BollywoodHoop Plus

Kareena Kapoor: পঁচাত্তর বছর বয়সে নতুন করে সংসার পাতলেন করিনা কাপুরের বাবা

কাপুর পরিবারের নীতির মধ্যেই রয়েছে অবাধ খানা-পিনা। সূত্রপাত অবশ্য হয়েছিল পেশোয়ারের কাপুর হাভেলির দস্তরখান থেকে। প্রতিদিন সেখানে কমপক্ষে আড়াইশো মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থা হত। হাভেলির জমানা থেকেই কাপুররা খাবারের সাথে মদ্যপান পছন্দ করতেন। এখনও অবধি কাপুর পরিবারের ইতিহাসে শশী কাপুর (Shashi Kapoor) ও বর্তমান প্রজন্মের কাপুররা ছাড়া প্রায় সকলেই দামি ব্র্যান্ডের অ্যালকোহল পছন্দ না করে থাকতে পারেননি। ঋষি কাপুর (Rishi Kapoor)-এর অতিরিক্ত মদ্যপানের জন্য তাঁর ঘর ভাঙতে বসেছিল। শেষ অবধি পরিবারের সদস্যদের মধ্যস্থতায় ঋষি ও নীতুর বিয়ে বেঁচে গিয়েছিল। তবে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পরেও ঋষিকে খাবারের সাথে সামান্য অ্যালকোহল পান করতে দিতে হত। একই কারণে ঋষির দাদা রণধীর কাপুর (Randhir Kapoor)-কে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন ববিতা (Babita)।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Priya (@bollywoodtriviapc)

সত্তরের দশকে রণধীরের সাথে যখন ববিতার বিয়ে হয়, সেই সময় দুজনেই কেরিয়ারের সফলতার চূড়ার দিকে এগোচ্ছেন। গড়পড়তা বলিউড নায়িকাদের তুলনায় অনেকটাই আলাদা ববিতার হাতে সেই সময় অনেকগুলি ফিল্ম ছিল। রণধীরও রীতিমত রোম‍্যান্টিক নায়ক। ববিতার সাথে সম্পর্ক থাকলেও বিয়ের ইচ্ছা ছিল না রণধীরের। কিন্তু কাপুর পরিবারের তরফে শর্ত ছিল এই সম্পর্ক বজায় রাখতে হলে রণধীর ও ববিতাকে বিয়ে করতে হবে। অবশেষে কাপুর পরিবারের রীতি অনুযায়ী অভিনয় ছেড়ে দিয়ে রণধীরকে বিয়ে করেছিলেন ববিতা। কিন্তু রণধীর ছাড়তে পারেননি মদ্যপান। পরবর্তীকালে তিনি নিজেই স্বীকার করেছিলেন, ববিতার সাথে তাঁর বিয়ে ভাঙার মূলে ছিল তাঁর মদ্যপানের স্বভাব।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Priya (@bollywoodtriviapc)

একসময় জন্ম হয় করিশ্মা কাপুর (Karishma Kapoor) ও করিনা কাপুর (Kareena Kapoor)-এর। ববিতা আশা করেছিলেন হয়তো মেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে রণধীর মদ্যপানের মাত্রা কমাবেন। কিন্তু তা হল না। বিবাদ পৌঁছালো চরম পর্যায়ে। দুই মেয়েকে নিয়ে আলাদা থাকতে শুরু করলেন ববিতা। সময়টা ছিল আশির দশক। অভিনয় আগেই ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু মেয়েদের একা বড় করতে অর্থের প্রয়োজন ছিল। ববিতা কারও কাছে হাত পাতেননি। নেননি স্বামীর দেওয়া একটি পয়সাও। বিভিন্ন সময়ে প্রচুর ছোটখাটো কাজ করে একাই করিশ্মা ও করিনাকে বড় করে তোলেন ববিতা। মূলতঃ মাকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করতেই করিশ্মা কাপুর পরিবারের নিয়ম ভেঙে অভিনয় জগতে আসেন।

অপরদিকে আশির দশক থেকেই রণধীরের কেরিয়ারের নৌকা ডুবতে শুরু করেছিল। ইন্ডাস্ট্রিতে কোনোমতে টিকেছিলেন তিনি। তবে করিশ্মার পিতা হিসাবে আরও একবার লাইমলাইটে এসেছিলেন রণধীর। অবশ্য এরপর কেটে গিয়েছে অনেকগুলি বছর। আরব সাগর দিয়ে বয়ে গিয়েছে প্রচুর ঢেউ। উথাল-পাথাল হয়েছে করিশ্মার জীবন। করিনার সাথে বিয়ে হয়েছে সইফ আলি খান (Saif Ali Khan)-এর। জীবনের ছোটখাট মুহূর্ত ও পারিবারিক উৎসব ধীরে ধীরে রণধীর ও ববিতার মাঝের ফাটলকে মেরামত করেছে।

দুজনেই পৌঁছে গিয়েছেন পঁচাত্তরের কোঠায়। আইনত তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়নি। এতদিন চেম্বুরের পৈতৃক ভিটেতে থাকতেন রণধীর। কিন্তু একে একে চলে যাচ্ছেন তাঁর সতীর্থরা। না ফেরার দেশে চলে গিয়েছেন শশী, ঋষি, শাম্মি (Shammi Kapoor), রাজীব (Rajiv Kapoor)। রণধীরকেও ধীরে ধীরে ঘিরে ধরেছে বিষাদের ছায়া। তিনি বুঝতে পেরেছেন, সোনালি দিনগুলি শুধুমাত্র মদ্যপানের নেশায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তাঁর কনিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও ঋষির মৃত্যু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, জীবন অনিশ্চিত। ফলে প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করা উচিত। গত সাত মাস ধরে বান্দ্রার নতুন ফ্ল্যাটে আবারও একসাথে থাকতে শুরু করেছেন রণধীর ও ববিতা। সূর্যাস্তের দিনগুলি একসাথেই কাটছে তাঁদের। প্রকৃতপক্ষে, এটাই জীবনের বাস্তব সত্য। পঁচাত্তর বছর বয়স, এমন একটি সময় যাতে শুধুমাত্র একজন ভালো বন্ধুর প্রয়োজন। বিচ্ছেদের পর সেই বন্ধুত্বকে অনুভব করে আবারও একসাথে থাকতে শুরু করেছেন রণধীর ও ববিতা।

 

View this post on Instagram

 

A post shared by Randhir Kapoor (@dabookapoor)

whatsapp logo