একবিংশ শতকের গোড়ায় ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’-এর মতো সুপারহিট ফিল্ম বলিউডকে উপহার দেওয়ার পরও ছয় আঙুলের কারণে একসময় ইন্ডাস্ট্রিতে হৃত্বিক রোশন (Hrithik Roshan)-কে অপয়া বলেই মনে করা হত। সেই সময় তাঁর কেরিয়ারের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে মারাত্মক ঝড়। তবে শৈশব থেকেই লড়াই করতে অভ্যস্ত হৃত্বিক। রোশন পরিবারে তাঁর জন্ম হলেও কোনোদিনই তথাকথিত ‘স্টারকিড’ ছিলেন না তিনি। তাঁর বাবা রাকেশ রোশন (Rakesh Roshan)- এর সহকারী পরিচালক থাকাকালীন হৃত্বিক কোনো আলাদা সুযোগ-সুবিধা পেতেন না। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সকলের সাথেই খেতেন হৃত্বিক। রাকেশের ঘরে প্রবেশের আগে সকলের মতোই তাঁকেও অনুমতি নিতে হত। কিন্তু লড়াইটা যন্ত্রণাদায়ক ছিল না। নিজেকে প্রমাণ করাটা ছিল যন্ত্রণাদায়ক। হৃত্বিক বারবার নিজেকে প্রমাণ করলেও ইন্ডাস্ট্রির তাঁকে পছন্দ ছিল না। তবে বর্তমানে ছবিটা বদলে গিয়েছে। যথেষ্ট কম সংখ্যক ফিল্মে অভিনয় করলেও নিজের মারকাটারি লুক ও সাবা আজাদ (Saba Azad)-এর সাথে সম্পর্কের কারণে প্রায়ই খবরের শিরোনাম দখল করে থাকেন হৃত্বিক। তবে শৈশবের কিছু কথা আজও ভুলতে পারেননি তিনি।
সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে হৃত্বিক জানিয়েছেন, শৈশবে কথা বলতে গিয়ে তাঁর তোতলানোর সমস্যা ছিল। ফলে স্কুলে তাঁর কোনো বন্ধু ছিল না। সকলে তাঁকে নিয়ে মজা করত। একাকীত্বে ভুগতেন হৃত্বিক। তিনি বাড়িতে বসে কাঁদতেন। তবে সেই সময় শুধুমাত্র তাঁর একজন বন্ধু ছিল। কিন্তু সে ছিল মেয়ে।
সহকারী পরিচালকের পরিবর্তে নায়ক হতে চেয়েছিলেন হৃত্বিক। কিন্তু তাঁর মেরুদন্ডে কিছু সমস্যা থাকার কারণে চিকিৎসক তাঁকে বলেছিলেন, তিনি যেন নাচ না করেন। অথচ হৃত্বিক একজন স্বয়ংসম্পূর্ণ নায়ক হতে চেয়েছিলেন। ফলে নাচ জানা জরুরী ছিল। কিন্তু চিকিৎসকের কথায় তিনি মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন। তবে পরবর্তীকালে তা থেকে নিজেই বেরিয়ে আসেন হৃত্বিক। আগাগোড়াই মায়ের সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি। সরোজ খান (Saroj Khan)-এর কাছে নাচ শিখতে শুরু করেন হৃত্বিক।
‘কহো না পেয়ার হ্যায়’-এর জন্য রাকেশ কিন্তু প্রথমে নিজের পুত্রের কথা ভাবেননি। শাহরুখ খান (Shahrukh Khan) অথবা আমির খান (Amir Khan) তাঁর প্রথম পছন্দ ছিলেন। কিন্তু দুজনেই ডেট দিতে পারেননি। ফলে রাকেশ নতুন প্রতিভাকে লঞ্চ করার কথা ভাবেন। হৃত্বিক নিজের জন্য বাবার কাছে সুপারিশ করেছিলেন। তাঁর ভাবনার সাথে হৃত্বিকের লুক মিলে যাওয়ার ফলে রাকেশ তাঁকে ‘কহো না পেয়ার হ্যায়’ ফিল্মে সুযোগ দিয়েছিলেন। এরপর কিন্তু ধস নেমেছিল হৃত্বিকের কেরিয়ারে। ‘কোই মিল গয়া’ তাঁকে আবারও প্রমাণ করার সুযোগ দিয়েছিল। সম্প্রতি আটচল্লিশ বছর বয়সে পা দিয়েছেন হৃত্বিক। আগামী দিনে তাঁকে দেখা যাবে সিদ্ধার্থ আনন্দ (Siddharth Anand) পরিচালিত ফিল্ম ‘ফাইটার’-এ। এই ফিল্মে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করছেন দীপিকা পাড়ুকোন (Deepika Padukone)।
View this post on Instagram