বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার মির্জা লতিফ স্ট্রিটের বাড়িটা বিকালের পড়ন্ত আলোয় মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। বাড়ির বাসিন্দা বৃদ্ধা মিনতি মুখোপাধ্যায় (Minati Mukherjee)-র কন্যা অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee) বর্তমানে রাজ্যবাসীর আলোচনার বিষয়। পাশের বাড়িতেও ফিসফিস করে আলোচনা পাড়ার মেয়ের সাথে তাঁর বাবার বয়সী প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)-র সম্পর্ক নিয়ে। আলোচনা আরও মুখরোচক করে তুলেছে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া সেক্স টয়।
মিনতি দেবী টিভি ও খবরের কাগজ থেকে সবটা জানতে পারলেও মেয়ের সাথে দেখা করার কোনো তাগিদ নেই। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে অর্পিতার উত্থান ও তাঁর বিলাসবহুল জীবনযাত্রা নজর এড়ায়নি তাঁর মায়ের। সময় থাকতে সাবধান করেছিলেন মেয়েকে। কিন্তু শোনেননি অর্পিতা। মিনতি দেবী ভেবেছিলেন, অভিনয় ও মডেলিং করে অর্থ উপার্জন করেন অর্পিতা। এছাড়াও প্রযোজনা সংস্থার সাথে যুক্ত থাকার কারণেও আসে অর্থ। কিন্তু স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি অর্পিতা জড়িয়ে রয়েছেন কোনো দূর্নীতির সাথে। এমনকি মিনতি দেবী জানতেন না, অর্পিতার সাথে পার্থর সম্পর্কের কথা। অর্পিতার গ্রেফতারির পর তিনি বলেছিলেন, আগে জানলে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিতেন তিনি।
অর্পিতার জীবনযাত্রা বিলাসবহুল হলেও মিনতি দেবী নিম্ন মধ্যবিত্ত জীবনযাত্রা নির্বাহ করেন। স্বামী কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি করতেন। ফলে ফ্যামিলি পেনশন পান মিনতি দেবী। সেই অর্থে সংসার চলে তাঁর। তবে অর্পিতা মাঝে মাঝেই মায়ের সাথে দেখা করতে আসতেন। মায়ের যত্ন নিতেন তিনি। গ্রেফতার হওয়ার দিন দুয়েক আগেও দেখা করেছেন মায়ের সাথে। অর্পিতা গ্রেফতার হওয়ার পর চোখের জল ফেলেননি মিনতি দেবী। শক্ত হাতে সামলেছেন সংবাদমাধ্যমের কৌতূহলকে।
অর্পিতাকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখেছেন মিনতি দেবী। কিন্তু তিনি কষ্ট পাননি। আইনের উপর আস্থা রাখেন মিনতি দেবী। পার্থ বলেছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। অর্পিতা বলছেন, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। মিনতি দেবী চান, সত্য প্রমাণিত হোক আইনের মাধ্যমে। মা হিসাবে তিনি চান, তাঁর মেয়ে যদি দোষ করে থাকে, তাহলে শাস্তি পাক। কিন্তু যদি কোনোদিন বেলঘরিয়ার বাড়িতে ফিরে আসেন অর্পিতা, তাহলে মা হিসাবে কড়া ব্যবস্থা নেবেন তিনি বলে জানিয়েছেন মিনতি দেবী। কারণ তিনি কুমাতা নন।এক মা যিনি বিচার চান, চান সত্য উদঘাটন হোক।
View this post on Instagram