ক্যামেরা লেন্সের ওপারে দাঁড়িয়ে মানুষকে তিনি অনায়াসে হাসিয়ে দিতে পারেন। একসময় তার হাবভাব, অঙ্গভঙ্গি, কথাবার্তা একটা সময় বাংলা চলচ্চিত্রে কমেডি জনারের (Genre) একটা দিগন্ত উন্মোচন করেছিল। মানুষটি কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mullick)। কিন্তু এই হাস্যকৌতুকে মাখামাখি হয়ে থাকা মানুষটির জীবন কি ততটাই রঙিন? বোধহয় না। কারণ একটা সময় মা’কে হারানোর পরের দিনেই শেভ করে কস্টিউম গায়ে চাপিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে মানুষকে হাসাতে হয়েছিল তাকে। তার অভিনয়ে ছিল না একটুও জড়তা। কিন্তু কিভাবে? এবার সেই কথাই শোনালেন অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তার জীবনের লড়াইয়ের কথা শোনালেন কাঞ্চন মল্লিক। সঙ্গে তার মায়ের মৃত্যুর পরের দিন ক্যামেরার সামনে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। এদিন আবেগঘন গলায় কাঞ্চন মল্লিক বলেন, “যেদিন আমার মা পরলোক গমন করলেন, ঠিক তার পরের দিন আমার একটা শ্যুট ছিল। সেদিন রাতে আমার প্রোডিউসার ফোন করে বললেন শ্যুট পোস্ট-পন করার কথা। কিন্তু আমিই বারণ করি। পরের দিন সকালে ধুতির কুঁচি খুলে ফেললাম। মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে শেভ করলাম। গলার চাবি কস্টিউমের ভেতর ঢুকিয়ে রেডি হলাম। তবে সবথেকে চ্যালেঞ্জের বিষয় ছিল এই মানসিক অবস্থায় ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে দর্শকদের হাসানো। আমাকে সেটাও করতে হয়েছিল”। আর এইসব কথা বলতে বলতে অভিনেতার চোখে দেখা যায় বেশ কিছুটা আবেগের মেঘ।
এই সাক্ষাৎকারে কাঞ্চন মল্লিক তার জীবনের আরো কিছু অভিজ্ঞতার কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, “একদিন মেকআপ রুমে বক্সে আছি, এমন সময় এক নামজাদা অভিনেত্রী সেখানে ঢুকে আমাকে দেখে ভ্রু কুঁচকে আমাকে বেরিয়ে যেতে বলেন। সেদিন সারাটা দিন আমাকে বাইরে অপেক্ষা করতে হয়েছিল। তারপর একদিন তিনিই আমাকে ডেকে তার পাশে বসতে বলেছিলেন। সেদিন মুচকি হেসে আমিই বলেছিলাম যে একদিন আমাকে তুমিই বেরিয়ে যেতে বলেছিলেন।” এছাড়াও এদিন কাঞ্চন মল্লিক যুব সমাজকে বার্তা দিয়ে বলেন, “জীবনে ৬ টি বল খেলার সুযোগ সবারই আসে। আর সেই ৬ বলে ৩৬ রান করার মানকসিকতা নিয়েই খেলতে হবে। তাহলেই তুমি জায়গা পাবে, নচেৎ নয়”।
জীবনের লড়াইয়ের গল্প ভাগ করে এদিন অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক একটিই জিনিস বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন যে, জীবন কোনোদিন কারো কাছে জায়গা করে দিয়ে যায়না, সকলকেই কমবেশি লড়াই করে সেই জায়গা তৈরি করে নিতে হয়। তেমনটাই হয়েছে তার সাথেও, এমনটাই এদিন জানান অভিনেতা।