বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগ বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে উত্তম কুমার, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সুচিত্রা সেন, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় (Sabitri Chatterjee), লিলি চক্রবর্তী (Lily Chakraborty) দের মতো নাম। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ এখনো কাজ করে চলেছেন। অনেকেই পাড়ি দিয়েছেন অমৃতলোকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে অনেক কিছুই। ইন্ডাস্ট্রির ধরণ ধারণ, কাজের ধরণের সঙ্গে সঙ্গে সবথেকে বড় যে পরিবর্তনটা এসেছে সেটা হল পারিশ্রমিকের দিক দিয়ে।
বর্তমানে অভিনয় জগতে কাজ করে কেমন রোজগার হতে পারে তার একটা আন্দাজ রয়েছে কমবেশি সকলেরই। নায়ক নায়িকাদের পারিশ্রমিক নিয়ে মাঝে মাঝেই নানান খবর জায়গা করে নেয় সংবাদ শিরোনামে। কিন্তু আগেকার সময়ে চিত্রটা কেমন ছিল? কত পারিশ্রমিক পেতেন সে যুগের নায়িকারা? সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, লিলি চক্রবর্তীর মতো অভিনেত্রীরা, যাঁরা আজও দাপটের সঙ্গে অভিনয় করছেন সিনেমা, সিরিয়ালে, তাঁদের প্রথম পারিশ্রমিক কত ছিল?
পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে এপার বাংলায় এসে থাকা শুরু করেছিলেন সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। নয় জন বোন, বাবা, মা, ঠাকুমার সংসারে হঠাৎ করেই দেখা দিয়েছিল অনটন। তখন সাবিত্রী ছোট্ট মেয়ে। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেন, ফ্রক পরার বয়স থেকে অভিনয় শুরু করেছিলেন তিনি। পরিবারের অতজনের পেট চালানোর দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে। প্রত্যেকের জন্য সারা জীবন ধরে করে গিয়েছেন তিনি। ১৯৫২ সালে ‘পাশের বাড়ি’ নামক ছবিতে প্রথম অভিনয় করেছিলেন ছোট্ট সাবিত্রী। পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন ২০০ টাকা।
আরেক কিংবদন্তি অভিনেত্রী লিলি চক্রবর্তী। বয়সের ভার কাবু করতে পারেনি তাঁকে। এখনো দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছেন অভিনয়। তাঁরও অভিনয়ে পা রাখা অনেক কম বয়সে। মধ্যপ্রদেশে বড় হন তিনি। এখানে একটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন লিলি। সেই নাটক দেখতে এসেছিলেন ‘ভানু পেল লটারি’র পরিচালকের ভাই। ছোট্ট লিলির অভিনয় দেখে ভালো লাগতে তিনি দেন ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব। অভিনেত্রী তাঁকে নিয়ে যান নিজের বাবার কাছে। পরিচালক নাকি লিলিকে দেখে বলেছিলেন, আগে পাঠালে তাঁকেই নায়িকা করতেন তিনি। এতটাই সাবলীল ছিলেন তিনি। ১৯৫৮ সালের ‘ভানু পেল লটারি’র হাত ধরে অভিনয় শুরু লিলি চক্রবর্তীর। সে সময়ে দাঁড়িয়ে ৫০ টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন তিনি।