আজকের তারিখেই প্রয়াত হয়েছিলেন স্বর্ণযুগের গায়িকা বনশ্রী সেনগুপ্ত। তার সেই বিখ্যাত গান ” আজ বিকেলের ডাকে তোমার চিঠি পেলাম ” আজও যখন রেডিও কিংবা টেলিভিশনে ভেসে ওঠে মনটাও গুনগুনিয়ে ওঠে। কি অপূর্ব সেই গানের কলি।
জীবনে পেয়েছিলেন অসংখ্য পুরস্কার। তার সঙ্গীতকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি অর্জন করেছেন উত্তম কুমার পুরস্কার, মাদার তেরেসা পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন দত্ত পুরস্কার, বিএফজেএ পুরস্কার, প্রমথেশ বড়ুয়া পুরস্কার ইত্যাদি অর্জন করেন।
বনশ্রী দেবী বাংলা ভাষা ছাড়াও হিন্দি, ভোজপুরি, উড়িয়া ও অহমিয়া চলচ্চিত্রশিল্পে কন্ঠশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। তার কিছু উল্লেখযোগ্য ছবির নাম হলো: ছুুুটি (১৯৬৭), নিমন্ত্রণ (১৯৭১), বিন্দুর ছেলে (১৯৭৩), প্রান্তরেখা (১৯৭৪), রোঁ ভরা বসন্ত (১৯৭৪), দুুুুলহন বোহি জো পিয়া মন ভায়ে (১৯৭৭), সানাই (১৯৭৭), এক যে ছিল দেশ (১৯৭৭), ন্যায় অন্যায় (১৯৮১), আলোয় ফেরা (১৯৮৫), বিদ্রোহী (১৯৮৭), অঞ্জলি (১৯৮৮), ছন্দনীড় (১৯৮৯), পথ ও প্রাসাদ (১৯৯১), নটী বিনোদিনী (১৯৯৪), বড় বউ (১৯৯৭) ইত্যাদি।
২০১৭ র ১৯ ফেব্রুয়ারি, রবিবার সকাল ১১টা নাগাদ জীবনবসান হয় এই শিল্পীর। তখন তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তার এসএসকেএমের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার সেমন্তি মুখোপাধ্যায় বলেছিলেন যে দীর্ঘদিন ধরেই লিভার, কিডনি, ফুসফুস ও হার্টের অসুখে ভুগছিলেন বনশ্রীদেবী। কিন্তু যখন জানতে চাইতেন যে আপনার কোথায় এত ব্যথা? শরীর একটু ভাল থাকলেই সুর করে গেয়ে উঠতেন, “এ ব্যথা কী যে ব্যথা।”
হুগলির চুঁচুড়ার মেনে বনশ্রী, তার বাবা প্রয়াত শৈলেন্দ্রনাথ রায় নিজেও ছিলেন একজন উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের শিল্পী। ছোটবেলা থেকে পারিবারিক সাঙ্গীতিক পরিবেশেই বড় হয়ে উঠেছেন। বাবার থেকে প্রথম শিক্ষা নেন তিনি। বিয়ের পর কলকাতায় এসে সুধীন সেনগুপ্তর কাছে সঙ্গীত শিক্ষা নেন। টানা ২০ বছর ধরে সুধীনবাবুর কাছে তালিম নেওয়ার পরেও বহু বাংলা ছবিতে গান গেয়েছেন। কয়েকশো গান রেকর্ড করেছেন তিনি।