Ranu Mondal: সবাই উত্যক্ত করলে নিজেকে সামলাতে পারিনা, বেফাঁস মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন রাণু
বহুদিন পর তাঁকে আবার দেখা গেলো তার চেনা ছন্দে। দক্ষিণ কলকাতার এক স্টুডিওতে গান রেকর্ডিং এর জন্য গতকাল বিকেলে উপস্থিত হলেন রাণু মন্ডল। নিপাট সাদামাটা বেশে ধরা দিলেন তিনি। পরনে তাঁর সবুজ রঙের একটি ছাপা শাড়ি। এই স্টুডিও আর কোথাও নয় ক্যাকটাস ব্যান্ডের প্রধান পুরুষ জনপ্রিয় গায়ক সিধু ওরফে সিদ্ধার্থের বাড়ি।
জোর কদমে চলছে রাণু মন্ডলের জীবনী ‘রাণু মারিয়া’-র শুটিং। এই ছবির সঙ্গীত বিভাগের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন সিধু। রেকর্ডিং স্টুডিওতে অসংখ্য সাংবাদিকদের ভিড়ে বেশ অস্বস্তিতে পড়ে ছিলেন রাণু মন্ডল। কিন্তু সাহসী ভাবেই তিনি বক্তব্য রাখেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। বাদাম কাকুর মত একটা সময় তিনিও ইন্টারনেট দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। গান গাওয়ার জন্য পাড়ি দিয়েছিলেন সুদূর আরব সাগরের তীরে মুম্বাইতে। হিমেশের পরিচালনায় গাওয়া ‘তেরি মেরি কাহিনি’ গানের জনপ্রিয়তা আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন রাখে না।
এই ছবিতে রাণু মন্ডলের চরিত্রে অভিনয় করবেন ঈশিকা দে। এই ছবির পরিচালনার দায়িত্ব সযত্নে সামলাচ্ছেন হৃষিকেশ মন্ডল। রাণু মন্ডল নিজেও কখনো ভাবতে পারেননি রানাঘাট স্টেশনে বসে গান গাওয়া মহিলাটির জীবন এত দূর পর্যন্ত পৌছাবে। তাঁর বায়োপিক নিয়ে তিনি খুবই উচ্ছ্বসিত। অদ্ভুত এক নির্লিপ্ততার সঙ্গে তিনি জানান “ঈশ্বরের ইচ্ছায় এসব হচ্ছে। তাঁর ইচ্ছাতেই আমার জীবন নিয়ে ছবি আসতে চলেছে।” এই ছবির গল্প খুবই ভালো লেগেছে তাঁর। অসংখ্য মানুষের মতো তিনিও তাঁর জীবনকে বড় পর্দায় দেখার জন্য অপেক্ষারত।
রাণু মন্ডল এর চরিত্রে যিনি অভিনয় করবেন তাঁর সঙ্গে রাণুর বিস্তর ফারাক। রাণু থাকেন রানাঘাটের এক ঘুপচি ঘরে এবং ঈশিকা থাকেন মুম্বাই নগরীর বিলাসবহুল আবাসনে। রাণুর আচার-আচরণ আদব কায়দা রপ্ত করার জন্য ঈশিকা রাণু মন্ডলের সঙ্গে থেকেছেনও বটে। ঈশিকা রাণুকে ‘রাণু মা’ বলে ডাকে। রাণুও তাঁকে মেয়ের মত বলে মনে করেন। বড় পর্দায় মাকে ছাপিয়ে মেয়ে নাকি মেয়ে কে ছাপিয়ে মা কে বেশি দূর এগিয়ে যায় এর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন রাণু মন্ডল।
বহুদিন পর রেকর্ডিংয়ে এসে খানিকটা ঘাবড়ে যান তিনি। তাঁকে সামলে নেন সিধু। সংগীত পরিচালক হিসেবে তাঁর কাছে হিমেশ নাকি সিধু কে লেটার মার্কস পেয়েছে এ প্রশ্ন করতেই তিনি রীতিমতো বলে ওঠেন, “কোন প্রশ্নই না এটা। যে যার মতো করে ভালো।”
এখন নাকি তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে গিয়েছে। কয়েকজন ইউটিউবারদের ছাড়া রাণু মন্ডলের খোঁজ নাকি বিশেষ কেউ আর করে না। যদিও যারা খোঁজ করে তাদের মধ্যে অধিকাংশই রাণু মন্ডল কে বিরক্ত করতে আসে। এমনটাই দাবি তাঁর। তিনি তার সর্বস্ব ঈশ্বরের হাতে সঁপে দিয়েছেন। তার দাবি, “আমি কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করিনা, কাউকে কটূক্তিও করতে চাইনা কিন্তু একদল লোক যখন ক্যামেরা বুম এইসব নিয়ে আমার ঘরে হামলা করে একনাগাড়ে তাদের প্রশ্ন দিয়ে আমাকে উত্যক্ত করতে থাকে আমি নিজেকে সামলে রাখতে পারিনা। যদিও আমি জানি যারা আমাকে উত্যক্ত করতে আসে তারা এটাই তাই চাই যে আমি ক্যামেরার সামনে কিছু বেফাঁস বলি।”
সম্প্রতি নেট মাধ্যমে বহুল চর্চিত বাদাম কাকুর সঙ্গে জনপ্রিয়তার নিরিখে তাঁর তুলনা বারবার আসছে। যদিও জনপ্রিয়তার সমুদ্রে অনেকখানি পথ হেঁটেছেন রাণু মন্ডল। আজ তাই নিজেই বেছে নিয়েছেন এই অবসর।