শর্মিলা ঠাকুর (Sharmila Tagore) যখন প্রথমবার ফিল্মে অভিনয় করতে আসেন, তখন তাঁর বয়স যথেষ্ট অল্প। কিন্তু পাথুরিয়াঘাটা ঠাকুরবাড়ির এই মেয়েটির মধ্যে বিজয়া রায় (Bijaya Ray) খুঁজে পেয়েছিলেন অপর্ণাকে। ঠাকুরবাড়ির মেয়ে ফিল্মে অভিনয় করবে, এই কথা জোড়াসাঁকোর পক্ষে মেনে নেওয়ার সুবিধা থাকলেও পাথুরিয়াঘাটার কাছে তা সহজ ছিল না। এমনকি শর্মিলার বাবাও দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। কিন্তু শর্মিলা ও ঐন্দ্রিলা (Oindrila Thakur) দুই মেয়েই অভিনয়ের মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। ‘কাবুলিওয়ালা’-র মিনির চরিত্রে অভিনয়ের পর ঐন্দ্রিলা আর অভিনয় করেননি। অল্প বয়সেই প্রয়াত হন তিনি। কিন্তু ‘অপুর সংসার’-এর পর শর্মিলা পাড়ি দিয়েছিলেন মুম্বই।
মুম্বই অর্থাৎ তৎকালীন বম্বের বুকে ঠাকুরবাড়ির মেয়ে শর্মিলার অভিনয় যখন ক্রমশ প্রশংসিত হচ্ছে, সেই সময় হঠাৎই তাঁকে ঘিরে শুরু হল বিতর্ক। তৎকালীন সময় নায়িকারা সুইমসুট পরার কথা ভাবতে পারতেন না। সুইমসুট বরাদ্দ ছিল খলনায়িকাদের জন্য। সময়টা 1966 সাল। বিখ্যাত ফিল্ম ম্যাগাজিন ‘ফিল্মফেয়ার’-এর কভার পেজের জন্য বিকিনি পরার প্রস্তাব আসে শর্মিলার কাছে। তাঁর তখন মাত্র বাইশ বছর বয়স। দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন কিনা জানা নেই, তবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শর্মিলা।
View this post on Instagram
শর্মিলাকে সাদা-কালো বিকিনি পরে সামনে আসতে দেখে চমকে গিয়েছিলেন ফটোগ্রাফার। তিনি নিজেও শর্মিলাকে জিজ্ঞাসা করেন, আদৌ এই শুট করতে পারবেন নাকি তিনি! কিন্তু শর্মিলা ছিলেন তাঁর সিদ্ধান্তে অনড়। শুট হল। কভার পেজে বিকিনি পরিহিতা শর্মিলার ছবি জনসমক্ষে আসতেই ঘটল বিস্ফোরণ। তৎকালীন সংবাদপত্রে লেখা হল, শর্মিলা নাকি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে নিজেকে নিচে নামিয়ে ফেলেছেন। ফিল্মি পার্টিতে শর্মিলাকে নিয়ে শুরু হল সমালোচনা। খারাপ লাগলেও হার মানেননি শর্মিলা। আবারও ‘অ্যান ইভনিং ইন প্যারিস’ ফিল্মে আবারও তিনি পরেছিলেন সুইমসুট। সমালোচনা করতে করতে হাঁফিয়ে উঠে সমাজ চুপ করে গিয়েছিল। ঠাকুরবাড়ির মেয়ে শর্মিলা বলিউডে ঘটালেন নবজাগরণ।
View this post on Instagram
সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে করিনা কাপুর খান (Kareena Kapoor khan) জানিয়েছেন, তাঁর শাশুড়ি শর্মিলার সামনেই বিকিনি পরেছেন তিনি। কিন্তু শর্মিলা অসন্তুষ্ট হননি। শর্মিলার ছক ভাঙার পদক্ষেপ শতক পেরিয়ে আজও প্রশংসিত।
View this post on Instagram