Amrita Debnath: একেই বলে সাহসের সঙ্গে বাঁচা, চরম দারিদ্রতা থেকে আজ প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী অমৃতা
বাড়িতে দই মুড়ি খেয়ে বসে থাকবো কিন্তু কোনো প্রলোভনে পা নয়, ভালো কাজ পেলে তবেই করবো, নয়তো না। জীবনে অনেক উপর নীচ হয়। প্রতি নিয়ত হোঁচট খাবে, পড়বে কিন্তু কোনো কিছুর সঙ্গে আপোষ নয়। নিজের কাজ দেখিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে..এরকম নানান পজিটিভ কথার মধ্যে দিয়ে রচনা বুঝিয়ে দিয়েছেন যে তিনি সত্যিই অনেক দিদির প্রেরণা। তার শো ‘দিদি নং ওয়ান’ (Didi No 1) দিদিদের জন্য আইডল হতে পারে। ভাবছেন, রচনা কথাগুলো কাকে বলেছেন এবং কোথায়? বাংলা ধারাবাহিকের এক জনপ্রিয় মুখ অমৃতা দেবনাথকে (Amrita Debnath),নিজের ‘দিদি নং ওয়ান’ শোতে দাড়িয়ে এই কথাগুলো বলেন রচনা বন্দোপাধ্যায় (Rachna Banerjee)।
‘দিদি নং ওয়ান’ শো এমনই একটি মঞ্চ যেখানে বিভিন্ন প্রান্তের মহিলারা আসেন, নিজেদের জীবনের কথা বলেন, আবার খেলেন, পুরস্কার জেতেনও। মাঝে মধ্যে টলি পাড়ার সেলিব্রিটিরা আসেন, কেউ আসেন ছবি প্রমোশন করতে, কেউ আসেন ধারাবাহিক প্রমোট করতে তো কেউ কাম ব্যাক করলে বহুদিন পর বা চর্চায় আছেন তারাও আসেন।সেরকমই, বকুল কথা করে জনপ্রিয়তা পাওয়া অমৃতা দেবনাথ এসেছিলেন দিদি নং ওয়ান মঞ্চে, তখন চলছিল সিজন ৮।
অমৃতা ‘বকুল কথা’ (Bokul Kotha) করেই বেশি জনপ্রিয়তা পান। তবে, এই ধারাবাহিক ছাড়াও স্টার জলসার ‘মন ফাগুন’ (Mon Phagun) সিরিয়ালের নায়িকা পিহুর বোন অনুষ্কার চরিত্রে অভিনয় করেন। অবশ্য, অমৃতা ২০১৭ সালে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান স্টার জলসার ‘দেবিপক্ষ’ সিরিয়ালে। এভাবে তার একের পর এক ধারাবাহিক চলতে থাকে। ঠিক এই অভিনেত্রীর সঙ্গে মঞ্চে আড্ডা দিতে গিয়েই রচনা নিজের জীবনের স্টাগলের খুচরো অংশ তুলে ধরেন অন ক্যামেরা। এককথায়, সেদিনের মঞ্চে অমৃতার চোখে জল দেখে রচনা তার কাঁধে হাত রেখে সাহস জুগিয়েছিলেন।
জানতে ইচ্ছা করছে নিশ্চয় যে অমৃতা সেদিন কি বলেছিলেন? তখন চলছিল সিজন ৮. ঐদিনের মঞ্চে অমৃতার পাশাপাশি দেখা গিয়েছিল মধুমিতা সরকার ও দেবলীনা কুমারকে। অমৃতার বলা কথা শুনে চোখে জল এসেছিল মধুমিতা সরকারেরও। একটা সময় এতটাই দৈন্য দশা চলছিল অমৃতার জীবনে যে একদিন খেলে পরের দিন ভাবা হত যে কাল কি খাওয়া হবে। বাবার সামান্য চাকরিতে শুধুই সংসারে খাওয়া খরচ চলতো, বাকি কিছু করতে গেলেই লোন আর লোন। পড়াশুনোর যাবতীয় খরচ টেনেছেন জ্যেঠু। এমনকি, কলেজে পড়াকালীন হঠাৎ করেই তার বাবার চাকরি চলে যায় ( সালটা ২০১৬)। সেই সময় খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন অমৃতা। রাতের অন্ধকারে একাই কাঁদতেন। সেই সময় টেলিভিশনের পর্দায় এক বিজ্ঞাপন দেখে নিজের ছবি পাঠান। তার কিছুদিন পর তার কাছে ডাক আসে। তারপর শুরু অন্য লড়াই। সেই কোন্নগর থেকে শ্যুটিং স্পটে আসতেন। সকাল ৭ টায় বেরোতেন বাড়ি থেকে ফিরতেন রাত ১২ টায়। এভাবে চলে দিনের পর দিন স্ট্রাগল। এখন অবশ্য সেই আর্থিক সমস্যা তার আর নেই। কিন্তু, সেদিন রচনা আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, “কখনো কোনো কিছুর সাহায্যের প্রয়োজন আমার কাছে আসবে”।