এতগুলি বছর কেটে গিয়েছে। তবু আজও বলিউডের ইতিহাসে অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan) ও রেখা (Rekha)-র প্রেমকাহিনীর ‘সিলসিলা’ ভেসে বেড়ায়। অথচ কোনোদিন অমিতাভ-রেখার প্রেমকে বলা হয়নি ‘পরকীয়া’। এমনকি দুই তারকা কোনোদিন স্বীকার করেননি তাঁদের সম্পর্কের কথা। একটি সাক্ষাৎকারে রেখা পুরো দোষ মিডিয়ার উপর চাপিয়েছিলেন।
রেখা বলেছিলেন, তিনি জয়া বচ্চন (Jaya Bachchan)-কে ‘দিদিভাই’ বলে ডাকতেন। তাঁদের সম্পর্ক যথেষ্ট ভালো ছিল। তবে রেখার কথার স্বপক্ষে বেশ কয়েকটি ছবি রয়েছে যাতে জয়া ও রেখা একে অপরের সাথে কথা বলতে ব্যস্ত। সাম্প্রতিক কালে একটি অ্যাওয়ার্ড সেরেমনিতে জয়াকে প্রণাম করেন রেখা। জয়াও হেসে তাঁকে আশীর্বাদ করেন। একবারও কোথাও পাওয়া যায়নি জয়া ও রেখার ঠান্ডা লড়াইয়ের পরিচয়।
View this post on Instagram
1973 সালে অমিতাভ-জয়ার বিয়ে হয়। সব ঠিকঠাক চলছিল। তাল কাটে 1976 সালে। ‘দো আনজানে’ ফিল্মে অভিনয়ের সময় রেখার সাথে অমিতাভর সম্পর্কের কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এমনকি তাঁদের একসাথে বিভিন্ন পার্টিতে দেখা যেত। পরবর্তীকালে ‘মুকদ্দর কা সিকন্দর’ ফিল্মের স্পেশ্যাল স্ক্রিনিং-এর পর অমিতাভ সিদ্ধান্ত নেন, তিনি রেখার সাথে কাজ করবেন না। কিন্তু এটি অমিতাভর নিজস্ব সিদ্ধান্ত ছিল নাকি পরিবারের চাপে পড়ে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন তা নিয়ে সন্দেহ আছে। কারণ 1973 সালে কিছুটা হলেও পারিবারিক চাপের মুখে পড়ে জয়াকে বিয়ে করেছিলেন অমিতাভ। শোনা যায়, ‘জঞ্জির’-এর সেট থেকে অমিতাভ ও জয়ার মধ্যে তৈরি হয়েছিল ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব। কিন্তু বচ্চন পরিবারের পছন্দ ছিল ঘরোয়া মেয়ে জয়াকে। ফলে ‘জঞ্জীর’-এর সাফল্য উদযাপনের জন্য ইউনিট থেকে যখন লন্ডন ট্রিপে যাওয়ার কথা হয়, সেই সময় অমিতাভকে বলা হয়েছিল, বিয়ে না করে জয়ার সাথে লন্ডন যেতে পারবেন না তিনি।
জয়া কিন্তু বরাবর পরিস্থিতি সাথে সমঝোতা করে এসেছেন। একবার সাংবাদিক করণ থাপার (Karan Thapar) যখন অমিতাভকে পরভীন বাবি (Parveen Babi)-র সাথে তাঁর সম্পর্কের ব্যাপারে প্রশ্ন করেন, বিগ বি-র উত্তর ছিল, এই ধরনের রটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা হলেও তিনি মিডিয়াকে থামাতে পারছেন না। এমনকি ওই সাক্ষাৎকারে রেখার সাথে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছিলেন অমিতাভ। জয়া তাঁকে সমর্থন করে বলেছিলেন, তিনি তাঁর স্বামীকে বিশ্বাস করেন। কিন্তু জয়ার জীবন ‘পিকচার পারফেক্ট’ নয়, তার প্রমাণ পেয়েছিলেন করণ। তাঁকে অমিতাভ একদিন লাঞ্চে আমন্ত্রণ জানান।
খাবার টেবিলে অমিতাভকে জয়া জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি ভাত খাবেন কিনা! কারণ রুটি তৈরি হতে দেরি হচ্ছিল। কিন্তু অমিতাভ অত্যন্ত রেগে গিয়ে জয়াকে বলেন, বারবার তাঁকে কেন জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, তিনি ভাত খাবেন কিনা! জয়া জানেন, অমিতাভ ভাত খান না। এমনকি অমিতাভ রুটি তৈরি করতে দেরি হওয়ার জন্য অভিযোগ না করার পরেও জয়া কেন বারবার তাঁকে একই কথা জিজ্ঞাসা করছেন! অমিতাভ বলেন, তিনি রুটির জন্য অপেক্ষা করতে হলে করবেন। তাঁর চেঁচামেচিতে ক্ষুব্ধ হয়ে জয়া ভিতরে চলে গিয়েছিলেন ও করণের সামনে আর বেরোননি। অমিতাভ কিন্তু এমন ভাব করেছিলেন যেন কিছুই হয়নি। এই ঘটনার পরেই রুটি এসে গিয়েছিল ও অমিতাভ চুপচাপ রুটি খেয়েছিলেন। শীতলতা আজও রয়েছে। কিন্তু জয়াই শুধু নয়, কোনো নারীই তা প্রকাশ করেন না।
View this post on Instagram