বাকি অংশ সুন্দর শাড়ি দিয়ে ঢাকা থাকে। দেবীর পাশেই রয়েছে অষ্টভুজ গণেশের মূর্তি। দেবীর নিত্য পূজা করা হয় এখানে। মন্দির সংলগ্ন একটি পুকুর আছে।
মানুষের বিশ্বাস অনুযায়ী, এই পুকুরে স্নান করলে সমস্ত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এই মন্দিরে দুর্গাপূজার সময় ধুমধাম করে মহানবমীর দিন পুজো হয়। নবরাত্রি তিথিতে উপচে পড়া মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। তাছাড়া শিবরাত্রিতেও জনসমাগম ঘটে।