সারেগামাপা নিয়ে বিতর্ক থামবার নয়। ২০১৯ এও বিতর্ক তৈরি হয় নোবেলকে নিয়ে। সেই বছর সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছেন অঙ্কিতা ভট্টাচার্য। বাংলাদেশের একাংশ ধরেই নিয়েছিলেন যে ফাইনালে বিজয়ীর মুকুট উঠবে নোবেলের মাথায়। কিন্তু হয় উল্টো। এবারেও উল্টো হল বলে ধারণা বেশিরভাগ দর্শক ও শ্রোতাদের। যারা নিয়মিত সা রে গা মা পা অনুষ্ঠান দেখতেন জি বাংলাতে তাদের বিচারে প্রথম স্থানের দাবিদার ছিলেন নীহারিকা বা অনুষ্কা। কিন্তু অর্কদীপের জয় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে আকৃতি ও মিকার জাজমেন্টকেও। অপরদিকে ইমন লাইভে এসে বলেছেন, ‘সারেগামাপা’ স্ক্রিপ্টেড নয়। এখানে টাকা দিয়ে উইনিং ট্রফি কেনা যায় না। ইমন জানিয়েছেন, অর্কদীপ তাঁর পূর্বপরিচিত। তাঁরা একই জায়গায় সঙ্গীত চর্চা করেছেন। এমনকি টাকা খাওয়ার প্রসঙ্গে ইমন শিক্ষাব্যবস্থাকেও টেনে আনেন।
জয় সকারকে চোর তকমা দেওয়া হয়, এবং শ্রীকান্ত আচার্য ও জয় শিকারকে একসঙ্গে অস্বচ্ছ ও অযোগ্য বিচারক বলতেও দ্বিধাবোধ করেনি আমজনতা। এখনও পর্যন্ত, একে একে ইমন, অর্কদীপ, জয় সরকার, লোপামুদ্রা, রাঘব, মনোময় মুখ খুলেছেন। এবারে ফেসবুক লাইভে এসে রূপঙ্কর বাগচী মুখ খুললেন।
রূপঙ্কর বেশ ডিপ্লোম্যাটিক ভাবেই এই লাইভ করেন। অনেকটা ধরি মাছ না ছুঁই পানীর মতন। সারেগামাপা অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্ক তার এক দিক দিয়ে ভালো লেগেছে আবার খারাপও লেগেছে। তার মতে, লোকজন তবে বাংলা গান শুনছেন, এমনকি সারেগামাপা-র জনপ্রিয়তাও আছে মার্কেটে। বিজেতা অর্কদীপকে নাকি বহু বছর আগে থেকেই তিনি চিনতেন। তার স্ত্রীকেও লোকসঙ্গীত শিখিয়েছেন এই অর্ক। এছাড়াও রূপঙ্করের ‘কৃষ্টি পটুয়া’ নাট্য দলে অর্কদীপ ‘জেহাদ’ নাটকে গান এবং অভিনয় করেছেন। তার দাবি, ‘অর্কদীপ গানপাগল। গানের বাইরে অন্য কোনও কথা বলতেই পারে না। শুধুই লোকগান নয়, অন্য ধারা, অন্য ভাষার গান নিয়েও সমান জ্ঞানী অর্কদীপ। ‘
এছাড়াও রূপঙ্কর বলেন, ‘আপনারা সমালোচনা করতেই পারেন। তা বলে অর্কদীপের মা-বাবা তুলে কটু কথা বলবেন! এত বিকৃত মানসিকতা?’ ঘুষ নেওয়া প্রসঙ্গে রূপঙ্কর পরিষ্কার জানান এই বিচারক পদে আসর জন্য তারা পারিশ্রমিক প্রযোজনা সংস্থা থেকে পেয়েছেন, এরপরেও ঘুষ নেওয়াকে বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে বলে মিষ্টি মুখে জানান। দর্শকদের রাগ তিনি বুঝেই বলেছেন যে, আপনাদের ভিন্ন মতামত থাকতেই পারে কিন্তু তার জন্য কারোর বাবা মা তুলে কথা বলতে হবে! অর্কদীপের জয় প্রসঙ্গে তিনি এও বলেন যে নীহারিকাকেও তিনি চিনতেন আগে থেকে, এছাড়াও অন্যান্য প্রতিযোগীদের তিনি অল্পবিস্তর জানেন, যদিও স্বীকার করেছেন যে কাজের চাপে নিয়মিত সারেগামাপা দেখা হয় না, তবে শ্রীকান্ত আচার্য, জয় সরকার ও মিকা পাজীকে তিনি ভালো মতন জানেন। তারা গান পাগল মানুষ এবং ঘুষ নিতেই পারেন না। যদিও আকৃতিকে তিনি কম চেনেন জানেন বলে মন্তব্য করেছেন। এমনিতেই আকৃতির বিচার নিয়ে প্রথম থেকেই দর্শকদের মধ্যে নেগেটিভ চিন্তা ছিল। দর্শকরা প্রথম থেকে এবং শো চলাকালীন বলতেন আকৃতি বিচার করতে পারেন না, শুধু মাত্র সুন্দর মুখের জন্য জি বাংলা এই আসনে তাকে বসিয়েছে। উল্লেখ্য, মনোময় ছিলেন গুরু। তিনি এই প্রসঙ্গে সংক্ষেপে শুধু বলেন এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে, “দ্বিমত তৈরি হতেই পারে। আমি যেমন মনে করি, ‘যুগ্ম সেরা’ বাছা যেতেই পারত। সেই অনুযায়ী অর্কদীপের সঙ্গে নীহারিকা বা অনুষ্কাও প্রথম হতে পারত।” এবং রাঘব বলেন, ” সেরা নির্বাচন মুম্বইয়ের বিচারকদের হাতে ছিল। আমাদের কিছু করার ছিল না।” এই প্রসঙ্গে অনেকেই মন্তব্য করেন, “সাধারণ মানুষ এও জানেন টাকা খাওয়া ছাড়াও ইন্ডাস্ট্রিতে আরো অনেক কেচ্ছা কেলেঙ্কারি আনাচে কানাচে ঘোরে। সুতরাং দর্শকরাও বোঝেন কোনটা রিয়েল জাজমেন্ট ও কোনটা নেপোটিজম। হয়তো এই জন্যেই সকলকে এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় এসে সাফাই দিতে হচ্ছে।”