শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বিগত কয়েকমাসে উত্তাল হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) ঘনিষ্ঠ বন্ধু অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) ফ্ল্যাট থেকে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা উদ্ধার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি। যৌথভাবে এই দুর্নীতির তদন্তে নেমেছে ইডি ও সিবিআই। উঠে এসেছে একের পর এক সরগরম তথ্য। গরাদের আড়ালে ঠাঁই হয়েছে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী সহ একের পর এক প্রভাবশালীর। আর এর মাঝে ভোটের ময়দানে ইডি-কে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলে কাউন্টার করার চেষ্টায় রাজ্যের শাসক দল। কিন্তু এই কাউন্টারের পাল্টা জবাব দিল কেন্দ্র।
সম্প্রতি রাজ্যসভার অধিবেশনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ইডি-কে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যাবহার করার অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। আর এই অভিযোগের জবাবে রাজনীতির বাইশ গজে নামলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitaraman)। রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে এই অভিযোগের পাল্টা দিয়ে তিনি বলেন, “তদন্তকারী সংস্থা নিজের মতো কাজ করে। আপনারা যদি নিজের দলের লোকেদের ধরে রাখতে না পারেন, সেটা অন্য গল্প। তার জন্য ইডি-কে দোষ দেবেন না।” এরপরেই নাম না করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইঙ্গিত করে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, “একজন মন্ত্রীর বাড়ি থেকে এত টাকা উদ্ধার হয়েছে। এই ধরনের প্রমাণ পেলে কী করা যায়?” যদিও এরপর তৃণমূলের তরফে কেউই আর কাউন্টার করার চেষ্টা করেননি। এদিকে অর্থমন্ত্রীকে এই বিষয়ে নথি জমা করতে বলেন স্পিকার, তিনি তাতে সম্মতি জানান।
প্রসঙ্গত, এই বিষয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রকে তোপ দেগে তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন (Derek O’brayen) অভিযোগ করেন যে অর্থ মন্ত্রকের অধীনস্থ তদন্তকারী সংস্থা ইডি-কে রাজ্যে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র। তিনি আরো অভিযোগ করেন যে কেন্দ্র বিরোধী দল শাসিত রাজ্যে আর্থিক অবরোধ করার চেষ্টা করছে। এই বিষয়েও এদিন অর্থমন্ত্রী বিরোধীদের জবাব দেন তিনি বলেন, “রাজ্যগুলিকে যে আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে, যে পরিমাণ ঋণ নিতে দেওয়া হচ্ছে বা অতিরিক্ত ঋণে শর্ত চাপানো হচ্ছে, তার সবটাই অর্থ কমিশনের সুপারিশ মেনে।” এছাড়াও অতীতের ঘটনা টেনে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, “ইউপিএ জমানায় গুজরাতের সর্দার সরোবর বাঁধের মতো প্রকল্প আটকানো হয়েছিল। তার আগেও কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার বিরোধীশাসিত রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারি করেছে।”
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে আসছে পঞ্চায়েত ভোট। আর এই ভোটে নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে যেমন মরিয়া শাসকদল তৃণমূল, তেমনই নতুন করে বাংলার মাটিতে জায়গা খুঁজছে বিজেপি। আর এই নিয়ে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহেও পশ্চিমবঙ্গে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ।