Chumki Chowdhury: আসল বিষধর সাপ আনিয়ে হয়েছিল শুটিং, ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন চুমকি চৌধুরী
মহানায়ক উত্তম কুমার (Uttam Kumar) পরবর্তী সময় বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এক অন্য যুগ। প্রাচীনদের মতে, এই যুগ ছিল অবক্ষয়ের। কিন্তু মূলতঃ এই সময় থেকেই সাবালক হতে শুরু করে বাংলা সিনেমা। তৈরি হতে থাকে টলিউড। নিঃসন্দেহে তা ছিল বাংলা সিনেমার আধুনিক যুগ। সেই সময় দুই ধরনের ফিল্ম তৈরি হত, কমার্শিয়াল ও আর্ট। আর্টকে অনেকে অন্য ধারার ফিল্ম বলে থাকেন। তবে বর্তমানে দুটি ধারা মিলেই তৈরি হয়েছে মেনস্ট্রিম। কিন্তু গত কয়েক দশক জুড়ে কমার্শিয়াল বাংলা ফিল্মে একচেটিয়া আধিপত্য কায়েম করেছিলেন অঞ্জন চৌধুরী (Anjan Chowdhury)। তাঁর হাত ধরে উঠে এসেছিলেন একাধিক নতুন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন তাঁর কন্যা চুমকি চৌধুরী (Chumki Chowdhury)-ও। জি বাংলার জনপ্রিয় গেম শো ‘দিদি নং ওয়ান’এর অষ্টম সিজনে এসে কিছুটা নস্টালজিক হয়ে পড়েছিলেন অভিনেত্রী।
‘দিদি নং ওয়ান’-এর সঞ্চালিকা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় (Rachana Banerjee)-ও নস্টালজিক হয়ে বললেন, সেই সময় সুবর্ণ জয়ন্তী, রজত জয়ন্তীর বোর্ড ঝুলত সিনেমা হলের বাইরে। কিন্তু বর্তমানে তা দেখা যায় না। চুমকিকে তিনি বললেন, এই কথা শুনে নিশ্চয়ই তাঁর চোখের সামনে বহু স্মৃতি ভেসে উঠছে। চুমকিও তা স্বীকার করলেন। বড় শিল্পীদের সাথে যখন তিনি কাজ করতেন, তখন তাঁর বয়স যথেষ্ট কম ছিল। সেই সময় চুমকি তাঁদের স্টারডম বুঝতে পারতেন না যা বর্তমানে পারেন। চুমকির মনে হয়, অনেক কিছুই তাঁদের থেকে শেখার ছিল যা হয়নি। রচনা বললেন, এখনও অঞ্জন চৌধুরীর ফিল্ম টেলিভিশনে দেখানো হলে রিমোট দিয়ে চ্যানেল ঘোরাতে ইচ্ছা করে না। চুমকি জানালেন, তিনি কাজ করেছেন অভিনেত্রী অনামিকা সাহা (Anamika Saha)-র সাথেও।
অনামিকা জানালেন, অঞ্জনবাবু তাঁকে ডেকে বলেছিলেন, সেজ বৌয়ের চরিত্রে তাঁকে দাপটের সাথে অভিনয় করতে হবে। অনামিকার সাথে বাঙাল ভাষায় কথা বলতেন অঞ্জনবাবু। চুমকি বললেন, ‘নাচ নাগিনী নাচ’ ফিল্মে অভিনয় করতে গিয়ে যথেষ্ট মজা হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে অনামিকা বললেন, ত্রিশ খানা জ্যান্ত সাপ আনা হয়েছিল সেটে। সেগুলি ছিল বিষধর। দোতলার উপর সেটে তারা দাঁড়িয়ে আছে। ক্রেনের উপর রয়েছেন ক্যামেরাম্যান। অনামিকাকে ফণা তুলে ঘিরে রেখেছে সাতখানা সাপ। হাতে ঝাঁটা নিয়ে অনামিকা তাদের সামনে ‘তু চিজ বড়ি হ্যায় মস্ত মস্ত’ নাচছিলেন। সেই সময় একটি সাপ তাঁকে ছোবল মারে। ফেটে যায় অনামিকার শাড়ি। ভিতরে গ্লাভস পরার কারণে বিষধর সাপের কামড়ে ক্ষতি হয়নি অনামিকার। সেই শাড়ি এখনও রেখে দিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় অঞ্জনবাবু অনুতপ্ত হয়েছিলেন।
চুমকি কোনোদিন স্টারকিড হিসাবে বড় হননি। মধ্যবিত্ত পরিবারের আবহে বড় হওয়া চুমকির কাছে বাড়িতে আসা নামী তারকারা ছিলেন আত্মীয়দের মতো। অঞ্জনবাবু মেয়েকে নায়িকা করার ব্যাপারে কোনোদিন ভাবেননি। তবে একটি ফিল্মের অডিশনের সময় স্কুল থেকে ফিরে চুমকি ঘরে ঢুকতেই অঞ্জনবাবু বলেছিলেন, তিনিই নায়িকা। প্রথম দিকে কম ফিল্মে অভিনয় করলেও দর্শকরা যখন পছন্দ করতে শুরু করলেন, তখন অভিনয়কেই পেশা হিসাবে বেছে নিলেন চুমকি।
তবে বর্তমানে তিনি সিরিয়ালে অভিনয় করেন। পরিবারকে যথেষ্ট সময় দেওয়ার চেষ্টা করেন চুমকি। তিনি জানালেন, ঘরকুনো ফলে বাড়িতে থাকতেই ভালো লাগে তাঁর। চুমকি জানালেন, বড়দের শ্রদ্ধা করতেন অঞ্জনবাবু। বয়সে বড় ড্রেসারকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতেন তিনি। লাজুক স্বভাবের কারণে অনুরাগীদের সামনে আসতে চান না চুমকি। দেখেন না নিজের অভিনীত ফিল্ম। তাঁর মনে হয়, সেই সময় তিনি দেখতে ভালো ছিলেন না। অভিনয়ও ভালো করতেন না। তাঁর কথা শুনে তো হেসে কুটিপাটি রচনা।