যত দোষ একটি মাত্র সাদা টুপি ঘিরে। এই টুপি হাড় মাংস জ্বালিয়ে দিল পরিচালক তথা ব্যারাকপুরের (Barrackpore) বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর (Raj Chakraborty) গোটা একটা দিন। গতকাল ছিল, ইসলামদের পবিত্র ঈদ। এই উৎসব ছিল ত্যাগের। রমজান মাস শেষে রোজা পালন করে উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠে এই সম্প্রদায়ের মানুষ। চাঁদ দেখে তবেই খাবার খান, আলিঙ্গন করেন, উপহার বিনিময় করেন। সেরকমই, ঈদের দিন মসজিদ যান রাজ চক্রবর্তী।
ধর্ম নিরপেক্ষ দেশে যেখানে যে কেউ যেতে পারে। যেকোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারে। তাই সাত পাঁচ না ভেবে পরিচালক টিটাগড়ে একটি মসজিদে যান, এবং, সেখানে সকলের সঙ্গে ইদের শুভেচ্ছা আদান প্রদান করেন। দোয়া করেন মাজারে মাথা ঠেকিয়ে। কিন্তু, সমস্যা তৈরি হয় অন্য জায়গায়। রাজের পোশাক নিয়েই তৈরি হয় বিতর্ক। পাক্কা মুসলিম সাজে সেজে ওঠেন তিনি। পরনে সাদা পোশাক, মাথায় সাদা টুপি, শুধু লম্বা দাড়ির অভাব। রাজকে দেখে সেদিন বোঝার উপায় ছিল না যে তিনি সাচ্চা মুসলমান নাকি খাঁটি ব্রাহ্মণ। একের পর এক তির্যক মন্তব্য বাণ উঠে আসে। সকলেই রাজের পোশাক পরিচ্ছদের তীব্র নিন্দা করেন। সবটাই রাজনীতির খেল বলে মন্তব্য করেছেন।
উল্লেখ্য, যেদিন ঈদের সন্ধ্যা ছিল সেদিন ছিল শুভ অক্ষয় তৃতীয়া। রাজ চক্রবর্তী বেমালুম ভুলে যান অক্ষয় তৃতীয়া, অথচ মেতে ওঠেন ঈদের উৎসবে। ফলে, রাজের অনুরাগীরা এবং অন্যান্য নেট জনতা ফুঁসে ওঠে রাজের উপর। কিন্তু, মাঠে নেমে গিয়েছেন খোদ রাজ। এক সংবাদমাধ্যমে রাজ বলেন, “আমি কখনই কমেন্ট বক্স দেখিনা। আমাকে একজন গতকাল এই বিতর্কের কথা জানান, আমি এগুলো নিয়ে বিশেষ ভাবি না। আমি কি করব, কি পরব, তা নিয়ে কাউকে কৈফিয়ত দেব না। ট্রোলারদের কথার উত্তর দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করিনা। আমি গুরুদ্বারে গেলে মাথায় রুমাল বাঁধি, মাজারে গেলে টুপি পরি। গনতান্ত্রিক দেশে আমার পূর্ণ অধিকার আছে, আমি আমার যা মনে হবে তাই করব।”
এর সঙ্গে যোগ করে তিনি এও বলেন, “আগামিদিনেও টুপি পরে মসজিদে যাব। আমার কাছে মনুষ্যত্বই ধর্ম। কার কি ধর্ম হবে সেটা তো তাঁর হাতে থাকে না, তাহলে জন্মের আগেই জানিয়ে দাওয়ার চেষ্টা কর, তুমি জন্মের পর এই ধর্ম পাবে। সে রাজি হলে তবেই জন্মাক। সেটা যখন সম্ভব নয়, তখন কারোর জ্ঞান শুনব না। যাঁরা কটুকথা বলছেন সেটা তাঁদের রুচিবোধের ব্যাপার, আমি কাউকে উত্তর দিতে চাই না। কোনও কৈফিয়ত দেব না।”