তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের স্বীকৃতির লড়াই বিফলে, কম টিআরপির কারণে বন্ধ হচ্ছে ‘ফিরকি’
বাংলা সিরিয়াল নিয়ে দর্শকদের মধ্যে উৎফুল্লতা বা মাদকতা কম নেই বললেই চলে। বরং বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেই চায়ের কাপ নিয়ে প্রায় সকলেই টিভির পর্দার সামনে হাজির হয়ে যায়, কেউ কেউ তো ডিনার বা লাঞ্চ করতে করতেও অনেক সময় মিসড এপিসোড দেখে নেন। কিছু মানুষ মনে করেন এসব বাংলা সিরিয়াল মানেই কুটকাচালি আর দুটো বা তিনটে বৌ বা পরকীয়া প্রেমের টানটান গল্প। তাই কেউ কেউ যেমন নাক সিটকানো আচরণ করেন আবার কেউ কেউ এসব কুটকাচালি দারুন উপভোগ করেন।
যেই সিনেমা একটু ব্যাতিক্রমী হয়, তার হয় টিআরপি কমে যায় নয়তো চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। সেরকমই একটি বাংলা ধারাবাহিক হল ‘ফিরকি’। এই ধারাবাহিকের গল্প মূলত তৃতীয় লিঙ্গকে ঘিরেই। একটি মা ও মেয়ের জীবনের লড়াইয়ের গল্প। কিন্তু এখানে মা কোন সাধারণ মেয়ে মানুষ নয়, একজন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। তাই কোথাও গিয়ে দর্শকরা মনে হয় এই তৃতীয় লিঙ্গের প্রাধান্যতা মেনে নিতে পারছেন না, এমনকি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তাঁরা নাকি এখনও সমাজের চোখে ব্রাত্য। ঠিক এমনই সময়ে আচমকা শ্যুটিং বন্ধের নির্দেশ আসতেই হতাশ হয়ে পড়েছেন ‘লক্ষ্মী’ ওরফে আর্যা বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘রানি’ ওরফে সুজি ভৌমিক।
২০২০ র ১৮ ই ডিসেম্বর চ্যানেল কর্তৃপক্ষ কলাকুশলীদের জানিয়ে দিয়েছে যে ধারাবাহিকের শেষ শ্যুটিং ২৪ ডিসেম্বর। এই খবর সামনে আসতেই যেমন ভেঙে যায় ‘ফিরকি’র দর্শকরা, তেমনই ফিরকির মা ‘লক্ষ্মী’ ওরফে আর্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই ধারাবাহিকের কলাকুশলীদের কথা অনুযায়ী এই সিরিয়ালের টিআরপি খুব ভালো না থাকলেও যথেষ্ট ভালো ছিল।
সূত্রের খবর অনুযায়ী ‘রানি’ সুজি ভৌমিকের কথায় ও ‘লক্ষ্মী’ ওরফে আর্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় “সবার আগে ধন্যবাদ দেব প্রযোজক সংস্থা অ্যাক্রোপলিস এবং প্রযোজক স্নিগ্ধা বসুকে। উনি আমাদের নিয়ে ধারাবাহিক বানানোর সাহস দেখিয়েছিলেন। কপাল আমাদেরই খারাপ। সমাজ এখনও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের স্বীকৃতি দিতে রাজি নয়। ফলে, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ‘ফিরকি’। সমাজে জায়গা করে নেওয়ার জন্য আমাদের আরও লড়াই করতে হবে।”
View this post on Instagram