নব্বইয়ের দশককে সঠিক অর্থে বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগ বলা যায় না। তবে সেই সময় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Prosenjit Chatterjee)-র পাশাপাশি আবির্ভাব ঘটেছিল চিরঞ্জিৎ (Chiranjeet), তাপস পাল (Tapas Pal), অভিষেক চট্টোপাধ্যায় (Abhishek Chatterjee)-দের। তাঁরা সেই সময় সাধারণতঃ কমার্শিয়াল ফিল্মে অভিনয় করতেন যেগুলি গ্রামীণ সমাজে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য ছিল। এই ফিল্মগুলি তাঁদের তারকা বানিয়ে তুলেছিল। পরবর্তীকালে তাপস রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন। চিরঞ্জিৎ ধীরে ধীরে অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন। অভিষেকের হাতে হিট ফিল্ম উপহার না দেওয়ার কারণে কমে এসেছিল কাজ। শুধুমাত্র প্রসেনজিৎ একের পর এক ফিল্মে অভিনয় করে গিয়েছেন। কিন্তু চিরঞ্জিৎ-এর অভিযোগ সবসময় প্রসেনজিৎ-কে কেন ইন্ডাস্ট্রি বলা হয়! কারণ একসময় তাঁরাও এই ইন্ডাস্ট্রির অংশ ছিলেন এবং চিরঞ্জিৎ নতুন ভাবে আবারও ফিরে এসেছেন।
এবার তিনি মুখ খুললেন ইন্ডাস্ট্রির পক্ষপাতিত্ব নিয়ে। বাংলা ফিল্মের ব্যবসা বাড়ানোর ক্ষেত্রে চিরঞ্জিৎ বরাবর নব্বইয়ের দশকের মতো কাহিনী নিয়ে ফিল্ম বানানোর পক্ষে। তিনি এর আগেও বলেছিলেন, জনতা এই ধরনের ফিল্ম দেখতে চান। এবারেও তাঁর গলায় শোনা গেল একই সুর। চিরঞ্জিৎ জানালেন, বাংলা ফিল্মের দর্শকদের তিনি যথেষ্ট ভালো বোঝেন। কমার্শিয়াল সেট-আপের কোন ফিল্ম হিট হবে তা তাঁর নখদর্পণে। এই প্রসঙ্গে তিনি তুলে আনলেন মৃণাল সেন (Mrinal Sen)-এর মতো কিংবদন্তী পরিচালকদের কথাও।
View this post on Instagram
চিরঞ্জিৎ-এর মতে, মৃণাল সেন, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (Budhdhadeb Dasgupta)-রা ভালো ফিল্ম বানালেও কমার্শিয়াল ফিল্ম বানাতে পারেননি। চিরঞ্জিৎ নাকি সাহস নিয়ে মৃণালবাবুকে মুখের উপর বলেছিলেন, তাঁরা চাইলেই কমার্শিয়াল ফিল্ম বানাতে পারবেন না। তবে তাঁর মতে, কৌশিক গাঙ্গুলী (Koushik Ganguly) ভীষণ ভাবে কমার্শিয়াল ফিল্ম বানানোর চেষ্টা করলেও তা সফল হচ্ছে না। আর্টের সাথে মিলিয়ে খিচুড়িহলেও ফিল্ম হচ্ছে না। তবে কৌশিককে তোপ দাগতে ভুললেন না চিরঞ্জিৎ।
তাঁর মতে, প্রসেনজিৎ-কে কৌশিক ফিল্মে কাস্ট করছেন ফিন্যান্স পাওয়ার জন্য। প্রসেনজিৎ ফিন্যান্স দিতে পারেন। কিন্তু চিরঞ্জিৎ-কে কাস্ট করলে সেই সুবিধা নেই। ফলে কৌশিক পরিচালিত ফিল্ম ফ্লপ করছে। কিন্তু প্রতিবেদকের মতে, সাম্প্রতিক কালে কৌশিক গাঙ্গুলী নির্মিত ফিল্ম ‘কাবেরী অন্তর্ধান’-কে পুরোপুরি ফ্লপ বলা চলে না। ফিল্মটি যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে। প্রসেনজিৎ-এর ক্ষেত্রে একটি বিশেষ দিক হল, তিনি নিজেকে ভেঙে তৈরি করতে পারেন। ফলে ইন্ডাস্ট্রির প্রতি আবেদন, পা ধরে টানাটানি, সমালোচনা এগুলি বন্ধ করে নিজেদের গ্রুম করা উচিত। তাহলে আখেরে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির লাভ হবে।
View this post on Instagram