‘লতাজি মানেই সংগীত, সংগীত মানেই লতাজি’- এমনটাই কথিত আজকাল। অথচ কেউ কি জানেন সংগীত সম্রাজ্ঞী বা এই সুরের সম্রাজ্ঞী হয়ে ওঠার পিছনে কতটা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁকে? লতাজির বাবা পন্ডিত দীননাথ মঙ্গেশকরের একটি ফিল্ম কোম্পানি ছিল। তাই মাত্র ৫ বছর বয়স থেকেই অভিনয় জগতে নাম লিখিয়ে দিয়েছিলেন লতাজি।
১৯৪২ সাল মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে ফেলেন। সংসারের দায়িত্ব এসে পড়ে তাঁর উপর। শুরু হয় সংগ্রাম।মিনা, আশা, ঊষা ও হৃদয়নাথ মঙ্গেশকর এই চার ছোট ভাইবোনকে নিয়ে শুরু করেন নতুন জীবন। মাঝে আবার ছোট ভাই হৃদয়নাথও অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাবার কোম্পানিও ধীরে ধীরে বন্ধ হতে বসে। এদিকে ভাইবোনকে সামলাতে গিয়ে পড়াশোনাও সম্পন্ন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না ছোট্ট লতার।
১৯৪৮ সাল অবধি আটটি ছবিতে অভিনয়ও করেন। সাফল্য পাননি। গান নিয়ে বরাবরই ভালোবাসা ছিল তাঁর। ১৯৪২ একটি মারাঠি সিনেমায় গান গাইলেও কোনো অজ্ঞাত কারণে ছবি থেকে গানটি সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রথম প্রথম প্রায়শই নিজের সরু গলার কারণে একের পর এক প্লেব্যাক হাতছাড়া হতে শুরু করে। একের পর একভাবে অসফল হতে থাকেন তিনি। যেদিকেই যাচ্ছিলেন যাত্রা থেমে যাচ্ছিল।
বলা বাহুল্য, সংগীতের প্রতি শ্রদ্ধা জনিত ভালোবাসা লতাজিকে রাস্তা দেখাতে আবার শুরু করে। উস্তাদ আমানত আলি খান, উস্তাদ বড় গুলাম আলি খান, পন্ডিত তুলসিদাস শর্মার মতো নামি সঙ্গীতাচার্যদের থেকে তালিম নিতে থাকেন। এরপরই হিন্দি গানে ক্ষেত্রে ভাগ্য সদয় হয় লতাজির। ১৯৪৯ সালে তাঁর গাওয়া হিন্দি ভাষার গান ‘আনেবলা আয়েগা’ তাঁকে সাফল্যের পথে এগিয়ে দেয়। আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একের পর এক গীতের মাধ্যমে কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন ভারত রত্না লতা মঙ্গেশকর।