মানুষের মনের ইচ্ছা আর কঠোর পরিশ্রম থাকলে কিভাবে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ হল রাজস্থানের উদয়পুরে এক দুধ বিক্রেতার কন্যা সোনাল শর্মা। সোনাল ২০১৩ সালে রাজস্থানের জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এখন তিনি হাইকোর্টের বিচারপতি। তবে তার মনের লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথটা খুব একটা সহজ-সরল ছিলনা। নানান রকম ঘাত-প্রতিঘাত এর মধ্যে দিয়ে সে তার জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছতে পেরেছেন। তাকে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট পদে নিয়োগ করা হবে এমনটাই জানিয়েছে রাজস্থান আদালত।
দুধ বিক্রেতা পিতার কন্যা হওয়ার জন্য সংসারে অর্থাভাব ছিল। পড়াশোনার জন্য অনেক সময় টিউশন ফি দিতে পারতে না। তার ব্যয়বহুল পড়াশোনা চালানো তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ছে। কিন্তু কারুর কোন রকম সাহায্য ছাড়াই নিজের মনের বলকে সঙ্গী করে একাই সমস্ত পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। সাইকেলে করে কলেজে যাওয়া থেকে শুরু করে বাড়িতে গোয়ালঘরে বসে শুধুমাত্র একটি তেলের ক্যানকে টেবিল করে চলত পড়াশোনা। পড়াশোনার পাশাপাশি চলত গরুদের যত্ন।
সারাদিন মোটামুটি গোয়াল ঘরে থাকার জন্য তার জুতোতে অনেক সময় গোবর লেগে থাকত, সেই নিয়ে সহপাঠীদের কাছ থেকে অনেক সময় অনেক লজ্জাজনক কথাও তাকে শুনতে হয়েছে। একজন দুধ বিক্রেতার কন্যা হিসেবে তাকে অনেক অপমানের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে তিনি যে এত কষ্ট করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পেরেছেন এজন্য তার পরিবার যথেষ্ট গর্ববোধ করেন। তার মত মেয়েরাই তো দেশের গর্ব। তার মত মেয়েকে দেখেই আর পাঁচটা মেয়ে এগিয়ে আসবে, যারা এখনো ঘরের কোনায় বসে বসে শুধু শুধু চোখের জল ফেলে তাদের কাছে সোনালের মতন মেয়েরা নতুন পথ দেখাবে।