কেঁদে ভাসানোর মানুষ নই, রাজ সহ তারকা প্রার্থীদের একহাত নিলেন কমরেড দীপ্সিতা
ভোট পর্ব প্রায় শেষের পথে। এক মাস পেরিয়ে গিয়েছে। এখনো এক দফা ভোট বাকি। এর মধ্যেই রাজ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউতে নাজেহাল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এই মহাসঙ্কটে অনেকেই পাচ্ছেননা সঠিক চিকিৎসা পরিষেবা, অনেকেই পাচ্ছেননা খাবার, নেই পর্যাপ্ত অক্সিজেন। এমন সময় সোশ্যাল মিডিয়াতে ফাঁস হয়েছে একটি কিছু তারকা প্রার্থীদের মোবাইল ফোন নম্বর। নেটমাধ্যমে করা এক পোস্টে তৃণমূল-বিজেপির একাধিক হেভিওয়েট নেতা ও তারকা প্রার্থীদের ফোন নম্বর ফাঁস করা হয়েছে। যারা ভোটের আগে বলেছিলেন সাধারণ মানুষের জন্য কিছু করতে চান।
এই তালিকায় যেমন রয়েছেন মুকুল রায়, বৈশালি ডালমিয়া, শুভেন্দু অধিকারী,রাজীব বন্দোপাধ্যায়ের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা তেমনই ছিলেন সদ্য রাজনীতিতে যোগ দেওয়া কাঞ্চন মল্লিক, রাজ চক্রবর্তী, সায়নী ঘোষ, যশ দাশগুপ্ত, কৌশানি মুখোপাধ্যায়, সায়ন্তিকা বন্দোপাধ্যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, পার্নো মিত্রদের মতো বিভিন্ন তারকা প্রার্থীদের নম্বর। এরপরেই রাজের কাছে ১০ হাজার ফোন এসেছে নানা প্রান্ত থেকে।এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের এই তারকা প্রার্থীর দাবি যে সিপিএম-এর কোনও সদস্যের তরফেই করা হয়েছে এই কাজ।
সোশ্যাল মিডিয়াতে এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে সকল তারকাদের নাম্বার। এবার এই নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক বললেন, সুজন চক্রবর্তী, দেবদূত ঘোষ, বাদশা মৈত্র, শ্রীলেখা মিত্র, ঐশী ঘোষের ব্যক্তিগত যোগাযোগ নম্বর কেন দেওয়া হল না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর দিলেন বালি কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা ধর। সম্প্রতি তিনি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। যেখানে একজন লিখেছেন, এই ভোটে হারলেন কি জিতলেন কিছু এসে যায় না। দীপ্সিতার মতো মেয়েরা সমস্ত পরিস্থিতিতে মানুষের জন্য কাজ করবেন।
এই পোস্ট করে সেই ব্যক্তিকে দীপ্সিতা ধন্যবাদ জানান, এরপর তিনি জানান, এমনিতেও ৩ -৪ দিন ধরে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন। এই স্ক্রিনশট শেয়ার করেই আবার ক্যাপশনে বাম যুব নেত্রী লিখেছেন, “এক দাদাও তাঁদের দলের অনেকের ফোন নম্বর পোস্ট করেছেন। অনেকে ভেবেছিলেন তাঁরাও হযতো রাজবাবুদের মতো কেঁদে ভাসাবে। ফল হল উলটোটা। আজ থেকে ৫-১০-৫০ বছর পরেও যেন সাধারণ মানুষ তাঁদেএ সম্পর্কে এই ভরসা রাখতে পারেন। ব্যস এইটুকুই।” এই ভাবে তিনি ব্যারাকপুরের তারকা প্রার্থীদের কটাক্ষ করলেন।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে কোভিড যুদ্ধে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ‘রেড ভলান্টিয়ার্স’ বাহিনী তৈরি করেছে যুব সিপিএম। কলকাতা পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড এলাকার দায়িত্ব প্রাপ্ত ৮৩ জন তরুণ-তরুণীকে নিয়ে দলটি তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর দিয়ে রবিবার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। আর এই ‘রেড ভলান্টিয়ার্স’ বাহিনি নিয়ে পোস্ট করে বসেন রাজ। হাওড়ার মধ্যে কারোর অক্সিজেন সিলিন্ডার, রক্ত, হসপিটালের বেড, পানীয় জল, ওষুধ, অ্যাম্বুল্যান্স, আরও যেকোনও রকমের দরকারে রেড ভলান্টিয়ার্সের এমারজেন্সি…”।
ব্যাস এরপরই বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল প্রার্থী রাজ চক্রবর্তী। কিন্তু কয়েক মিনিটেই তিনি সেই পোস্টটি ডিলিট করে দেন। তবে কয়েক সেকেন্ডে এটি ভাইরাল হয়। এই নিয়ে বিস্তর সমালোচনা শুরু হয়। এরপরে ঋদ্ধি রিত নামে এক ব্যক্তির মেসেজের স্ক্রিনশট শেয়ার করেন রাজ। যেখানে তিনি দাবি করেছেন, তাঁকে না জানিয়েই হাওড়ার ভলেন্টিয়ার হিসেবে নাম ফোন নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই কারণেই রেড ভলান্টিয়ার্স সংক্রান্ত আগের সেই পোস্টটি ডিলিট করা হয়েছে।