‘আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে/তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে’- রবীন্দ্রনাথের এমন মৃত্যুচিন্তায় নান্দনিকতার সফল উপস্থিতি বিদ্যমান, কিন্তু এমনও কিছু মৃত্যু আছে যেখানে নান্দনিকতার কোন চিহ্নই নেই। আছে শুধুই বিরহ, কৌতূহল আর জঘন্য ক্রাইমের গন্ধ। কথা হচ্ছে বি টাউনের সেরা সুন্দরী অভিনেত্রী শ্রীদেবী (Sridevi) প্রসঙ্গে। মাত্র ৫৪ বছর বয়সে সামান্য জলের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর কারণ ছিল শুধু একটা বাথ টব। জলে ডুবে নাকি তাঁর মৃত্যু হয়, অন্তত দুবাই পুলিশ এমনটাই জানিয়েছে।
এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যান কাপুর পরিবারের প্রত্যেকে। সেই অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর কাপুর পরিবারের সকলই ফিরে যান মুম্বইতে। কিন্তু তারপর ৩ দিনের জন্য দুবাইতে একা থেকে গিয়েছিলেন শ্রীদেবী। এবং ওই তিন দিন তিনি হোটেল থেকে একবারের জন্যেও বের হননি। তিন দিন পর বনি কাপুর ফিরে আসেন দুবাইতে শ্রীদেবীকে সারপ্রাইজ দেবেন বলে। এরপরেই হয় নিজেই সারপ্রাইজড হয়ে যান অথবা শ্রীদেবীকে সারপ্রাইজ লাইফ উপহার দেন। নাহ, শ্রীদেবীর মৃত্যুর তেমন তদন্ত হয়নি। ভারতীয় সময় সোমবার দুপুর দেড়টা নাগাদ প্রথম তাঁর শরীরের ময়নাতদন্ত হয়, তাতে মৃত্যুর কারণ হার্ট অ্যাটাক বলেই জানানো হয়। এরপর ফরেন্সিক বিভাগ অভিনেত্রীর রক্ত ও বিভিন্ন অঙ্গের টক্সিকোলজি টেস্ট শুরু করে এবং বিষক্রিয়ার কারণে মৃত্যু হয়েছে কিনা তা জানতেই এই টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নেয় দুবাই পুলিশ ও গোয়েন্দারা। টক্সিক রিপোর্টেই তার রক্তে অ্যালকোহলের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।
শ্রীদেবী মৃত্যুতে রহস্য প্রথম থেকেই দানা বাঁধে। একজন পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চির মানুষ মাত্র চার ফুটের বাথ টবে কীভাবে ডুবে মারা যেতে পারেন! যদি জলে ডুবেই তিনি মারা গিয়ে থাকেন তবে বাথটাবের বাইরে একফোঁটাও জল কেন থাকবেনা!
পরিচালক সুনীল সিং ও এসিপি বেদ ভূষনের দাবী অনুযায়ী, বনি কাপুর ওমানে শ্রীদেবীর নামে ২৪০ কোটি টাকার একটি বীমা করিয়েছিলেন। সেই বীমার একটি ক্লজে উল্লেখ ছিল বীমার টাকা তখনই বনি পাবেন যদি কোনও ভাবে শ্রীদেবীর মৃত্যু দুবাইতে হয়। ভারতীয় চলচ্চিত্রের ‘চাঁদনী’কে হারিয়ে ফেলে তাঁর অনুরাগীরা। এমন আচমকা মৃত্যু বি টাউনে শোকের ছায়া ঢেলে দিলেও মৃত্যুর আসল কারণ আজও দেশবাসীর কাছে আসেনি। ঠিক যেমনটা সুশান্ত সিং রাজপুতের সঙ্গেও হয়। অনেকের ধারণা, শ্রীদেবীকে তাঁর স্বামীই খুন করেছেন আগে, তারপর বাথ টবে জল ঢেলে দিয়েছেন, আবার কেউ ভেবেছেন শ্রীদেবী যেভাবে কসমেটিক্স সার্জারি করে চলেছেন সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য, সেই ওষুধের প্রয়োগ তাঁকে হয়তো আচমকা মৃত্যুর পথে ঠেলে দিয়েছে। ২৪ ফেব্রুয়ারির রাতের কথা আজও ভুলতে পারেনি শ্রীর অনুরাগীরা। আজও তাঁর মৃত্যুর কারণ অধরা, আজও দেশবাসী জানতে চায় ভারতীয় চলচ্চিত্রের চাঁদনীর মৃত্যুর কারণ।