আইনি জটিলতায় ফাঁসলেন শাকিব খান (Shakib Khan)। বাংলাদেশের অন্যতম বিতর্কিত ও বিখ্যাত নায়ক শাকিব। তাঁকে ঘিরে রয়েছে হাজারও বিতর্ক। নারীসঙ্গের দোষে দুষ্ট তিনি। দুইবার গোপনে দুই নায়িকা অপু বিশ্বাস (Apu Biswas) ও শবনম খান বুবলি (Shabnam Khan Bubly)-কে বিয়ে করেছেন শাকিব। জন্ম নিয়েছে তাঁর দুই পুত্রসন্তান জয় (Joy) ও বীর (Veer)। শাকিবের আরও একটি সন্তানের মা হিসাবে সামনে এসেছেন এক মহিলা যিনি একসময় বাংলাদেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে জুনিয়র আর্টিস্টের কাজ করতেন। এত বিতর্কের পাশাপাশি এবার যুক্ত হল ধর্ষণের অভিযোগ। অস্ট্রেলিয়ায় একটি ফিল্মের শুটিং করতে গিয়ে সহ-প্রযোজককে ধর্ষণ করেছিলেন শাকিব বলে অভিযোগ করেছেন ওই ফিল্মের প্রযোজক রহমতুল্লাহ (Rahamatullah)।
2017 সালে অস্ট্রেলিয়ায় ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ নামে একটি ফিল্মের শুটিংয়ের সময় এই ঘটনা ঘটে। সেই সময় এই বিষয়ে প্রযোজক রহমতের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই ফিল্মের সহ-প্রযোজক, পরিচালক শিল্পী সমিতি ও ক্যামেরাম্যান সমিতির সদস্যরা। পরবর্তীকালে 2018 সালে আবারও অস্ট্রেলিয়ায় আসেন শাকিব। সেই সময় এই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে স্থানীয় পুলিশ গ্রেফতার করলেও সামাজিক চাপ ও নিগ্রহের ভয়ে নির্যাতিতা মহিলা মুখ না খোলায় ছাড়া পেয়ে যান শাকিব। কিন্তু তাঁর অসহযোগিতার ফলে আশিকুর রহমান (Ashiqur Rehman) পরিচালিত ‘অপারেশন অগ্নিপথ’-এর শুটিং এখনও শেষ হয়নি। এই কারণে আবারও শাকিবের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলায় ইন্ধন দিয়ে 2023 সালের 15 ই মার্চ অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা প্রযোজক রহমত পুলিশের কাছে নতুন করে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
View this post on Instagram
অভিযোগপত্রে রহমত দাবি করেছেন, 2017 সালে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’-এর শুটিং চলাকালীন অসদাচরণ করেছিলেন শাকিব। মিথ্যা আশ্বাস, ধর্ষণ ও পেশাগত অবহেলার মাধ্যমে চলচ্চিত্রটির ক্ষতি সাধন, চলচ্চিত্রের শুটিং সম্পন্ন করতে অথবা লগ্নিকৃত অর্থ ফিরিয়ে দিতে রাজি না হওয়ার কারণে নিরুপায় হয়ে প্রযোজনা সংস্থার তরফে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এমনকি ছয় বছর আগে ‘অপারেশন অগ্নিপথ’-এর শুটিং চলাকালীন শাকিবের তরফে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। সেই সমস্যার তালিকাও রহমত পেশ করেছেন। রহমত জানিয়েছেন, শুটিংয়ের সব প্রস্তুতি নেওয়ার পর আচমকাই শুটিং বাতিল করে দিতেন শাকিব। প্রায়ই তিনি এমন ধরনের খাবার চাইতেন যা যোখাড় করা কষ্টকর হলেও শুটিং ইউনিটের তরফে ওই খাবার যোগাড়ের চেষ্টা করা হত। ফলে যথেষ্ট অর্থ ব্যয় হত।
নির্দিষ্ট কল টাইম না মেনে নিজের ইচ্ছা মতো শুটিংয়ে আসতেন শাকিব। ফলে প্রচুর অর্থ খরচ করে তৈরি করা সেটে সকলে তাঁর অপেক্ষায় ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতেন। শাকিবের প্রতিদিনের অভ্যাস ছিল নিয়মিত যৌন পল্লীতে যাওয়া। যদি তা সম্ভব না হত, তাহলে অস্ট্রেলিয়ার হোটেলে যৌনকর্মীদের নিয়ে আসতে হত এবং অধিকাংশ সময় এই যৌনকর্মীদের পারিশ্রমিক দিতে হত প্রযোজনা সংস্থাকে যার ফলে প্রচুর অর্থ খরচ হয়েছে। এমনকি কৌশলে মহিলা সহ-প্রযোজককে নৃশংস ভাবে ধর্ষণ করেছিলেন শাকিব। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই ঘটনায় শাকিবের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশের কাছে ফৌজদারি অভিযোগ করা হয় যার সাক্ষী ছিলেন রহমত। ধর্ষণের বিচার চাইতে পরিবার থেকেও দূরে সরতে হয়েছিল ওই মহিলাকে।
হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে যখন টানাপোড়েন চলছে, সেই সময় অস্ট্রেলিয়া থেকে পালিয়ে আসেন শাকিব। এরপর শাকিবের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন রহমত। তবে রহমতের দায়ের করা অভিযোগ প্রসঙ্গে এখনও নীরব শাকিব।
View this post on Instagram