Hair Care Tips: পাতলা চুল ঘন করুন ঘরোয়া উপাদান দিয়ে, শিখে নিন সহজ পদ্ধতি
‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা
মুখ তার শ্রাবস্তীর কারুকার্য’ কবিতাটা শুনলেই মনে হয় এক ঢাল কালো চুল। কিন্তু সম্প্রতি এরকম এক ঢাল কালো চুল দেখতে পাওয়া সত্যি খুব মুশকিল হয়ে পড়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ছেলে কিংবা মেয়ে মাথায় টাকের পরিমাণ এতটাই বেড়ে গেছে যে এক ঢাল কালো চুল খুঁজে পাওয়া যায়না।
চুলের ঘনত্ব কমে যাওয়ার সহজ কারণ কি –১) জিনগত কারণে মাথার চুল ফাঁকা হয়ে যেতে পারে- অনেক সময় দেখা যায় বাবা-মায়ের অকালে মাথায় টাক পড়ে যেতে, সেক্ষেত্রে এই সমস্যা হতে পারে। এমন সমস্যা হলে কোন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
২) অতিরিক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের কারণ- অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে মাথায় টাক পড়ে যেতে পারে। শ্যাম্পু তেলের মধ্যে থাকা সালফেট ইত্যাদি চুলকে ক্ষতি করে দেয়। তাছাড়া চুলে কালার করার জন্য আমরা পার্লারে গিয়ে অনেক ক্ষতিকারক জিনিস মাথায় লাগিয়ে থাকি, যার ফলে কিন্তু চুল একেবারে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৩) হরমোনের সমস্যা – থাইরয়েড হর্মন অতিরিক্ত বেড়ে গেলে চুল পড়তে পারে বা কারোর কারোর শরীরে ওভারিয়ান সিষ্ট, পিসিওডি থাকার কারণেও অতিরিক্ত চুল পড়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই গাইনোকোলজিস্ট এর সঙ্গে কথা বলুন।
৪) স্ট্রেসের জন্য চুল পড়তে পারে – অতিরিক্ত মানসিক সমস্যা, মানসিক দুশ্চিন্তা মানসিক স্টেজ বাড়লে অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে মেডিটেশন করুন মনকে শান্ত করুন।
৫) উপযুক্ত খাদ্যের অভাব- যদি ঠিকঠাক মতন পুষ্টি শরীর না পায়, তবে একেবারে উঠে মাথায় টাক পড়ে যেতে পারে, প্রতিদিন প্রোটিন, ফ্যাট জাতীয় উপযুক্ত খাবার খান।
৬) বার্ধক্য – বার্ধক্যজনিত কারণে চুলের পরিমাণ ক্রমশ কমে যেতে থাকে, সেক্ষেত্রে চুলের যত্ন করুন, দেখবেন আপনার চুল বয়স হলেও দিব্যি সুন্দর থাকছে।
৭) অতিরিক্ত দূষণ- দূষণের জন্য চুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যারা প্রতিদিন রাস্তায় বের হন তারা কিন্তু খুব সাবধানে থাকবেন, চুলকে যদি পারেন তো পাতলা সুতির কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে পারেন।
কিভাবে চুলের ঘনত্ব কে বাড়াতে পারবেন –
১) আয়ুর্বেদিক তেল ব্যবহার করুন – পরিমাণ মতন সরষের তেল, পরিমাণ মতো নারকেল তেল খুব ভালো করে গরম করে নিতে হবে। তার মধ্যে দিয়ে দিতে হবে এক মুঠো কারি পাতা, এক মুঠো নিম পাতা , একটি বড় আকারের এলোভেরা পাতা, এক টেবিল চামচ মেথি এক টেবিল চামচ কালোজিরে, দুটি আমলকি এবং চার থেকে পাঁচটি জবা ফুল, এক মুঠো জবা পাতা। প্রত্যেকটি উপকরণকে তেলের মধ্যে বেশ ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে। ভালো করে ফোটানোর পর তেল ছেঁকে রেখে দিন। এই তেল নিয়মিত চুলে ম্যাসাজ করুন।
২) শ্যাম্পু বানিয়ে ফেলুন –শ্যাম্পু করার মূল উদ্দেশ্য হলো চুলকে পরিষ্কার রাখা। চুল যদি সত্যিই সত্যিই পরিষ্কার রাখতে চান, তাহলে শ্যাম্পু করার জন্য কখনোই বাজার থেকে কেমিক্যালযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না। এর জন্য ব্যবহার করতে পারেন আমলা, শিকাকাই, রিঠা এছাড়াও বেসন চুলের জন্য ভীষণ ভালো।
৩) তেল মাখার পরে তোয়ালে গরম করে মাথায় দিন – তেল মাখার পরে একটি তোয়ালে কে গরম জলে খুব ভালো করে ভিজিয়ে নিন। তারপর সেই তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে রাখুন। তোয়ালে মাঝেমধ্যে খুলে গরম জলে ভিজিয়ে এইভাবে তোয়ালে মাথার মধ্যে জড়িয়ে নিন। এইভাবে মাথায় যদি গরম তোয়ালে লাগাতে পারেন তাহলে কিন্তু চুল ভীষণ ভালো হবে।
সতর্কীকরণ– উপরে উল্লেখিত কোনো উপাদানে অ্যালার্জি থাকলে ব্যবহারের আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এছাড়াও কোনোরকম সমস্যা এড়াতে আগে চিকিৎসকের সঙ্গে অবশ্যই কথা বলুন।