Hoop PlusTollywood

Arpita Mukherjee: সুন্দরী অর্পিতা আসলে ষড়যন্ত্রী নাকি হানিট্র্যাপ

একসময় ছিলেন জনৈকা অভিনেত্রী। কিন্তু বর্তমানে এসএসসি স্ক্যামের দৌলতে যথেষ্ট বিখ্যাত হয়ে উঠেছেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)-র ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ও প্রযোজক রাণা সরকার (Rana Sarkar-এর প্রিয় অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। কিন্তু তাঁর খ্যাতির জেরে সমস্যায় পড়েছেন মুম্বইয়ের বিখ্যাত গায়িকা অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। একসময় রিয়েলিটি শো ‘ফেম গুরুকুল’-এর মাধ্যমে পরিচিত অর্পিতা প্রায়ই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের গানের ভিডিও শেয়ার করেন। বর্তমানে তাঁকে পশ্চিমবঙ্গের এসএসসি স্ক্যাম নিয়ে বারবার কটাক্ষের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ফলে অর্পিতা একটি ভিডিও শেয়ার করে বিভ্রান্তি দূর করার চেষ্টা করেছেন। সেই ভিডিওতে নিজের পরিচয় দিয়েছেন অর্পিতা। লড়াই করে মুম্বইয়ের মাটিতে জমি তৈরি করা অর্পিতার সাথে এসএসসি স্ক্যামের অর্পিতার আকাশ-পাতাল তফাৎ।

বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার মির্জা লতিফ স্ট্রিটের বাসিন্দা অর্পিতা শৈশব থেকেই ছিলেন প্রচন্ড উচ্চাকাঙ্খী। তাঁর বাবা ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারি চাকুরে। মাও ছোটখাট চাকরি করতেন। অত্যন্ত দারিদ্র্যের সংসারে বড় হয়েছিলেন অর্পিতা ও তাঁর বোন সঙ্গীতা (Sangeeta Dhar)। অর্পিতার বাবা প্রয়াত হলে তাঁর চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল অর্পিতাকে। অর্পিতা সেই প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। কারণ তিনি অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন। টলিউডে বেশ কয়েকটি ছোটখাট কাজ করা সত্ত্বেও ডানলপ থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত ট‍্যাক্সি চেপে স্টুডিওতে যেতেন অর্পিতা। বিরাট উপার্জন না করলেও শো অফ করতে পছন্দ করতেন তিনি।

টলিউডে তাঁকে প্রথমবার নায়িকার ভূমিকায় ব্রেক দেন গৌতম সাহা (Gautam Saha)। গৌতম নির্মিত ফিল্ম ‘হৃদয়ে লেখো নাম’-এ নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছিলেন অর্পিতা। গৌতম জানিয়েছেন, ফুডিং, লজিং নিয়ে অর্পিতার পারিশ্রমিক ছিল প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। ফিল্মটি গ্রামীন অঞ্চলে ভালো ব্যবসা করলেও শহরাঞ্চলে সেভাবে সফল হয়নি। কিন্তু ক্রমশ বদলে যাচ্ছিলেন অর্পিতা। পার্টি করা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। অর্পিতার বিলাসবহুল জীবনযাত্রা দেখে তাঁর মা তাঁকে সতর্ক করেছিলেন। ‘মামা ভাগ্নে’ ও ‘পার্টনার’ এই দুটি ফিল্মে অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা। এছাড়াও একাধিক ওড়িয়া ফিল্মে অভিনয় করেছিলেন অর্পিতা। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘বন্দে উৎকলা জননী’, ‘মু কেনা এতে খারাপ’, ‘আমার আর্তনাদ’। ফিল্মে অভিনয় করতে করতেই ঝাড়গ্রামের এক জনৈক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেছিলেন অর্পিতা। তবে কোনো এক অজানা কারণে আলাদা থাকতে শুরু করেন তাঁরা।

অর্পিতার সাথে তাঁর স্বামীর আইনত বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি। 2012 সালে পার্থর সাথে আলাপ হয় অর্পিতার। 2019 সাল থেকে তাঁদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। 2019 ও 2020 সালে পার্থর সাথে যোগাযোগের সূত্রে নাকতলা উদয়ন সংঘের দুর্গাপুজোর ফেস মডেল হয়েছিলেন অর্পিতা। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি স্থানীয় বিপণির মডেলিং করেছিলেন তিনি। এমনকি গত বছর পার্থর সাথে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে।

অর্পিতার একটি প্রযোজনা সংস্থা রয়েছে। তবে তা থেকে কি ধরনের প্রজেক্ট তৈরি হত, জানা যায়নি এখনও। অর্পিতার নামে দক্ষিণ কলকাতার ডায়মন্ড সিটির বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ছাড়াও রয়েছে একাধিক সম্পত্তি। নজরে রয়েছে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও। ডায়মন্ড সিটির ফ্ল্যাট থেকে বিপুল পরিমাণ ফরেক্স, সোনা ও উনত্রিশ কোটি টাকা উদ্ধার হওয়ার পাশাপাশি ছত্রিশ বছর বয়সী অর্পিতার ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে দুটি সেক্স টয়। বিবাহ বিচ্ছিন্না অর্পিতাকে নিয়ে পার্থ প্রায়ই যেতেন বারুইপুরের বাগানবাড়িতে। সেখানে উপস্থিত হতেন গ্রাসরুট লেভেলের তৃণমূল নেতারাও। সেক্স টয়, অতজন পুরুষের মাঝে বারুইপুরের বাগানবাড়িতে একা মহিলা অর্পিতার উপস্থিতি ইঙ্গিত করছে ‘হানিট্র্যাপ’-এর দিকেও।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Satyaagrah (@satyaagrahindia)

অর্পিতা সম্ভবতঃ হানিট্র্যাপ হিসাবেও কাজ করতেন। তাঁর সেক্স টয়গুলি ব্যবহার করা হত ‘এক্সট্রা প্লেজার’-এর জন্য। অর্পিতাকে ব্যবহার করে স্ক্যাম চালাচ্ছিলেন পার্থ। তবে শোনা যাচ্ছে, একশো কোটি টাকা ছাড়াতে চলেছে উদ্ধার হওয়া অর্থের পরিমাণ। কখনও পার্থ ও অর্পিতার এত কালো টাকা থাকতে পারে না। এত বিপুল পরিমাণ অর্থের জন্য প্রয়োজন অন্তত তিন-চার জন প্রভাবশালী ব্যক্তির। অর্পিতার দাবি, টাকার ঘরে তাঁর প্রবেশ ছিল না। চাবি থাকত পার্থর কাছে। জিএসটি সার্টিফিকেট অবৈধ ভাবে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে অর্পিতার বিরুদ্ধে। পার্থ বারবার বলছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। কিন্তু তা মানতে রাজি নন তাঁর সতীর্থরা। পার্থর ফোন ধরেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাহলে কি এটা পাওয়ার ব্রোকার ও হানিট্র্যাপের খেলা? যাতে পার্থ ছাড়াও জড়িত রয়েছেন বেশ কিছু রাঘব বোয়াল। 2024 সালের ভোটের জন্য আহুতি দেওয়া তাহলে শুরু হয়ে গেল!

Related Articles